হঠাৎ করেই নার্সারী

in Incredible India10 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আমি আজকে আপনাদের সাথে আমার একটা ভালো লাগার জায়গার কথা শেয়ার করব। আমার কাছে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক কিছু রয়েছে। জমিয়ে জমিয়ে একদম গ্যালারি ভর্তি করে রেখেছে ছবি দিয়ে। সেই সব ছবি এক এক করে পোষ্টের মাধ্যমে শেয়ার করার ইচ্ছা আছে। তাই আজকে কিছুটা অংশ নিয়ে চলে আসলাম।

1000138821.jpg

আমি এর আগেও অনেকবার আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি যে আমার গাছ কতটা পছন্দের। সব থেকে বেশি গাছ ভালবাসে আমার মা। আমার মা ভীষণ পরিমাণে গার্ডেনিং করে। শীতকালের দিকে ছাড়া বাড়িতে খালি ফুল আর ফুল।

1000138809.jpg

1000138812.jpg

বাবা তাই মাঝে মধ্যে রাগারাগি করে বলে, ফুল না লাগিয়ে যদি কিছু সবজি বা ফলের গাছ লাগাতে একটু খেতে পারতাম। তবে আমাদের বাড়িতে কিছু কিছু ফলের গাছও আছে। যেমন ধরুন ব্ল্যাকবেরি, পেঁপে, আম, ড্রাগেন ফ্রুট। তবে বাড়ির সামনে যদি আরো জায়গা থাকতো অনেক কিছু লাগানো যেত। তাই ছোট থেকেই মায়ের দেখাদেখি আমারও গাছের প্রতি বেশ আবেগ রয়েছে।

1000138818.jpg

কিছুদিন আগেই মনটা খুব খারাপ লাগছিল। নানান কিছু নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। এই মুহূর্তে আমার এক জেঠুর মেয়ে আমাকে ফোন করে। ও আমার থেকে বড়। তাই আমি ওকে দিদি বলে ডাকি। দিদি আমাকে গল্প করতে করতে হঠাৎ বলে চল আমরা কোথাও ঘুরে আসি।

1000138824.jpg

1000138827.jpg

আমি প্রথমে বললাম এই গরমে রোদের মধ্যে কোথায় ঘুরতে যাবি। কিন্তু সে তো বলা মাত্রই ডিসিশন নিয়ে নেয়, যে আমি যাই আর না যাই সে তো বেরোবেই। এর সাথেই আমাকে বারবার জেদ করতে থাকে ,চল অনেকদিন ঘুরে আসিনি একসাথে, আজকে ঘুরে আসি।

1000138830.jpg

1000138833.jpg

আমার সত্যি বলতে গরমের মধ্যে কোথাও ঘুরতে ভালো লাগে না। যদি কাজ থাকে তবেই বেরোই। না হলে বিকেলবেলা থেকে বেরোনোর কথা ভাবি। রোদের মধ্যে ঘোরা আমার একদম পছন্দ নয়। তবুও এতদিন পরে দিদি আমার সাথে ঘুরতে বেরোতে চাইছিল বলে ওকে আর না বলতে পারলাম না। তাই রাজি হয়ে গেলাম। এদিকে দিদি সাথে সাথে আমাদের চেনাশোনা একটা টোটো কাকুকে বলে দিল। টোটো কাকু মানে যে কাকু টোটো চালায়। এই কাকু আমাদের পরিচিত ।আমাদের পাড়াতেই বাড়ি। সেও রাজি হয়ে গেল।

1000138836.jpg

1000138839.jpg

কিন্তু ঘটনা হলো আমরা যাচ্ছি কোথায়। আমরা দুজন রেডি হয়ে টোটো তে বসলাম। টোটো কাকু জিজ্ঞেস করল তোমরা কোথায় যাবে বল, দিদি উত্তর দিল তোমার যেখানে ইচ্ছা সেখানে নিয়ে চলো। কি এক কান্ড। দিদিকে দেখে আমি একটু ভয় ভয় পাই। কারণ ও বেশ রাগী আছে। আর ও খুব মুডি। এদিক থেকে ওদিক হয়ে গেলে যদি রাগ করে যায়। তাই আমিও বললাম ঠিক আছে তোমার যেখানে ইচ্ছা সেখানেই নিয়ে চলো।

1000138845.jpg

টোটো কাকু আমাদের নিয়ে মার্কেটের মধ্যে দিয়ে ঘুরতে লাগলো। ঘুরতে ঘুরতে টোটো কাকু বারে বারে জিজ্ঞেস করে ,এবার তো বলো কোথায় যাবে। আমাদের মাথায় কিছুই আসছিল না। আমরা খালি বলছিলাম তুমি চলতে তো থাকো। আসলে আমরা টোটো কাকুকে প্রায় দু ঘন্টার জন্য ভাড়া করে নিয়েছিলাম। এরকম পাগলামি আমরা মাঝেমধ্যেই করে থাকি। আমার এরকম ধরনের পাগলামি আমার পাশের বাড়ির মৌসুমী দিদি মানে মৌসুমী বৌদি অনেক জানে।

1000138857.jpg

1000138860.jpg

অবশেষে দুজন গল্প করতে করতে ঠিক করলাম যে আমাদের নার্সারি যাওয়া উচিত। নার্সারি যেতে সব থেকে বেশি ভালো লাগে আমাদের। তবে আমরা শীতকালের দিকে নার্সারি যাই। আমার মনে আছে প্রায় ৩-৪ বছর আগেও আমি দিদি স্কুটি করে শীতকালে যখন তখন নার্সারি চলে যেতাম। আমাদের কৃষ্ণনগরে অনেকগুলো নার্সারি রয়েছে। আমরা সেই সমস্ত নার্সারি ঘুরে ঘুরে দেখতাম।

1000138863.jpg

আপাতত দুজনার কাজের চাপ। তাই সেভাবে আর বেরোনো হয় না। তাই আমরা ঠিক করলাম আজকে নার্সারি যাওয়া যাক। পৌঁছে গেলাম আমাদের পছন্দের নদীয়া নার্সারিতে। কৃষ্ণনগর শহরের মধ্যে এবং আশেপাশের এলাকার মধ্যেও এই নার্সারি সবথেকে বড়। এই নার্সারি এতটা বড় এলাকা জুড়ে রয়েছে যে সমস্ত গাছ দেখে শেষ করা যাবে না। প্রথমে ঢুকেই নার্সারীর সবুজ সবুজ রং দেখে চোখটা জুড়িয়ে গেল। মা বলে সবুজের দিকে তাকালে চোখের খুব উপকার হয়।

1000138851.jpg

চোখের উপকার হয় কিনা জানিনা তবে সবুজ দেখলে আমি মন থেকে খুব শান্তি পাই। ছোট ছোট গাছগুলোকে দেখতে দেখতে গাছের নামগুলো জিজ্ঞেস করতে লাগলাম ওখানে যারা কাজ করছিলেন। তারপর আরো নার্সারির ভেতরে ঢুকে গেলাম। নার্সারীর একটা জায়গায় ইনডোর প্ল্যান্টের জন্য আলাদা করে ঘর করা আছে। পুরো নার্সারীর মধ্যে আমার ওই জায়গাটা সবথেকে পছন্দের। কারন আমি ইনডোর প্লান্ট খুব পছন্দ করি।

1000138866.jpg

সেখানে গিয়ে আমার আরো ভালো লাগলো। আমি ঘুরতে ঘুরতে অনেকগুলো ছবি তুললাম। আর সেই ছবিগুলোই আপনাদের সাথে এই লিখতে লিখতে শেয়ার করছি।। ঘোরাঘুরি শেষে বুঝতে পারলাম যে আপাতত কোন গাছ কেনার নেই। কারণ আর কিছুকাল পরে যখন শীত আসবে তখন সমস্ত রকম শীতের ফুলের গাছ কিনব। কিন্তু দিদির হঠাৎ করে টেবিল কামিনী গাছটা পছন্দ হয়ে গেল।। এই গাছটা আমার বাড়িতে রয়েছে বলে আমি গাছটা নিলাম না।

1000138815.jpg

অবশেষে দিদি শুধুমাত্র ওই একটা গাছ কিনলো ৫০ টাকা দিয়ে। আর তারপর আমরা আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। দুজন মিলে টোটো করে ঘুরতে ঘুরতে খুব বকবক করেছি। টোটো কাকু কেউ পাগল করে দিয়েছি। তারপর নার্সারিতে এসে দুজনই খুব শান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফেরার সময় আমরা কিছু খাবার দাবার কিনে নিলাম।

1000138848.jpg

1000138842.jpg

এই নার্সারীর ছবিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার খুব ইচ্ছা ছিল। আমিও চাই আপনারা প্রচুর পরিমাণে সবুজ দেখুন। আসলেই গাছ আমাদের দরকার। গাছ ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারবো না। তাই পোস্টের শেষে একটা কথাই বলতে চাই, পৃথিবীতে যতটা পারবেন গাছ লাগিয়ে যাবেন। গাছের থেকে শান্তি হয়তো আর কেউ এই পৃথিবীতে আপনাকে দিতে পারবে না।

আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকুন ।সুস্থ থাকুন।

Sort:  
Loading...
 10 days ago 

তোমার সাথে থাকতে থাকতে আমিও নার্সারি যাওয়া শিখেছি। নার্সারি থেকে গাছ কিনতে আমারও খুব ভালো লাগে। আমিও এখন অনেক পরিমানে গাছ লাগানোর চেষ্টা করি। নার্সারিতে এর আগে তোমার সাথে অনেকবারই গিয়েছি। যাই হোক অনেকদিন তোমার সাথে নার্সারিতে যাওয়া হয়নি, শীত পড়ার আগেই আবার আমরা দুজনে নার্সারিতে গাছ কিনতে যাব।

 9 days ago 

নার্সারিতে বিভিন্ন প্রকারের গাছ পাওয়া যায়, আপনি এবং আপনার মা গাছকে ভালবাসেন শুনে ভালো লাগলো, আমাদের সকলের নার্সারিতে যাওয়া প্রয়োজন এবং সেখান থেকে বিভিন্ন গাছ সংগ্রহ করে নিজের বাড়ির আঙিনায় লাগানো প্রয়োজন, নার্সারির ছবিগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো, সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে আপনি সেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 4 days ago 

আপনার পোস্টটি পড়তে খুব ভালো লাগল! নার্সারি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, দিদির সঙ্গে সময় কাটানো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। সবুজের মধ্যে থাকা এবং গাছের সৌন্দর্য উপভোগ করার মজা সত্যিই অসাধারণ। আপনার শেষের কথাটি একদম সঠিক—গাছ আমাদের জীবনকে সুন্দর ও সুস্থ রাখে।আপনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ! আশা করি, ভবিষ্যতে আরো সুন্দর অভিজ্ঞতা ও ছবি শেয়ার করবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 66181.33
ETH 2700.56
USDT 1.00
SBD 2.88