রাতের ট্রেন ভ্রমণ
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন? আশা করছি মহান আল্লাহতালার রহমতে আপনারা সকলেই অনেক ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহ তাআলার রহমতে অনেক অনেক ভাল আছি।
আজ আবার নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। গতকাল অনেকদিন পর খুব ট্রেন ভ্রমণ করার ইচ্ছা জেগেছিল। আর গতকালই আমার কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর আসার তারিখ পড়ে যায়, তাই ভেবেছিলাম এবার ট্রেন দিয়েই রংপুরে ফিরব।
রাতে ০৮:৩০ এর দিকে কুড়িগ্রাম থেকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ছেড়ে দেয় তাই ভেবেছিলাম এই ট্রেনে করেই রংপুরে যাব। ট্রেনের টাইম টেবিল কখনোই ঠিক থাকে না তাই ট্রেন মিস করে দেয়ার একটা ভয় ছিল তবে সৌভাগ্যবশত ট্রেন যখন স্টেশনে আসে আমি ঠিক সেই সময়ই স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম।
আমার বাসা থেকে স্টেশনে যেতে সময় লাগে দুই থেকে চার মিনিট কথা বলতে গেলে বাসার খুব কাছেই স্টেশন। বাসার কাছে স্টেশন হওয়াতে ট্রেনের হুছেইল খুব সহজেই শোনা যাচ্ছিল।
তখন ট্রেনের ইঞ্জিন ঘোরানো হচ্ছিল, ট্রেনের ইঞ্জিন ঘুরানোর পর ট্রেন স্টেশনে আর বেশিক্ষণ দেরি করেনা। তাই আমি তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি।
এই ট্রেনে করে আমার গন্তব্য ছিল কাউনিয়া অব্দি। এই ট্রেনটিতে করে ঢাকা যাওয়ার যাত্রীদের কাউনিয়া অব্দি নিয়ে যাওয়া হয় আর সেখান থেকেই তারা ঢাকার ইন্টারসিটি ট্রেনে ওঠে। আমি ভেবেছিলাম কাউনিয়া অব্দি যাব গিয়ে সেখান থেকে রংপুর এক্সপ্রেসে বসে রংপুর পর্যন্ত যাব।
তারপর স্টেশনে গিয়ে দেখি ইঞ্জিন ঘুরিয়ে বগির সাথে লাগানো হচ্ছিল। আজ এই মাত্র সময় ছিল ৫ মিনিট কারণ ইঞ্জিন ভবিষ্যতে লাগানো হয়ে গেলেই ট্রেন রওনা হবে।
আমি উঠেছিলাম ট্রেনের দ্বিতীয় বগিতে। ট্রেনে উঠে দেখি ট্রেনে খুব একটা লোকজন ছিল না প্রায় প্রত্যেকটা সিট ফাঁকা ছিল। তাই সেখানে কিছুক্ষণ বসে সময় কাটালাম কিন্তু তখনও ট্রেন ছাড়ার কোন নাম গন্ধ ছিল না।
তারপর একজন লোককে জিজ্ঞাসা করলাম ট্রেন কখন ছাড়বে সে আমার বলল ট্রেন ছাড়তে আরো ১০-১৫ মিনিট দেরি আছে। তাই ট্রেনে বসে না থেকে আমি প্লাটফর্মে হাঁটাহাঁটি করছিলাম।
তখনই আকাশের ওই চাঁদের দিকে আমার চোখ পরল, চাঁদটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল তাই মুঠোফোনের ক্যামেরা বের করে চাঁদটিকে ক্যামেরা বন্দি করে ফেলি।
কিছুক্ষণ পরেই ট্রেন ছাড়ার জন্য আবার হুছেইল দিল। তাই আমি প্ল্যাটফর্মে আর দাঁড়িয়ে না থেকে সোজা ট্রেনের প্রথম বগিতে উঠে পড়ি। প্রথম বগিতে উঠে দেখি শুধু দুজন মানুষ ছিল। যাক ভালই হলো গ্যাঞ্জাম ছাড়াই ট্রেন ভ্রমণ করা যাবে।
কিছুক্ষণ পরেই ট্রেন কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে কাউনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হল। আমিও গেটের কাছে একটি সিটে বসে পড়লাম। ট্রেনের ঝমঝম শব্দ সাথে ট্রেনের দোলাদুলি এ যেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। অনেকের কাছেই এই বিষয়টি বিরক্তি কর মনে হল আমার কাছে এটা বেশ ভালই লাগে।
মোটে ৪৫ মিনিট ভ্রমণ করার পর ট্রেনটি কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে কয়েকজনের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি এখন রংপুর যাওয়ার জন্য আর কোন ট্রেন নেই। এটা শুনে সত্যিই ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।
যাক কি আর করার ট্রেন নেই তাতে কি কাউনিয়া বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে বাসে বসে রংপুর চলে যাব। তাই স্টেশনে আর বেশিক্ষণ দেরি না করে স্টেশনের বাইরে গিয়ে একটি রিক্সা ঠিক করে সোজা চলে যাই কাউনিয়া বাস স্ট্যান্ডে। সেখানে গিয়ে দেখি বাসও ছিল না তাই দেরি না করে সিএনজিতে বসেই রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
৪৫ মিনিটের জন্য ট্রেন ভ্রমণ করেছি, এ ৪৫ মিনিট সত্যি খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে কারণ আমি ট্রেন ভ্রমণ করতে খুবই পছন্দ করি। এবার থেকে ঠিক করেছি রংপুর থেকে কুড়িগ্রাম কিংবা কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর যাওয়া আসার জন্য আমি রেল পথই ব্যবহার করব।
যাক আলহামদুলিল্লাহ আপনি খুব সুন্দর একটা ট্রেন ভ্রমণ করেছেন। সেই বিষয় সম্পর্কে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনি ট্রেন এর অনেক গুলো ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা ট্রেন ভ্রমণ এর দৃশ্য আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল, ভালো থাকবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ট্রেনে ভ্রমণ করতে আমারও অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হুম ভাই আমিও ট্রেন করে ঢাকা গিয়েছি অনেক মজা লাগে ট্রেনে চড়লে ৷ বিশেষ করে ট্রেন স্টেশনে টা আমার খুবেই ভালো লাগে অনেক মানুষ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে এই মুহূর্ত গুলো আমার খুবেই ভালো লাগে ৷ আর রাতের বেলা ট্রেন ভ্রমন তো অসাধারন ৷ রাতের পরিবেশ রাতের লাইট এই ধরনের দৃশ্য গুলো অসম্ভব সুন্দর লাগে ৷ যাই হোক ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য ৷
ট্রেনে ভ্রমণ আসলেই অনেক আনন্দদায়ক একটা ব্যাপার। ধন্যবাদ ভাই, আপনার এমন আনন্দমুখর সময় আমাদের মাঝে প্রকাশ করার জন্য।
খুব সুন্দর লাগলো ট্রেন ভ্রমণ এর পোস্ট টা পড়ে আর পিক গুলো খুব ভালো লাগলো দেখতে।ধন্যবাদ দাদা ।