শিব নিবাসে পুজো
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি শুক্রবার আমার শিবনিবাস যাওয়ার কিছু মুহূর্ত।
প্ল্যান মাফিক যেহেতু বৃহস্পতিবার পুজো দেওয়া হয়নি ,তাই শুক্রবার সকালবেলায় মোটামুটি সাড়ে নটার পর পর আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম শিবনিবাস এর উদ্দেশ্যে। সেখানে যাওয়ার আগে বাড়ির কাছে বাবা জলেশ্বর এর মন্দিরে অর্থাৎ আমাদের বাড়ির পাশের শিবতলায় বাবা জলেশ্বর এর পুজো সেড়ে নিলাম।। বাবার সামনে দিয়ে এরকম ভাবে আর এক জায়গায় পুজো দিতে যাব, সেটা মোটেই মন মান ছিল না। তাই প্রথমেই আগে বাড়ির পাশের শিব মন্দিরে পুজোটা দিয়ে নিলাম।
তারপর গাড়িতে উঠে ৪৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম শিবনিবাস। সকাল সকাল সকলে মিলে স্নান সেরে শুদ্ধবস্ত্রে এইভাবে পূজা দিতে যেতে সত্যিই ভালো লাগছিল। পৌঁছে যাওয়ার পর দেখলাম মন্দির প্রাঙ্গণে আমাদের মতন বেশ কিছু মানুষ পুজো দিতে গিয়েছে। তবে ভিড় একদমই ছিল না।
মন্দিরের সামনে ফুল বেল পাতা এবং দুধ নিয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে বিক্রি করার জন্য। আমরা তো আমাদের পুজো দেওয়ার জন্য সমস্ত জিনিস নিয়েও গিয়েছিলাম। তা সত্বেও উনাদের কাছ থেকে কিছু কিছু করে জিনিস কিনে নেয়া হলো। ওনারা একটা ঘটের মধ্যে ফুল ,বেলপাতা, দুধ, জল সমস্ত কিছু মিশিয়ে বিক্রি করছিলেন।
তারপরে আমরা সবাই প্রবেশ করলাম মন্দিরের মধ্যে। সমস্ত কিছু গুছিয়ে রাখার পরে প্রথমেই সবার আগে আমি পুজো দিতে উঠলাম।। মন্দিরের মধ্যে ব্রাহ্মণ বসেই ছিলেন। আমি শিব ঠাকুরকে পড়াবো বলে একটা বড় রজনীগন্ধার মালা কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম।
আমি যখন মালা কিনছি তখন বড় মালা দোকানে ছিল না। তাই তিন-চারটে রজনীগন্ধার মালা একসাথে করে নিয়েছিলাম ,আর মালার দোকানের কাকু টা বারবার বলছিল এত বড় মালা নিয়ে আপনি কি করবেন। কিন্তু যখন আমি শিবনিবাসের শিবের জন্য বললাম। তখনই উনি চুপ হয়ে গেলেন। কারণ সবাই জানে যে কতটা বড় শিবলিঙ্গ রয়েছে সেখানে।
প্রথমে উঠেই আমি আগে মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করলাম। এর সাথে জব করতে করতে বাবার মাথায় দুধ ,গঙ্গা জল ঢেলে দিলাম। মন্দিরে যখন মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করছিলাম তখন পুরো মন্দিরটা গমগম করছিল। এমনিতেই এরকম বড় মন্দিরগুলোতে কথা বললে ইকো হয়।
সে জায়গায় মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র যখন জব করছিলাম ,তখন গায়ের মধ্যে কাঁটা দিচ্ছিল। বাবার গায়ে ঘি মধু মাখিয়ে নিলাম। বেলপাতা, নীলকন্ঠ এবং আকন্দ ফুল দিয়ে পুজো দিলাম। গৌরী পিঠে পুজো দিলাম। বাতাসা, আতপ চাল দিয়েও পুজো দিলাম। তারপরে নিয়ে যাওয়া মালাটা সুন্দর করে পরিয়ে দিলাম। আমার একার পক্ষে মালা পরানো অসম্ভব ছিল ।তাই ব্রাহ্মণ কিছুটা সাহায্য করল।
যখন শিব চতুর্দশী বা শিবের কোন অনুষ্ঠান থাকে তখন এই জায়গাতে যে পরিমাণে ভিড় থাকে, তা আপনাদের বলে বোঝাবার নয় ।কারণ আমি কোন সময় সেই অনুষ্ঠানগুলোতে যাইনি ।মানুষের মুখে যেটুকুনি শুনেছি যে পা দেওয়ার জায়গা থাকে না এই জায়গা গুলোতেই। মানুষ ঠিকভাবে জল ঢালতে পারে না শিবলিঙ্গ তে। শিবনিবাসের এই শিব লিঙ্গ এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তর হিসাবে বলা হয়।
এরকম ফাঁকা ফাঁকা বাবার পুজো দিতে পেরে সত্যিই আমার অনেক ভালো লাগছিল। আমার পূজো দিয়ে যাওয়ার পরে ঈশান পূজো দিতে উঠলো। তার পরের মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে পরের দিন শেয়ার করব। আজ এখানেই শেষ করলাম। সকলে ভালো থাকবেন।
এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি শিবনিবাসে পুজো দেওয়ার যে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, তা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী। আপনার অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং পূজার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে, শিবের জন্য রজনীগন্ধার মালা কেনার সময়, আপনি যে সদিচ্ছা এবং ভাবনার প্রকাশ করেছেন, তা সত্যিই অনন্য। এত সুন্দর একটি বিষয়বস্তু নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
সবার বিশ্বাসও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নিজ নিজ জায়গায় সুন্দর এবং তার শ্রদ্ধারযোগ্য। আপনার অভিজ্ঞতা পরে বুঝতে পারলাম আপু কতটা গভীর ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে পূজার আনিষ্টিকতা সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি ধর্মের মানুষেরই তার নিজস্ব উপায়ে স্রষ্টার প্রতি ভক্তি প্রকাশ করার অধিকার আছে এবং সেই অনুভূতি সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনার শিবনিবাস যাত্রার অভিজ্ঞতা সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আগের দিন যেহেতু আপনার ওখানে গিয়ে কোন লাভ হয়নি তাই আপনারা পরের দিন আবার সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছেন আসলে সকাল সকাল যাওয়ার কারণেই হয়তো বা আপনারা জায়গাটা অনেক বেশি ফাঁকা পেয়েছেন এবং ফাঁকা জায়গায় আপনারা পুজো দিয়ে আবার নিজের বাসায় ফিরে এসেছেন বড়মালা না পাওয়ার কারণে ছোট ছোট রজনীগন্ধার মালা কিনে নিয়েছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের শিব মন্দিরে গিয়ে পুজো দেয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।