শাপলার ডাটা রান্না রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করি সকলেই ভালো আছেন।আজকে আমি নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
বর্ষাকালে খাল, বিল ,পুকুর বিভিন্ন জায়গাতে শাপলা পাওয়া যায়। জলে থাকাকালীন শাপলা দেখতে অসাধারণ লাগে। জল থেকে শাপলা যখন তোলা হয়। তখন শাপলার ডাটাটা আমরা সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি। শাপলা সাধারণত বর্ষাকালে বেশি পাওয়া যায়। আগে গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ পাওয়া যেত। এমনকি গ্রামের মানুষই বেশি খেতো। কিন্তু এখন শহরেও শাপলার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। শহরের মানুষও শাপলা খেতে ভালোবাসে। শাপলা শুধু দেখতেই সুন্দর এমনটা নয় শাপলা খেলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। শাপলা তে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে।
শাপলা খেলে হজম শক্তি অনেকটাই বেড়ে যায় এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এইরকম অনেক উপকার পাওয়া যায়। আমরা সাধারণত বর্ষাকালেই শাপলা খেয়ে থাকি। কিন্তু এখন সারা বছরই শাপলা পাওয়া যায়। আমার বাড়ি যেহেতু গ্রামে তাই আমার মা খুব শাপলা রান্না করে খাওয়াতো ।প্রথম প্রথম আমি একদমই খেতে চাইতাম না। কিন্তু এখন খেতে ভীষণ সুন্দর লাগে। এখন আমাদের বাড়ির প্রত্যেকেই মোটামুটি শাপলা খেতে ভালোবাসে। চলুন তাহলে শুরু করি শাপলা রান্নার রেসিপিটি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | শাপলা | ১ আঁটি |
২ | গোটা জিরে | ১ চামচ |
৩ | রসুন | ১ টা |
৪ | আদা | ২৫ গ্ৰাম |
৫ | কাঁচা লঙ্কা | ১৫ টা |
৬ | হলুদ | ১ চামচ |
৭ | লবণ | ২ চামচ |
৮ | মাছ | পরিমাণ মতো |
৯ | তেল | ৫০ গ্ৰাম |
১০ | পাঁচফোড়ন | ১ চামচ |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই শাপলা ডাটা টাকে ভালো করে ছাড়িয়ে নিতে হবে। ভালো করে খোসা ছাড়ানোর পর টুকরো টুকরো করে কেটে নিতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ
কাটা হয়ে গেলে ভালো করে ধুয়ে একটা পাত্রে রেখে দিতে হবে জল ঝরানোর জন্য। জল ঝরানো হয়ে গেলে পরিমাণমতো লবণ শাপলার ডাটার মধ্যে ছিটিয়ে দিতে হবে। ছিটিয়ে দেওয়ার পর শাপলার ডাটা গুলো হাত দিয়ে চিপে জল বের করে নিতে হবে। আপনারা চাইলে সিদ্ধ করে নিতে পারেন। কিন্তু লবণ দিয়ে মাখিয়ে চিপে নেওয়াটাই সহজ বলে মনে হয়।
তৃতীয় ধাপ
এরপরে প্রথমেই আমি কয়েকটা মাছ ভালো করে ধুয়ে লবণ হলুদ মাখিয়ে রেখে দিয়েছিলাম। এরপর গ্যাস অন করে কড়াই বসিয়ে কড়াই গরম হলে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে দিতে হবে মাছ ভাজার জন্য। আপনারা চাইলে ছোট ছোট চুনো মাছ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও ইলিশ মাছের মাথা দিয়েও রান্না করা যায়। আমি এখানে সবরকম মাছ ব্যবহার করেছি।
চতুর্থ ধাপ
মাছগুলো কড়া করে ভেজে তুলে রাখতে হবে। এরপরে ওই তেলের মধ্যেই আর কিছুটা তেল এড করে দিয়েছি। তেল গরম হলে তেলের মধ্যে সামান্য পরিমাণে পাঁচফোড়ন দিয়ে দিতে হবে। আমি এখানে সাদা তেল ব্যবহার করেছি রান্নার জন্য।
পঞ্চম ধাপ
এবারে কড়াইতে শাপলার ডাটা গুলো দিয়ে দিতে হবে। যেহেতু আমি প্রথমেই শাপলার ডাটা তে লবণ দিয়েছিলাম ।তাই আর রান্না করার সময় লবণ ব্যবহার করিনি। সামান্য পরিমাণে হলুদ দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর বেটে রাখা জিরে, আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা বাটা সমস্ত মসলা দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে।
সপ্তম ধাপ
ভালো করে নাড়াচাড়া করে নেওয়ার পর ভেজে রাখা মাছগুলো শাপলার ডাটার মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে।
অষ্টম ধাপ
ভালোভাবে ঢাকা দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে। আমি এখানে শাপলা রান্না করার জন্য কোন জল ব্যবহার করিনি।
তৈরি
এইভাবেই তৈরি হয়ে যাবে শাপলার ডাটা রেসিপিটি।
এরকম রেসিপি খেতে খুবই ভালো লাগে। শাপলা রান্না করতে তেমন কোন উপাদান ব্যবহার করতে হয় না। আমি এখানে সমস্ত মসলা ছিলে বেটে ছিলাম। শিলে মসলা বাটা সেই রান্নার স্বাদ আরো অন্যরকম হয়ে যায়। তবে যে যতই ভালো রান্না করুক না কেন। আমার মায়ের হাতে শাপলা খেতে আমার অসাধারণ লাগে। মায়ের দেখেই রেসিপিটি আমার শেখা।এই রেসিপিটি কার কার ভালো লাগে আমি হয়তো জানি না ।কিন্তু এই রকম ভাবে শাপলার ডাটা রান্না করলে সত্যিই খুব সুস্বাদু লাগবে। শাপলা সাধারণত আঁটি হিসেবে বিক্রি হয়। শাপলা আমি এক আঁটি রান্না করেছিলাম।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
রান্নাটা খুব সুস্বাদু হবে বলে মনেহচ্ছে
শাপলা ডাটা রান্না করা দেখে মনে হল আপনি খুব যত্নের সহিত এটা রান্না করেছেন। তবে আমাদের এদিকে অহরহ এই সাদা শাপলা পাওয়া যায় যেটা আমরা ইচ্ছে করলেই যে কোনো মুহূর্তে তুলে নিয়ে এসে রান্না করে খেতে পারি, এ কারণেই হয়তোবা আমাদের কাছে শাপলা ডাটার এতটা মূল্যায়ন নেই।
সর্বশেষ কখন এটা খেয়েছিলাম আমার সঠিক মনে নেই। তবে এটা বলতে পারি যে সাদা তরকারির মধ্যে শাপলা ডাটা দিয়ে রান্না করলে খুবই সুস্বাদু হয় তরকারিটা। কারণ আমাদের জলকরের তাজা মাছ দিয়ে ইতিপূর্বে আমি অনেকবার মায়ের হাতে তৈরি করা তরকারি খেয়েছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই অসাধারণ রান্নাটা আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
দারুণ রান্না করেছো। আমাদের বাড়িতেও এই রকম ভাবেই রান্না করা হয়। শাপলা খেতে আমার খুব ভালো লাগে। তবে দাদা একদমই পছন্দ করে না। আর যেহেতু বাড়ির বাজার দাদাই করে তাই শাপলা কিনে আনেই না।
কবে যে শেষ খেয়েছিলাম মনেই পড়ছে না। তোমার পোস্ট দেখে খিদে পেয়ে গেল। মনে হচ্ছে এক্ষুনি খেয়ে নিই। তা তো সম্ভব নয়। এবার দাদা কেই কাকুতি মিনতি করতে হবে শাপলা কিনে আনার জন্য।
তবে এই রেসিপিটা দেখে একটা কথা মনে পড়ে গেল। আমার মামা বাড়ি ও মাসির বাড়ি গ্রামে। আর মাসির বাড়ির কাছেই নদী। ছোটোবেলায় ভাই বোনেরা মিলে কত্ত শাপলা তুলে আনতাম। মাসি খুব সুন্দর করে আমাদের জন্য রান্না করে দিত।
যদিও এখন মাসির বাড়ি গেলে শাপলা আর দেখতে পাই না। থাকলেও হাত আর তোলাও হত না। ছোটোবেলার সেই আনন্দ কি আর ফিরে পাওয়া যায়।
যাইহোক তোমার রেসিপিটা দারুণ লাগলো। আর এত সুন্দর ভাবে ধাপে ধাপে রেসিপিটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আগে কখনো শাপলা রান্না করিনি তবে তোমার স্টেপ গুলো ফলো করে অবশ্যই ট্রাই করবো।
Shapla data khubee tasteful recipe. Amio khubee pochondo kori. Majhe majhe teiri kori. So unique tasteful recipe. Thanks for sharing friend