করিম মিয়ার তিনটা বিয়ের গল্প প্রথম পর্ব।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আমাদের গ্রাম থেকে দুই গ্রাম করে করিম মিয়ার বাড়ি তিনি একজন কৃষক। অল্প শিক্ষিত ব্যক্তি কিন্তু খুবই পরিশ্রম করতে পারে। করিম মিয়ার বয়স যখন ১৭ বছর তখন তিনি বিয়ে করেন। সাংসারিক জীবনে তার কোন কষ্ট ছিল না।
করিমের বিয়ের বয়স যখন দুই বছর হয় ফুটফুটে ছেলে সন্তান এর বাবা হন করিম মিয়া । খুব সুখে শান্তিতে দিন কাটছিল করিম মিয়ার। এভাবে আরো দুই বছর কেটে গেল করিম মিয়ার বিয়ের বয়স। এখন দুই বছর ছেলের বয়স।
একদিন সকালে করিম মিয়া ঘুম থেকে উঠে দেখে তার স্ত্রী অনেক অসুস্থ। রাতে যখন দুইজন ঘুমাতে গিয়েছে তখন কোন কিছুই বুঝতে পারি নাই করিম মিয়ার স্ত্রী। সকালে করিম মিয়ার স্ত্রী বলছে, আমার অনেক পেটে ব্যথা করছে। করিম মিয়া গ্রামের ডাক্তার কে গিয়ে বলল। তার স্ত্রীর পেটে ব্যথা করছে ডাক্তার সাহেব ঔষধ দেন।
তখন ডাক্তার ভাবছে হয়তোবা গ্যাসের ব্যথা তাই ডক্তার কয়েকটি গ্যাসের ঔষধ দিয়ে দিল এবং ডাক্তার বলল যে এটা খাইয়ে দেখো ভালো হয়ে যাবে। তারপর করিম মিয়া বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে ঔষধ গুলো খাইয়ে দিল। কিছুক্ষণ পর পরি করিম মিয়ার স্ত্রী একটু সুস্থ অনুভব করল।
তারপর করিম মিয়া প্রতিদিনের মতোই মাঠে গিয়ে কৃষি কাজ করতে শুরু করল। এদিকে তার স্ত্রী এখন অনেকটাই সুস্থবোধ মনে করছে তাই তার স্ত্রী বাড়ির কাজকর্ম সব গুছিয়ে নিল প্রতিদিনের মতোই।
এভাবে দুই মাস পার হয়ে গেল মাঝে মাঝে পেট ব্যথা করে আর সে গ্যাসের ঔষধ খাতেই থাকে। তারপর একদিন বিকেলবেলা আবারও হঠাৎ করে করিমের স্ত্রীর প্রচুর পরিমাণ পেটে ব্যাথা করা শুরু করল। আগের দিনে তুলনাই আরো বেশি ব্যথা করছে । এদিকে করিম মিয়া বাজারে গেছেন তার একটি দরকারে। করিমের স্ত্রী একজনকে দিয়ে খবর দিল তার এ অসুস্থর কথা।
করিম মিয়া বাজার থেকে শুনতে পেল তার স্ত্রী আগের দিনের মতোই পেটে ব্যথা করছে। আবারও সেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে বলল আজকেও আমার স্ত্রী পেটে ব্যথা করছে। ডাক্তার আবারো গ্যাসের ঔষধ দিল পেটে ব্যথার জন্য। করিম মিয়া এটা নিয়েই বাড়িতে এলো।
তার স্ত্রীকে বলল ঔষধটা খেয়ে নাও ভালো হয়ে যাবে। এ কথা শুনে তার স্ত্রী ঔষধ খেয়ে নিল। এরপর ২ ঘন্টা পার হয়ে গেছে কিন্তু ব্যথা কমছে না তার স্ত্রীর পেটে ব্যথা আরো বাড়তেই চলছে।
সন্ধ্যা হয়ে এলো তার স্ত্রী পেটে ব্যথার যন্ত্রণা আর সইতে করতে পারছে না। তারপর করিম মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে ওই ডাক্তারের কাছে গেল ডাক্তার বলল যে রোগীর অবস্থা খারাপ এখনই বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো। অভিজ্ঞ ডাক্তারেরা কয়েকটি চেকআপ করলো এবং বলল যে তার স্ত্রীর সন্তানের নাড়ী লিক হয়ে গেছে এখনই অপারেশন করা লাগবে।
ডাক্তারেরা অপারেশন করার জন্য চেম্বারে নিয়ে গেল এবং রহিমের স্ত্রীকে অজ্ঞান করার ওষুধ দেওয়ার পাঁচ মিনিট পরেই মৃত্যুবরণ করল ডাক্তারকে সময় দিল না অপারেশন করা পর্যন্ত। । ডাক্তার কিছুক্ষণ পরে বের হয়ে বলল অনেক দেরি করে ফেলছেন রোগীকে এখানে নিয়ে আসতে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি (রহিম মিয়ার তিনটা বিয়ের প্রথম পর্ব।)
আসলে আমাদের সামান্য কিছু হলেই আমরা গ্রাম্য ডাক্তার দেখায়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হলে তারপরে বড় ডাক্তারের কাছে যায় ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। কিন্তু আমরা যদি প্রথমেই বড় ডাক্তারের কাছে যাই তাহলে আর আমাদের কোন ক্ষতি হয় না।
আসলে এই গল্পটা থেকে এটাই শিক্ষনীয় যে কোন কিছুকেই অবহেলা করা উচিত নয় সামান্য কিছু হলেও তার গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আর পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন।
আপনার গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে খুবই খারাপ লাগলো কারণ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরেও অপারেশন করার আগে মৃত্যুবরণ করল যে জিনিসটা আসলে শুনে খারাপ লাগার মত,, দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দেখা যাক দ্বিতীয় পর্বে কি হলো।
আসলে এটি একটি অনেক দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু বাস্তবতায় এটাই আমরা গ্রামে যারা বসবাস করি ছোটখাটো বিষয়গুলোকে নজরে রাখে না বা গুরুত্ব দেই না ফার্মেসি বা বেনামে ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে খেয়ে থাকি। যদিও বা খানিকটা সময়ের জন্য সুস্থতা অনুভব করি কিন্তু ভিতরে ভিতরে অসুখের পরিমাণ তীব্র হয়ে যায় যা আমরা বুঝতেও পারি না।
যখন এটা বিকট আকারে প্রকাশ পায় তখন আমরা ভালো এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে যাই আর ততক্ষণে ডাক্তারের কিছুই করার থাকে না।
আপনার এই গল্প থেকে আজ আমি অনেক বড় একটি শিক্ষা পেলাম। যে কোন রোগের জন্যই হোক না কেন সেই রোগ ছোট থাকা অবস্থায় ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ঘটনাটি আমাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য এর কারণে হয়তোবা আমরা অনেকেই আমাদের ভুলগুলো বুঝতে পারব।