লাড্ডুর রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই সুস্থ আছেন। তবে আমি এই গরমে ভীষণ বিরক্ত হয়ে পড়েছি। একটা টানা, ৪-৫ দিন বৃষ্টির পর যেদিন রোদ উঠলো, সেদিন ভাবলাম যে বৃষ্টি হয়েছে বলে ওয়েদারটা ঠান্ডা ঠান্ডা থাকবে। কিন্তু ঠান্ডার নাম গন্ধ কোথাও নেই এত পরিমাণে গরম পড়তে শুরু করল। যে বলে বোঝাবার নয়। সেদিন আমাদের পুজো ছিল। সেসব নিয়ে অন্য একদিন পোস্টে লিখব। তবে আজকে বেশ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে চলে এসেছি একটা নতুন রেসিপি নিয়ে। আজকে আমি বানাতে চলেছি মতিচুরের লাড্ডু। এই মতিচুরের লাড্ডু কিভাবে তৈরি করতে হয়,পুরো ধাপে ধাপে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার্থে আমি এই মতিচুর লাড্ডু বানানোর একটা ভিডিও বানিয়ে রেখেছি। আপনারা অবশ্যই ছবিগুলির সাথে সাথে ভিডিওটি দেখে নেবেন। এতে আপনাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে।
লিংক
আমি যে মিষ্টি খেতে কত ভালোবাসি তা অনেক সময় আমি পোষ্টের মাধ্যমে এই প্লাটফর্মে শেয়ার করেছি। আমার এই মিষ্টির প্রতি নেশা কোনদিন কাটবে কিনা জানিনা। তবে আমি চাইও না। কারণ মিষ্টিটা আমার অত্যাধিক পছন্দের। তবে আমি বেশি পরিমাণে কখনোই কোন জিনিস খাই না। সারাদিনে একটা মিষ্টি খেলে আমার মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। তবে কেউ যদি পাগলের মতন একদিনে ৩০-৪০ টা করে মিষ্টি খেতে থাকে, তার বিপদ তো নিশ্চিত।
আমি অনেক জনকেই শুনেছি রসগোল্লা ৩০-৪০ টা খেতে। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল। ভালোবাসার জিনিস অতিরিক্ত বেশি খেলে এমন ঘটনা দাঁড়াবে যে পরে সে জিনিসটা হয়তো আর খাওয়াই যাবে না। ডাক্তার বারণ করে দেবে। তাই আমি ভেবেচিন্তেই মিষ্টি খাই।
অনেক কথা বলে ফেললাম চলুন এবারে আস্তে আস্তে এই রেসিপির উপকরণ গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেলি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | বেসন | ২০০গ্রাম |
২ | সাদা তেল | পরিমাণ মতো |
৩ | চিনি | ২০০ গ্রাম |
৪ | জল | ১৫০ এম এল |
৫ | ঘি | এক চামচ |
উপকরণগুলো তো আপনারা দেখে নিলেন। কত অল্প উপকরণে এত সুন্দর একটা জিনিস তৈরি হতে পারে আপনারা নিজেরাই ভাবুন। এবার স্টেপ বাই স্টেপ দেখতে থাকুন।
প্রথম ধাপ
প্রথমেই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি এখানে বেসন খুব ভালোভাবে চেলে নিচ্ছি, যাতে কোন রকম দানা না থাকে।
দ্বিতীয় ধাপ
জল দিয়ে দিয়ে আমরা একটা পাতলা ব্যাটার তৈরি করে নেব। আপনি আমার বানানো ভিডিওটা ফলো করলে বুঝতে পারবেন কতটা পাতলা হয়েছিল।
তৃতীয় ধাপ
একটা পাইপিং ব্যাগে পুরো মিশ্রণটা ঢেলে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ
এবার এখানে আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন আমি কড়াইয়ে তেল গরম করছি। গ্যাসের ফ্লেম এই সময় মিডিয়ামে রাখবেন।
পঞ্চম ধাপ
এবার পাইপিং ব্যাগের মুখের জায়গাটুকু অল্প করে কেটে নিয়ে ঠিক এইভাবে গরম তেলের মধ্যে আমরা বেসনের মিশ্রণটা দিতে থাকব। ছোট ছোট গুটি গুটি আকৃতির ফোঁটা তেলের মধ্যে পড়ে মতির মতন দানা তৈরি হবে। এবং আমরা সেটাকে ভেজে তুলে তুলে রাখবো। একদম বেশি কড়া করে ভাজলে হবে না।
ষষ্ঠ ধাপ
ভুলবশত কিছু দানা বড় হয়ে যাওয়ার কারণে আমি মিক্সচার গ্রাইন্ডারে এক সেকেন্ডের জন্য সমস্ত ভাজা ব্যাসনের দানাগুলিকে একবার পিষে নিয়েছি। এক সেকেন্ডের বেশি হলে দানা পুরো গুড়ো হয়ে যাবে। তাই শুধুমাত্র এক সেকেন্ডের জন্যই গ্রাইন্ডার চালাতে হবে।
সপ্তম ধাপ
এবার চিনির শিরা তৈরি করতে হবে । এর কারণে নিয়ে নিচ্ছি কড়াইয়ের মধ্যে চিনি এবং জল। আঁচ জোরে দিয়ে নাড়তে থাকবো। একটু কেশর দিয়ে দিয়েছি।
অষ্টম ধাপ
চিনির রস তৈরি হয়ে গেলে, ভেজে রাখা বেসনের দানাগুলো দিয়ে দেব। গ্যাসের ফিল্ম লো থেকে মিডিয়াম রাখবো। আর ভালোভাবে নাড়তে থাকবো যাতে কড়াইয়ে না লেগে যায়।
নবম ধাপ
একটানা এইভাবে ৫-১০ মিনিট নাড়তে নাড়তে দেখতে পাবেন শিরার মধ্যে বেসনের দানাগুলো জমাট বেঁধে গিয়ে সুন্দর কমলা রঙের মিশ্রণ তৈরি হয়েছে। এবং আস্তে আস্তে কড়াই থেকে মিশ্রণটা ছেড়ে আসছে। এই সময় দিয়ে দিন এক চামচ ঘি। তারপর আবার ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নিন। আমরা যেমন নাড়ু বানানোর মিশ্রণ তৈরি করি ঠিক তেমন টাইট হবে। খুব বেশি টাইট না, আবার খুব বেশি পাতলা না।
দশম ধাপ
একটা থালায় ঘি বা সাদা তেল মাখিয়ে মিশ্রণটা ঢেলে নিন। আর হাতের তালুর সাহায্যে লাডুর মত তৈরি করতে থাকুন। মিশ্রণটা উষ্ণ থাকা অবস্থাতেই কাজটা করতে হবে। না হলে জমাট বেঁধে যাবে ,শক্ত হয়ে যাবে।
তৈরি
আর এই ভাবেই তৈরি হয়ে যাবে মতিচুরের লাড্ডু। শেষের দিকে অনেকে মগজ দানা দেয়। যেহেতু আমার বাড়িতে সেগুলো ছিল না তাই আমি দিইনি। আপনারা চাইলে ড্রাই ফ্রুটস অ্যাড করতে পারেন।
শুধুমাত্র নিজের খাওয়ার জন্য নয়, আমাদের নানান রকম পূজা-পার্বণেও নাড়ুর মতো আমরা লাড্ডু বানিয়ে ফেলতে পারি বাড়িতে। খুব অল্প খরচেই এত সুন্দর জিনিস তৈরি হয়ে যাবে।
আপনারাও বাড়িতে একবার চেষ্টা করে দেখুন। দোকানের থেকেও আপনার বাড়ির লাড্ডু অনেক সুন্দর খেতে হবে। আমার ভিডিওটি ফলো করুন আপনাদের বুঝতে আরো সুবিধা হবে।।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আবার কোনদিন নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব।
মিষ্টি জাত দ্রব্য এমনিতেই আমি অনেক বেশি পছন্দ করি, এরকম সুস্বাদু লাড্ডু পেলে আর কোন কথায় থাকবে না, আপনি খুব সুন্দর ভাবে লাড্ডু তৈরি রেসিপিটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, আপনার লাড্ডু রেসিপি দেখে খুব ভালো লাগলো, ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator06.
Good post here should be . . .
Curated by : @𝗁𝖾𝗋𝗂𝖺𝖽𝗂
লাড্ডু তৈরি রেসিপি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনি সবগুলো বিষয় সুন্দর ধারে ধারে বর্ণনা করেছেন। যার কারণে সকলেরই বুঝতে অনেক সুবিধা হয়েছে। সুন্দর রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ওহো কি সুন্দর লাড্ডু,,, এত সুন্দর লাড্ডু দেখলে মনের ভিতরটা এমনিতেই ভাল লাগে।।।
আপনার রেসিপিগুলো বেশ ভালো লাগে খুব সুন্দর করে ধাপে ধাপে ধৈর্য নিয়ে উপস্থাপনা করেন।।
তবে আমিও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি ধৈর্য নিয়ে রেসিপি টা দেখে লাড্ডু তৈরি করার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপনি আজ আমাদের মাঝে লাড্ডু তৈরি করার রেসিপি শেয়ার করেছেন। লাড্ডু তৈরি করার রেসিপি এতো সুন্দর করে তুলে ধরেছেন যা দেখে ভালো লাগছে। এবং লাড্ডু একটি সময় আমি অনেক খেয়েছি এখন আর লাড্ডু খুব বেশি দেখা যায় না। যাইহোক অনেকদিন পরে লাড্ডু তৈরি করার রেসিপি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে ভালো লাগলো।