শুভ বিজয়া
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। পুজো এল এল করে, চলেও গেল। কি তাড়াতাড়ি সময় চলে যায়। চোখে নাগালের বাইরে সবকিছু হতে থাকে। কোন কিছুকেই আটকে রাখার মত ক্ষমতা আমাদের নেই। তাও আমরা মায়ার জালে বন্দি। আমাদের মায়া মমতায় দুঃখ লাগে। কষ্ট হয় মা চলে গেলে।
বাঙালি সবথেকে বড় পুজো দুর্গাপুজো। সারা বছর বাঙালি এই একটি পুজোর জন্য অপেক্ষায় থাকে। পুজোর দিনগুলোতে চারিদিকে হৈ হৈ। আর সবশেষে মা সকলের চোখের জল দিয়ে বিদায় নেন।
দশমীর দিনে বাঙালির ঘরে ঘরে মেয়েরা বউরা মাকে শেষ বিদায় জানাতে হাজির হয় পুজোর জায়গায়। মাকে বরণ করার জন্য নিয়ে যায় পান পাতা, সুপারি, জল, মিষ্টি, সিঁদুর, আরো কত কিছু।
বাঙালি বউরা মায়ের সিঁদুর দিয়ে বরণ করে বাকি সকল বিবাহিত মহিলাদের সাথে সিঁদুর খেলে। বিজয়া যেমন দুঃখের। তেমনি বিজয়া হল শুভ জয়যাত্রা। বিজয়ার দিন থেকেই শুভ কাজের সূচনা ধরা হয়। দশমীর দিন ছোট থেকেই বই খাতা খুলে লিখতে বসতাম - " শ্রী শ্রী দুর্গা সহায় "। এটা যে কেন লিখতে হয় তা আমি জানিনা। তবে ছোট থেকেই মা আমাকে এটা শিখিয়েছে। মা বলে দশমীর দিন সমস্ত কাজ করতে। পড়াশোনা আবার শুরু করতে, সাথে নিজের যে কাজগুলো শুরু করার কথা সেগুলোও সেদিনকেই অর্থাৎ সেই শুভদিনে শুরু করতে।
মা দুর্গা আর বাকি সাধারণ ঘরের মেয়েদের মতন বাপের বাড়ি থেকে আবার শ্বশুরবাড়ি যাত্রা করে। সবকিছু আবার শান্ত হয়ে যায়। আবার এক বছরের অপেক্ষায় থাকি গোটা বাঙালি।
আমি কোন বার সিঁদুর খেলার সময় অর্থাৎ দশমীর দিন মায়ের বিসর্জনের আগে যাইনি। শুধুমাত্র জগদ্ধাত্রী পুজোয় দশমী পূজার পর সিঁদুর খেলা করেছি। দুর্গাপূজা যেহেতু এখানে ধুমধাম করে হয় না তাই আমি সেরকম ভাবে বেশি মাতামাতি করি না।।
কিন্তু এবারে আমার মা সকাল থেকে রান্না করে যখন রেডি হতে শুরু করল তখনও বুঝে উঠতে পারিনি যে আমাকে যেতে হবে। পাশের বাড়ির কাকিমা এবং আমার মা মিলে প্রতি বছর একসাথে সিঁদুর খেলতে যায় আমাদের পাশের বারোয়ারিতে।
তখন প্রায় দুপুর বারোটা বাজে। মা এবং কাকি মা আবদারে আমিও তৈরি হতে লাগলাম। সাথে ছিল মৌসুমী বৌদি। বৌদি ও যাবে না ঠিক করেছিল। সবাই মিলে যখন যাওয়া হচ্ছে তাই সেও রাজি হয়ে গেল। তারপর আমি আর বৌদি সাজুগুজু করে নিলাম।
আমার কথা হলো এটাই যে যখন যাব ঠিকঠাকভাবেই যাব। তাই খুব শখ করে শাড়ি পরলাম। আমার কাকিমা আমাকে হেল্প করল শাড়ি পড়তে। আমাদের জ্বালায় কাকিমা এবং মায়ের দেরি হয়ে গেল। ওখানে যাওয়ার পর অনেক অনেক ছবি তুললাম। মা দুর্গাকে কাকীমা এবং মা মিলে বরণ করে নিল। সাথে অন্যান্যরা মাকে বরণ করে নিচ্ছিল। এগুলো সমস্ত দেখছিলাম।
বাড়ি ফিরে আসার পর বিকেলের পর থেকে সকলকে বিজয়ার প্রণাম জানাতে শুরু করলাম। আর এভাবেই বিজয়া দশমীর দিন সুন্দরভাবে কাটলো।
বিজয়ার আগের দিন শাক্ত পদাবলীর একটি লাইন খুব চোখে ভাসছিল। কবি কমলাকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন -
নবমী নিশি পোহাল, কি করি, কি করি বল।
ছেড়ে যাবে প্রাণের উমা, দেখ না বিজয়া এল।
মা মেনকা হিমালয় কে অর্থাৎ দুর্গার বাবাকে ডেকে জানাচ্ছিলেন যে নবমীর রাত্রি শেষ হতেই চলছে, এরপর এই দশমী শুরু। আবারো মা দুর্গা কে অর্থাৎ উমাকে ফিরে যেতে হবে কৈলাসে।
আজকে এখানেই শেষ করলাম, আপনাদের সকলের সাথে বিজয়ার ছবিগুলি শেয়ার করতে পেরে আমার নিজেরও খুব ভালো লাগলো। সকলে ভালো থাকুন। মা আপনাদের সকলের মঙ্গল করুক।
তোমাকেও জানাই শুভ বিজয়া দশমীর অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দশমীর দিন টা আমাদের খুব ভালো করেই কেটেছে। এ বছরে সকলের সাথে দশমী কাটাতে পেরে আমারও খুব ভালো লেগেছে।
জয় মাতা দি @isha.ish , আপনার জায়গায় দূর্গা পূজার সুন্দর ছবি দেখে মনে হচ্ছে আপনি এই উত্সবটি পুরো উত্সাহ এবং উত্সাহের সাথে উদযাপন করেছেন। এবার আমার গ্রামের দুর্গাপূজায় যেতে পারলাম না বলে আফসোস করছি। আপনার পোস্টে এত সুন্দর ছবি দেখে খুশি হলাম।