ভেজ পোলাও এর রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। বেশ অনেকদিন আগের কথা, মানে আমি গত একাদশীর কথা বলছি । একাদশীর দিন আমার মা-বাবা একাদশী পালন করে বলে আমি আর ভাই অন্যান্য কিছু নিজের মতন করে করে নিই। এইবারে একাদশীর দিন হঠাৎ করেই মনে হল ভেজ পোলাও বানাই । পোলাও তরকারি ছাড়াও খাওয়া যায়। তাই আমার বেশি রান্নাঘরে রান্না করতেও হবে না। এ কারণে আমি ঠিক করলাম পোলাও বানাবো। এর আগে আমি অনেক বার বাসন্তী পোলাও বানিয়েছি। কিন্তু কখনো ভেজ পোলাও বানানো হয়নি। সেদিনকে ইউটিউব ঘাটতে ঘাটতে এই রেসিপিটা হট করেই চোখে পড়ল। একজন খুব সহজভাবে ইউটিউব এর শর্টস এ এই রেসিপিটা দিয়েছে।
যাইহোক এর সাথেই যেটা, আমি একটা রেস্টুরেন্টে মাঝেমধ্যেই যাতায়াত করি। পুজো কিংবা অনুষ্ঠান পারপাসে ওই রেস্টুরেন্টে গেলেই আমি ভেজ পোলা অর্ডার করি। আর ওরা খুব সুন্দর ভেজ পোলাও বানায়। তাই এ কারণে ও আমার ভীষণ খেতে ইচ্ছা করছিল। তবে ভেজ পোলাও করতে জিনিসপত্র বেশ ভালই লাগে। বিশেষ করে সবজি তো লাগবেই।
লিংক
প্রতিবারের মতো এবারেও চেষ্টা করেছি একটা ভিডিও আপনাদের সাথে শেয়ার করার। তাই রান্না করতে করতে ভিডিও তৈরি করে ফেলেছি। অবসর সময় বসে এডিটিং তাও সেরে ফেলেছি। একেবারে বুঝতে না পারলে ভিডিওটা একবার অবশ্যই দেখবেন। পুরোপুরি দেখে নিলে আপনাদেরও করতে সুবিধা হবে।। চলুন তাহলে ভিডিওটা একবার দেখে নেওয়া যাক।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আলু | দুটো |
২ | নুন | পরিমাণ মতো |
৩ | হলুদ | পরিমাণ মত |
৪ | ক্যাপসিকাম | হাফ |
৫ | গাজর | ১টা |
৬ | কাঁচা লঙ্কা | সাতটা |
৭ | আদা | দেড় চামচ কুচি করে |
৮ | সাদা তেল | পরিমাণ মতো |
৯ | কাজু কিসমিস | পরিমাণ মত |
১০ | ঘি | এক চামচ |
১১ | তেজপাতা | দুটো |
১২ | পনির | ৩০গ্রাম |
১৩ | গোটা গরম মসলা | পরিমাণ মতো |
১৪ | পেঁয়াজ কুচি | একটা |
১৫ | গোলমরিচের গুঁড়ো | হাফ চামচ |
১৬ | জিরের গুঁড়ো | হাফ চামচ |
১৭ | দই | চার চামচ |
১৮ | চাল | ৫০০ গ্রাম |
১৯ | চিনি | পরিমাণ মতো |
২০ | জল | পরিমাণ মতো |
এবার চলুন শুরু করা যাক রান্না করা। পরপর ধাপে ধাপে আপনারা দেখতে থাকুন কিভাবে ভেজ পোলাও তৈরি হচ্ছে।
প্রথম ধাপ
প্রথমেই আমি যে সবজিগুলো কাটাকাটি করতে হবে সেগুলো করে নিয়েছি। এ সমস্ত পরিমাণগুলো উপকরণের লিস্টে দেওয়া আছে।
দ্বিতীয় ধাপ
এবার আমি কড়াইয়ে অল্প সাদা তেল দিয়ে কাজু কিসমিস গুলোকে হালকা হালকা করে ভেজে নেব। তারপর তুলে রাখবো। কাজু কিসমিসের পরিমাণ আপনাদের পছন্দমত। আমি এখানে এক কাপ মত কাজু কিসমিস দিয়েছি।
তৃতীয় ধাপ
সেম প্রসেসে ওই তেলের মধ্যেই হলুদ আর নুন দিয়ে মাখিয়ে রাখা ছোট ছোট পনিরের পিসগুলোকে ভেজে নিচ্ছি হালকা হালকা করে। তারপর সেগুলোও তুলে রাখবো।
চতুর্থ ধাপ
এবার ওই সাদা তেলের মধ্যে ওই একই কড়াইয়ে দিয়ে দেবো এক চামচ মত ঘি । এরপর আমি গোটা গরম মসলা এবং তেজপাতা দেব। গ্যাসের ফ্লেম মিডিয়ামে রাখবো। হালকা নাড়াচাড়া করার পর দিয়ে দেবো আদা কুচি এবং কাঁচা লঙ্কা। সেগুলো ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নেব। তারপর আস্তে আস্তে দিয়ে দেব পিঁয়াজ কুচি এবং বাকি সবজি গুলো।
পঞ্চম ধাপ
এবার সবজি গুলোর মধ্যে দিয়ে দেবো পরিমাণ মতন হলুদ এবং লবণ। সাথেই দেবো জিরের গুড়ো এবং গোলমরিচের গুঁড়ো। ভালোভাবে সবকিছু সাথে মিশিয়ে নেব। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবো।
ষষ্ঠ ধাপ
প্রায় পাঁচ সাত মিনিট পর ঢাকনা খুলে সামান্য জল দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবো। সবজিগুলো বেশ সিদ্ধ হয়ে যাবে। আমি এক কাপ মত জল দিয়েছিলাম।
সপ্তম ধাপ
প্রায় দশ মিনিট পরে ঢাকনা খুলে দেখা যাবে যে সবকিছুর জল শুকিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে নাড়াচাড়া করে দিয়ে দেবো এতে চার চামচ মত দই। দই দিলে পোলাও এর টেস্ট খুব ভালো হয়।
অষ্টম ধাপ
এবার আপনারা চাল দিয়ে দেবেন। আমি এখানে আমার প্রত্যেক দিনের ভাত রান্না করতে যে চাল ব্যবহার করা হয় সেই চাল ব্যবহার করেছি। সাধারণত পোলাও রান্না করতে বাসমতি চাল ব্যবহার করা হয়। অথবা গোবিন্দ ভোগ চাল ব্যবহার করা হয় । তবে বাড়িতে যা আছে তাই দিয়েই আমি পোলাও বানানোর চেষ্টা করেছি। এ কারণেই আমি ভাতের চাল ব্যবহার করেছি। তবে বিশ্বাস করবেন না ভেজ পোলাও রেডি হয়ে যাওয়ার পর দুর্দান্ত খেতে লাগছিল। একবারের জন্যও মনে হয়নি এটা অন্য কোন চাল দিয়ে তৈরি হয়েছে।
চাল দেওয়ার পর ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিয়ে দিতে হবে জল। আর আমরা যেমন ভাত সিদ্ধ করি ব্যাপারটা সেরকমই হবে। এর সাথে দিয়ে দিতে হবে চিনি এবং কাজু কিসমিস। পোলাও সাধারণত মিষ্টি হয়। মিষ্টি একেবারেই আপনাদের পছন্দমত আপনারা দিতে পারেন।তারপর ঢেকে রাখতে হবে।
নবম ধাপ
প্রায় ১৫ মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখার পর, ঢাকনা খুলে দেখবেন জলটা বেশ শুকিয়ে আসছে, ওই মুহূর্তে আর ঢাকনা দেবেন না নাড়াচাড়া করতে থাকবেন।। যদি জল লাগে ওই মুহূর্তে জল দেবেন। এভাবেই কিছুক্ষণ রাখার পর ভাতগুলো সিদ্ধ হয়ে গেলে তৈরি হয়ে যাবে পোলাও।
রেডি
হয়তো উপকরণ গুলো অনেক বেশি মনে হচ্ছে, যেহেতু এটা ভেজ পোলাও। কিন্তু খেতে খুবই সুস্বাদু হয়। এভাবেই বানালে তৈরি হয়ে যাবে ভেজ পোলাও।
আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। ভেজ পোলাও আমার মতন করে বাড়িতে বানিয়ে একবার দেখুন। আপনারা আপনাদের পছন্দমত সবজি এড করতে পারেন। শীতকালে মটরশুটি এবং ফুলকপিও এড করা যায়। সাথে ধনে পাতাও দিলে ভালো হয়। আজকে এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন।
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 4/8) Get profit votes with @tipU :)
এক কথায় অসাধারণ একটা রেসিপি। আমার মনে হয় এই খাবারটা যেমন সুস্বাদু হয়েছে ঠিক তার পাশাপাশি রয়েছে অনেক বেশি পুষ্টি গুনাগুন যেহেতু অনেক ধরনের সবজি দেওয়া হয়েছে। তাই এটা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটা রেসিপি হয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।