যখন ঘোরাঘুরি শেষ হয়না

in Incredible India2 months ago

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন ? আশা করছি আপনারা সকলেই সুস্থ আছেন। গত দিন থেকে কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। গরমটা সামান্য কম। আজকে মোটামুটি সর্বোচ্চ উষ্ণতা ছিল ৩৬°। যাইহোক আমি গত দুদিন ধরে আপনাদের সাথে শেয়ার করছিলাম আমার হঠাৎ করেই মায়াপুর যাওয়ার কথা। আমি ,আমার জেঠিন , দিদি, মা এবং ভাইয়ের সাথে মায়াপুর গিয়েছিলাম। মায়াপুরের সমস্ত কিছুই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। এর সাথে আমার ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে মায়াপুর নিয়ে আরো অনেক কিছু শেয়ার করব।

1000124909.jpg

কিন্তু তার আগে আপনাদের আজকে বাকি ঘটনাগুলো শেয়ার করতে চাই। গতকালের পোস্টে আমি জানিয়েছিলাম মায়াপুর থেকে আমরা রওনা দেওয়ার পর সোজা বাড়ি ফিরে আসিনি। আরো আমাদের কাণ্ডকারখানা বাকি ছিল। সত্যি বলতে একটা দিনে হঠাৎ করে যে এত ঘুরাঘুরি হবে আমি নিজেও ভাবতে পারিনি।

প্রথমত সকালবেলায় নার্সারী যাওয়া দিদির সাথে হঠাৎ করে। তারপরে বিকেল থেকে আবার মায়াপুর। সেসব কথা আপনাদের সাথে পোস্ট এর মাধ্যমে শেয়ার করেছি। মায়াপুর থেকে ফেরার পর আমরা সবাই প্রথমে জেঠিনের বাড়িতে গেলাম অর্থাৎ আমার দিদির বাড়িতে। দিদির বাড়ি আমার থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব। দিদির বাড়িতে পৌঁছে প্রথমেই আমরা আমাদের গাড়িটা ছেড়ে দিলাম।

1000124912.jpg

গাড়ি ছেড়ে দিলাম বলতে আমাদের যে গাড়ি আছে সে গাড়িটা মার্কেটের মধ্যে নিয়ে ঢোকা অসম্ভব। কারণ মার্কেটে পুজোর আগে যেভাবে ভিড় হয়। গাড়ি পার্কিংয়ে খুবই অসুবিধা হবে। এ কারণে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হলো। আমাদের গাড়ি সাধারণত আমাদের ফ্যাক্টরিতে রাখা হয়। সে কারণে আমরা মনে করলাম গাড়ি ছেড়ে দেওয়াটাই ঠিকঠাক হবে। এবার যা ঘোরাঘুরি হবে টোটো নিয়ে ঘুরবো।

দিদির বাড়িতে নামার একটাই কারণ জেঠিনের কিছু কাজ ছিল বাড়িতে, সন্ধ্যেবেলায় দশ মিনিটের কাজ ।কিন্তু না করলেও নয় তাই আমাদের বাধ্য হয়ে বাড়ির দিকে আসতে হলো। না হলে আমরা গাড়ি থেকেই মার্কেটে নেমে যেতাম। বাড়িতে জেঠু ছিল। জেঠু প্রথমে ভেবেছে আমরা হয়তো আর কোথাও বেরোবো না। পরে যখন শুনছে আমরা আবার ঘুরতে বেরোবো, তখন জেঠুর মাথায় হাত। জেঠু বলে, সকাল থেকে তোদের ঘুরে শেষই হয় না, আবার তোরা ঘুরতে যাবি!

1000124915.jpg

কি আর করা যাবে? আমাদের মধ্যে এই ব্যাপারটা রয়েছে, উঠল বাই দরগায় যাই। এটা যদিও প্রচলিত কথা। কিন্তু আমাদের সাথে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ। মজা করতে আমরা সত্যিই খুব ভালোবাসি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এইভাবে হুট করে ঘুরতে যাওয়া হয় বলেই হয়তো ভালো লাগে। সবসময় প্ল্যান করে সবকিছু হয়ে ওঠেনা। আগে থেকে প্ল্যান করে অনেক কিছুই পরে ভেস্তে যায়। যাই হোক আমরা বাড়িতে সমস্ত কাজ সেরে দশ মিনিটের মধ্যেই আবার বাড়ির সামনে থেকে টোটো নিয়ে মার্কেটের দিকে রওনা দিলাম।

1000124918.jpg

পৌঁছে গেলাম একটা ক্যাফেতে। কারণ ভীষণ পরিমাণে খিদে পেয়েছিল। বাড়িতে ঢুকেই তো দিদি প্রথমে রানাদার ভাইরাল বিরিয়ানির স্বাদ নিয়ে নিল। ও আবার বেশিক্ষণ খিদে চেপে থাকতে পারে না। আর রীতিমতো প্রশংসায় ছড়াছড়ি। কারণ সত্যিই নাকি ভাইরাল বিরিয়ানি সাংঘাতিক খেতে। ক্যাফেতে গিয়েও আমরা পরপর কত কিছু অর্ডার করলাম। দিদি লস্যি খেতে খুব ভালোবাসে। প্রথমেই চারজনের চারটি লস্যি নেওয়া হলো। এর সাথে আমি চকো বল অর্ডার করেছিলাম। ভেজ প্যাটিস, আর দিদি আরো এক ধরনের বার্গার অর্ডার করল।

1000124921.jpg

ক্যাফেতে একটু ভুরিভাজন করে আমরা মার্কেটের দিকে রওনা হলাম। পুজোর কেনাকাটা তো আমাদের তখনো শুরু হয়নি। এ কারণে প্রথমে ভাবছিলাম কোথায় যাব। আর বেশ রাতও হয়ে গিয়েছিল ।তাই আমাদের যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না অন্য কোথাও। কিন্তু কৃষ্ণনগরে আমাদের শহরের মধ্যেই কলকাতা বাজার ওপেন হয়েছে। কলকাতায় কলকাতা বাজার প্রচুর আছে। কৃষ্ণনগরে ওপেন হয়েছে, তাই একটা আকর্ষণ ছিল। দিদি রাজি হয়ে গেল। তাই আমরা সবাই চলে গেলাম কলকাতা বাজারে।

1000124924.jpg

প্রথমবার কলকাতা বাজারে ঢুকে বুঝলাম জিনিসপত্র মোটামুটি ভালই। আমি পুরোপুরি টেন আউট অফ টেন বলবো না। কিন্তু টেনের মধ্যে সিক্স সেভেন দেওয়া যায়। আমরা নানান ধরনের জামাকাপড় দেখতে থাকলাম। পুজোর সময় অনেক জনকে জামা কাপড় দিতে হয়। কয়েকজনের জামা কাপড় কিনে ফেললাম।

কিনতে কিনতে দেখি ঝমঝম করে বৃষ্টি। সাথে ঝড়। এতটা জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল যে বলে বোঝাবার নয়। এদিকে কলকাতা বাজার বন্ধ হতে চলেছে। আমি আর দিদি কোন কিছুই নিইনি। যাদের জন্য জামা কাপড় কিনলাম ,ওটুকুই । যাইহোক এত ঝড় বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে যাওয়া যায়। বাড়ি ফিরতেই হবে।

1000124927.jpg

বৃষ্টি যখন একটু কমলো। তখন টোটো ধরলাম। কলকাতা বাজার থেকে আমাদের বাড়ি, পাঁচ সাত মিনিটের রাস্তা।আমরা যখন টোটোতে উঠছি, কত লোকজন কলকাতা বাজারে গেটের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে। সকলেরই বাড়ি ফেরার তাড়া। আমরা ভাবতেই পারিনি বৃষ্টিটা হয়ে যাবে।

1000124906.jpg

মায়াপুর থেকে ফেরার পথে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল মেঘ করেছে। হালকা হালকা বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। কিন্তু এমন তো প্রত্যেকদিনই হয় কিন্তু বৃষ্টি হয় না ঠিকঠাক। তাই আমরা অতটা গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু হঠাৎ করে এরকম ঝমঝমে বৃষ্টি । কিন্তু আমার বৃষ্টি মজাই লাগে। অবশেষে বাড়ি ঢুকলাম। তখন মোটামুটি দশটা বেজে গেছে। তারপর রানাদার ভাইরাল বিরিয়ানি আমিও খেলাম। বিরিয়ানি টা অপূর্ব খেতে। ইচ্ছা আছে পরের বার মায়াপুর গেলে একটু বেশি করে নিয়ে আসবো।।

আপনাদের সাথে সমস্ত ঘটনাগুলো শেয়ার করতে আমার বেশ মজা লাগে। তাই কোন কিছু গল্পই বাদ রাখি না। আজকে এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকবেন।

Sort:  
 2 months ago 

আমি তো মনে করেছিলাম যে মায়াপুর ছেড়ে হয়তো বা বাসায় চলে এসেছেন কিন্তু না ঘোরাঘুরি এখনো বাকি আছে সেটা আজ শেষ করলেন পূজোর উপলক্ষে কলকাতার মার্কেট গুলোতে অনেকটাই ভিড় দোকানে জিনিসপত্র মোটামুটি ভালই তবে দেশের ভিতরে দশ আপনি দিতে চাচ্ছেন না।

যাহোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভ্রমণের দৃশ্যগুলো আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@xpilar.witness

We are the hope!

Loading...
 2 months ago 

একদম ঠিক কথা বলেছো। জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে যেন ঘোরাঘুরি শেষই নেই। মায়াপুর থেকে এসে এত ঘোরাঘুরি করলে আর আমি জানতেই পারলাম না।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.19
JST 0.034
BTC 91295.19
ETH 3130.58
USDT 1.00
SBD 2.89