পাটকাঠি কেনার চমৎকার অনুভূতি
হ্যালো বন্ধুগন আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন, আমিও আপনাদের দোয়া এবং সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করতে বাজারে যাই, কখনো নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাজারে যায় আবার কখনো সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যাই, সংসারের প্রয়োজনের জন্য অধিকাংশ সময় আলু বেগুন তরকারি মাছ মাংস এগুলো কিনতেই বাজারে যাওয়া হয়, কখনও চাল ডাল কেনার জন্য যেতে হয়।
আজকে যেহেতু বুধবার আমাদের এলাকার সবথেকে বড় হাট, এই হাটে সবকিছু পাওয়া যায়, আজকে এই হাটে আমার নতুন অভিজ্ঞতা হল, এর আগে কখনো আমার এরকম অভিজ্ঞতা হয় নাই, আজকে হাট থেকে পাটকাঠি কিনে এনেছি, পাটকাঠি কিনতে গিয়ে অনেকটাই অবাক হয়েছি, আমাদের এই হাটে এত বেশি পাটকাঠি বেচাকেনা হয় আমার জানা ছিল না।
গ্রাম অঞ্চলে পাটকাঠির অনেক চাহিদা, চুলায় রান্না করার ক্ষেত্রে এটার খুব বেশি প্রয়োজন হয়, যদিও বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও গ্যাসের চুলা চলে এসেছে, কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষই মাটির চুলায় লাকড়ি দিয়ে আগুন ধরিয়ে রান্না করে থাকে, চুলায় আগুন দেয়ার ক্ষেত্রে পাটকাঠির বিকল্প নাই, পাটকাঠি থাকলে খুব সহজেই চুলায় আগুন ধরানো যায়।
বেশ কয়েকদিন হল আমাদের বাড়িতে পাটকাঠির খুব বেশি প্রয়োজন ছিল, এবং বুধবারের অপেক্ষায় ছিলাম, বুধবারে হাটে গিয়ে পাটকাঠি কেনার সিদ্ধান্ত নেই, আজকে সকালে আমাদের বাড়ির পাশের একজন ভ্যান চালককে সাথে নিয়ে পাটকাঠি কিনতে যাই, তাকে সাথে নিয়ে পাটকাঠি কিনে তার ভ্যানে করেই বাড়িতে নিয়ে আসি।
অবাক করা বিষয় হলো, খুব সকালে ফজরের নামাজের পরেই পাটকাঠি কেনার জন্য হাটে গিয়েছিলাম, ফজরের নামাজ আদায় করার পরেই ভ্যান চালককে ডেকে নিয়ে আসি, যদিও আমার ইচ্ছে ছিল একটু পরে যাওয়ার কিন্তু ভ্যান চালক লাল মিয়া ভাই বলেন যে, পাটকাঠি কিনতে হলে এখনই যেতে হবে, তাই আর দেরি না করে সাথে সাথেই তার ভ্যান নিয়ে হাটে চলে যাই।
আমি চিন্তা করছিলাম হয়তো একটু তাড়াতাড়ি হাটে যাওয়া হয়ে গেছে, কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দৃশ্যটা ভিন্ন দেখি, আমাদের আগেই অনেক মানুষ পাটকাঠি কেনার জন্য এসেছে, যারা পাটকারি বিক্রি করবে তারা গতকাল সন্ধ্যেই পাটকাঠি নিয়ে চলে এসেছে, হাটের পাশের রাস্তায় অনেক ব্যবসায়ী পাটকাঠি নিয়ে এসেছে, এবং সেগুলো স্তুপ করে রেখেছে, ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ মত পাটকাঠি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
এত সকালে এত মানুষ হাটে দেখে আমি অবাক হয়েছি, এই সকালবেলা হাটে শুধু পাটকাঠি এবং পাট বেচাকেনা হয়, এত সকালে হাটের আর অন্য কোন দোকান আসে নাই, আমি অবাক হয়ে পাটকাঠির বেচাকেনা দেখছিলাম, যারা পাটকাঠি কিনতে এসেছে তারা পাটকাঠি কেনার পর ভ্যানে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
হাটের অধিকাংশ পাটকাঠি বিক্রেতাগণ চরাঞ্চল থেকে আসে, নদীর ওই পারে চরের মানুষেরা বেশি চাষাবাদ করে থাকে, সেখানে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি তারা পাট চাষ করে থাকে, এজন্য তাদের কাছে বেশি এবং ভালো পাটকাঠি পাওয়া যায়, তারা পাটকাঠি বিক্রি করার জন্য আগের দিন হাটে চলে আসে, অধিকাংশ ক্রেতারা চর অঞ্চলের মানুষদের থেকে পাটকাঠি কিনে থাকে।
আমিও সেখান থেকে কিছু পাটকাঠি ক্রয় করি, এবং সেটা ভ্যানচালক এর মাধ্যমে ভ্যানে উঠাই, পাটকাঠির দাম পরিশোধ করে আমি ভ্যানের উপর উঠে পাটকাঠির উপরে বসি, পাটুকাঠির উপরে বসে হাট থেকে বাড়িতে আসার মুহূর্তটা খুব উপভোগ করেছি, আমি খুব আনন্দ পাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিল পাটকাঠির উপরে বসে আরো কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াই।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার আজকের পোস্ট পড়ার জন্য। |
---|
বাংলাদেশের রান্নার কাজে পাটকাটি নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস এই পাটকাঠি ছাড়া চুলার জ্বাল ধরানো অনেকটাই অসম্ভব বিশেষ করে বর্ষাকালে তো আরো কঠিন।
যাই হোক পাটকাটি কেনার সুন্দর মুহূর্তগুলো আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।
চুলায় রান্না করার জন্য পাটকাঠি অবশ্যই, পাটকাঠি ব্যতীত চুলায় জ্বাল ধরানো খুব কষ্টকর, গ্রামের সকলের বাড়িতেই পাটকাঠি থাকে, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই একদম ঠিক বলেছেন পাটকাঠি শালা তোরা জাল ধরানো অনেকের অসম্ভব কষ্টসাধ্যের কাজ। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে মাটির তলা তো ধরতেই চায় না বর্ষার সময় মহিলাদের মহিলাদের আরো বেশি কষ্ট হয়।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার কমেন্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি রিপ্লাই দেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
হাটে সবকিছুই কিনতে পাওয়া যায়। তবে পাটকাঠি কিনতে পাওয়া যায় কিনা সেটা আমার জানা ছিল না ।যারা পাট চাষ করে অধিকাংশ মানুষই তাদের সারা বছরে জ্বালানির জন্য পাটকাঠি গুলো রেখে দেয়। এছাড়াও যারা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে না ।তারা মাঠ থেকেই অন্যদের বিক্রি করে দেয়। এ বছরে বৃষ্টির কারণে প্রচুর পাটকাঠি পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
এক সময় হাটে পাটকাঠি বিক্রি করা হতো না, কিন্তু বর্তমান সময়ে পাটকাটি ও হাটে বিক্রি করা হয়, এ কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পাটকাঠি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু যে কদিন রোদ ছিল সেই কয়দিনে সকলেই পাটকাঠি উঠিয়ে নিজে ঘরে তুলেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।