গনেশ পুজোর বাজার

in Incredible India2 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন আমি গতকাল আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম গণেশ চতুর্দশী নিয়ে কথা। এবং গতকাল আমি আপনাদের বলেছিলাম আমাদের বাড়িতেই প্রথমবার বেশ ধুমধাম করে গণেশ পূজো হলো। তার সাথে আমি বলেছিলাম যে গণেশ পুজোর প্রত্যেকটা মুহূর্ত আপনাদের সাথে স্টেপ বাই স্টেপ শেয়ার করব।তাই আজ চলে এলাম শেয়ার করতে বাজার করার কথা নিয়ে।

1000124272.jpg

প্রথমত পুজোর বাজার আমি অনেকবার করেছি।। বলতে গেলে আমার বাড়ির পুজোর সমস্ত বাজার আমি করি। আমার মা আমার হাতে ফর্দ ধরিয়ে দেয়, আর সেই মতো আমি বাজার করে নিয়ে আসি। আমার পুজোর বাজার করতে খুব ভালো লাগে। সরস্বতী পূজা থেকে শুরু করে বাড়ির যে কটা পুজো হয় বাৎসরিক সবকটা পূজার বাজার আমি করি। এই ফর্দ গুলোর ব্যাপারে আমার মাও জানত না। আমার ঠাকুমা বুদ্ধি করে একটা খাতায় সমস্ত পুজোর আয়োজন করার নিয়ম এবং কি কি সামগ্রী লাগবে সব লিখে রেখেছিল।

1000124269.jpg

এছাড়াও ছোট থেকে ঠাম্মাকে দেখে দেখে আমিও কিছুটা বুঝে গিয়েছিলাম, ঠাকুমা চলে যাওয়ার পরে মা আর আমি মিলে ওই ফর্দ দেখে দেখেই কাজ করি এখনো। এবার ঘটনা হলো আমি গণেশ পূজোর ফর্দর ব্যাপারে জানতাম না। লক্ষ্মী গণেশ পুজোর বাজার করেছি, তাই ভেবেছিলাম গনেশ পুজোর জন্য সেরকম কিছু লাগবে না। কিন্তু আমাদের যে ব্রাহ্মণকে গণেশ পুজোর জন্য বলা হলো। তিনি মস্ত বড় একটা ফর্দ ধরিয়ে দিলেন।

সাধারণত আমাদের বাড়ির বাৎসরিক পুজো গুলো আমরা একজন ব্রাহ্মণকে দিয়ে করিয়ে থাকি। কিন্তু এবারে গণেশ পুজোর জন্য আমরা অন্য ব্রাহ্মণকে বলেছিলাম। ফর্দ দেখে তো আমার মাথায় হাত। তাই একা একা পুজোর বাজারের ভার নিলাম না। বাবাকে বললাম আমার সাথে পুজোর বাজার করতে যেতে।

1000124278.jpg

প্রতিবারের মতন এবারেও পুজোর বাজার করতে আমাদের শহরের সবথেকে পুরনো বাজার গোয়ারী বাজারের পৌঁছে গেলাম। বাবার সাথে বাইকে করে আমি বাজারে গিয়েছিলাম। বাবা চেনাশোনা একটি দশকর্মার দোকানে প্রথমে ঢুকলাম। তারপর ওনাদের ফর্দ দেখাতে, ওনারা ওনাদের মতো দিতে থাকলেন।

উনারাও বললেন যেহেতু মূর্তিটি প্রথমবার প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে অর্থাৎ অভিষেক করে তারপর বসানো হবে, তাই সামগ্রী অনেক লাগবে। আর সাথে এটাও বললেন গণেশ পুজোর বাজার যদি নমো নমো করে সারতে হয়, তাহলে তো অল্প হবে। কিন্তু যদি আমরা যেভাবে চাইছি সেভাবে করতে হয় তাহলে এত কিছুই লাগবে। আমার নাম না জানা প্রচুর প্রচুর সামগ্রী কিনতে হলো।

1000124275.jpg

দশকর্মার দোকানে সেই সমস্ত নিতে নিতে প্রায় এক দেড় ঘন্টা লেগে গেল। যেহেতু পুজোর আগের দিন বাজার করতে গিয়েছি তাই দোকানে ভিড়ও ছিল। তারপর সেখান থেকে চলে গিয়েছিলাম মুদিখানার দোকানে। মুদিখানার দোকানের কাজ সেরে চলে গেলাম যেখানে ছাঁচ বাতাসা আলাদা করে পাওয়া যায়।। তারপর আলাদা করে ঘি এর দোকানে যেতে হলো। এর সাথেই বস্ত্র পূজোতে লাগে। সেগুলো কিনতে চলে গেলাম আর এক দোকানে। একটা উত্তরীয় ,একটা ধুতি ,একটা গামছা কিনতে হল।

20240906_133109.jpg

তারপর চলে গিয়েছিলাম ফলের দোকানে। সব রকমের ফল মোটামুটি কিনে ফেলা হলো। এর সাথেই আমি যেহেতু গণেশ ঠাকুরের পুজোর জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড টা একটু সুন্দর করে সাজাতে চেয়েছিলাম।। সেই কারণে সমস্ত কিছু আলাদা আলাদা দোকান থেকে কিনতে হলো। প্লাস্টিকের ফুল, হলুদ কাপড়, থার্মোকল, আলপিন, আরো অনেক কিছু কিনতে হল।

পুজোর আগের দিন থেকেই মিষ্টির দোকানে মিষ্টি শেষ হতে থাকে। গণেশ পুজো বলে প্রত্যেক মিষ্টির দোকানে লাড্ডুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমি প্রায় ৫০ টার মত লাড্ডু কিনলাম। এর সাথেই আরো নানান ধরনের মিষ্টি কিনলাম। ফুলের কাজটা পুজোর দিন সকালের জন্যই রেখে দিলাম।

দশকর্মার দুই ব্যাগ বাজার, সাথে ফলের বাজার, আরো টুকিটাকি জিনিসপত্র, মিষ্টির বাজার সব মিলিয়ে আমার হাতে ব্যাগ বোঝাই। শেষ পর্যন্ত বাইকে ওঠার সময় মনে হচ্ছিল টোটো করে গেলে ভালো হতো। তাও একজন কাকু হেল্প করে দিলেন। আমি বসার পর আমার হাতে হাতে সমস্ত ব্যাগগুলো এক এক করে দিয়ে দিলেন।

20240906_142803.jpg

বাপরে বাপ। গণেশ পুজো করতে যে এত কিছু লাগে আগে জানতাম না।। গণেশ ঠাকুরের বরণডালা জন্যই কত কিছু কিনতে হলো। যাক বাজার করতে আমার তো ভালই লাগে। কিন্তু সেদিনকে পুরো আমাকে ক্লান্ত করে দিয়েছে। এবার থেকে গণেশ ঠাকুরের বাজার করতে বাবার সাথে অন্য কাউকে পাঠাবো। আমি আর যাচ্ছি না।

আজকে এখানেই শেষ করছি। বাজার করতে করতে যেটুকুনি ছবি তুলেছিলাম তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম এবং সমস্ত ঘটনাটা জানালাম। সকলে ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.19
JST 0.034
BTC 91149.41
ETH 3109.08
USDT 1.00
SBD 2.91