ওই দিনের কথা মনে পড়ে গেল!
বুক ভরা আশা নিয়ে বাড়িতে গিয়েছি, আজকেই। সিলেট থেকে রওনা দিয়ে শেরপুর কাকার বাসায় থাকার পর অর্থাৎ একদিন থেকেই পরের দিন আমি বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
দুপুর ২ টার দিকে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছালাম। বাড়িতে পৌঁছানোর পূর্বে আমি যখন নৌকার ভিতর তখন একটি নাম্বার থেকে আমার মোবাইলে রিংটোন বেজে গেছে। কিন্তু আমি নৌকার আওয়াজে মোবাইলের সেই রিংটোন শুনতে পাইনি বাড়িতে গিয়ে সেই নাম্বারে কল ব্যাক করলাম।
স্যার:- কল ব্যাক করার সাথে সাথে বলতেছে, আপনি কি জাকারিয়া?
আমি:- হ্যাঁ আমি জাকারিয়া।
স্যার:- আমি প্রতীক সিরামিক থেকে বলতেছি। আপনি আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানে আপনার সিভি ড্রপ করেছিলেন।
আমি:- জি স্যার, আমি সিভি দিয়েছিলাম।
স্যার:- আপনার আগামীকাল ভাইবা রয়েছে, আপনি কি আসতে পারবেন?
-----
----
---
--
-
স্যারের সাথে কথোপকথন শেষ। বুক ভরা আশা নিয়ে বাড়িতে এসেছি কয়েকটি দিন থাকবো ছোটভাই এসেছে তার সাথে সময় কাটাবো বাড়িতে সবার সাথে সময় কাটাবো বন্ধুরা আছে তাদের সাথে সময় কাটাবো।
তুই আর হলো না দুপুর ২ টার দিকে বাড়িতে আসলাম বিকেল ছয়টার দিকে চলে গেলাম বাড়ি ছেড়ে। বাড়িতে ছোট ভাই এসেছে অনেকদিন পর আমি আসলাম। বাড়িতে রান্না হচ্ছে গরুর গোস্ত।
দেখতে পারতেছি রান্না হচ্ছে কিন্তু খাওয়ার মত সৌভাগ্য হলো না। কেননা ওই সময় খাওয়ার মত সময়ও নেই এবং রান্না হয়নি এখনো। মায়ের মন, দাদির মন মানতেছে না। রেডি হয়ে বের হলাম, ওই সময় রান্না হচ্ছে, আদা সিদ্ধ গোস্ত এক টুকরো মুখে দিয়ে রওনা দিলাম।
নদীর ঘাটে এসে দেখি আমি আশার পাঁচ মিনিট পূর্বে নৌকা ছেড়ে দিয়েছে। খুবই আফসোস হচ্ছে আরেকটু আগে যদি বের হতাম তাহলে হয়তো নৌকাটি ধরতে পারতাম।
দুই মিনিট অপেক্ষা করার পর দেখতে পেলাম স্পিডবোট যাবে ঘাট থেকে। জানতে পারলাম রিজার্ভ নিয়েছে সেখানে আমাকে নিবে না, উঠতে চাইছি। ঘাটে আবার আগের পাশের পাড়ার / গ্রামের বেশ কয়েকজন আছে যারা নৌকা এবং স্পিডবোর্ড চালায়। তাদের সাথে দেখা হয়ে গেল, মিলিয়ে দিয়েছে আল্লাহ তাআলা। ভাই কে বললাম আমার খুবই দরকার যেতে হবে গাজীপুর। তিনি আমাকে সেই রিজার্ভ করা স্পিডবোটে উঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। আলহামদুলিল্লাহ
স্পিডবোটে উঠে ৮ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে মেঘাই চলে গেলাম। আর এই স্পিডবোট এ উঠে বেশ কয়েকটি ছবি ধারণ করেছিলাম তার মধ্যে তিনটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি।
যেন মনে হচ্ছিল আরেকটু সামনে গেলেই মেঘগুলো ছুতে পারবো। মেঘগুলো মনে হচ্ছে একেবারে নিচে নেমে এসেছে এমন সাদা মেঘ কালো মেঘ ☁️ লালচে বর্ণ আকাশি বেগুনি বিভিন্ন কালারের মেঘের রং দেখা যাচ্ছে।
মেঘের এই বর্ণগুলো দেখতে দেখতে নদী পাড়ি দিয়ে স্পিডবোট থেকে নামলাম। সন্ধ্যাবেলায় বের হয়েছি, যাচ্ছি খালার বাসায়। খালার বাসায় রাত যাপন করে সকালবেলায় রওনা দিলাম ভাইবা দেওয়ার জন্য। আমি আর শরিফুল সাথে আরো একজন বড় ভাই রয়েছে আমরা তিনজন সিলেক্ট হয়ে গেলাম। Planning & QC Development
বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দিলাম আমি সিলেক্ট হয়েছি। বাড়িতে আলহামদুলিল্লাহ সবাই খুশি হয়েছে। কিন্তু আমি বাড়িতে গিয়ে একটি দিন থাকতে পারলাম না, ছোট ভাই অনেকদিন পর এসেছে তার সাথেও সময় কাটাতে পারলাম না 😟
এই পোস্ট এর সম্পূর্ণ কথা ২০২৪-০৮-১৯ তারিখের।
সফলতার প্রথম ধাপের গল্প আসলে কখনো ভোলা যায় না কিছু কিছু সময় সেগুলো আমাদের অনেক বেশি মনে পড়ে। যখন আপনাকে আপনার স্যার ভাইবার জন্য দেখেছিল তখন বাড়ির সবাই খুশি ছিল যে আপনি চাকরি পাবেন সেই আনন্দে বাড়িতে রান্না হলেও খাবার কোন সময় হাতে ছিল না অল্প কিছু মুখে দিয়েই বেরিয়ে পড়েছিলেন।
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ফিরে আবার জীবনের গল্পটা আমাদের কাছে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।