খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি আজকে কেন যেনো সূর্যের আলো ফুটছে না।সাড়ে ছটার দিকেও যখন বেশ অন্ধকার তখন বুঝলাম আসলে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করলাম।কিন্তু বৃষ্টি আজকে ফাঁকি দিয়ে রোদ উঠে গেল।
তবে খবর পেলাম অন্যান্য দিকে বেশ ভাল পরিমানে বৃষ্টি হয়েছে।যাই হোক আটটার দিকে ছেলেকে নিয়ে স্কুলের দিকে রওনা হলাম। ইদানিং রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম পড়ে।ঈদের আগে বলে কিনা জানিনা তবে প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।আজকেও তার ব্যাতিক্রম হলো না।যদিও রোদ উঠেছে তবে গরমটা কমে গেছে। আশেপাশে বৃষ্টি হওয়াতে ঠান্ডা বাতাস বইছে।তাই ভাবলাম আজকে হাঁটতে যাওয়া যায়।
প্রথমে ক্যান্টিনে যেয়ে হাত ধুয়ে নাস্তা করে নিলাম।এরপর বান্ধবী নার্গিসের সাথে হাঁটতে বের হলাম। আবহাওয়াটা ভালো,গরম নেই এবং বাতাসও আছে।এদিকে ছোট ছোট চড়ুই পাখি গুলো খুব কলকলিয়ে ঘুরছিল। বারবার ছবি তোলার চেষ্টা করছিলাম।কিন্তু ক্যামেরা তে চড়ুই পাখি গুলো দেখা যাচ্ছে না।
হাঁটা শেষ করে আবার ক্যান্টিনে চলে আসলাম।যেহেতু আর দুদিন ক্লাস হয়ে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে তাই উপস্থিতিটা বেশি।এক বান্ধবী পেঁয়াজু বানিয়ে এনেছে।আমি তার ধৈর্য দেখে অবাক হলাম।এতো ছোট ছোট পিয়াজু বানাতে যথেষ্ট সময় লাগে। অথচ সে ভোরবেলা উঠে পেঁয়াজু গুলো বানিয়েছে।বললাম তাকে যে এতো ছোট করে কেন বানালে? সে বলল তারা এত ছোট করেই বানায়।যাই হোক সবাই মিলে পেঁয়াজু খেলাম।বান্ধবীরা সবাই দুধ চা খেলো।তবে আমি রং চা খেয়েছি।
বারোটার দিকে কেয়ার গিভার ফোন দিয়ে বললো যে স্কুলের হলে আমার ছেলেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এবং ওখান থেকেই ছুটি হবে।বের হয়ে দেখলাম আমার ছেলে আজকে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে গাছ উপহার পেয়েছে।ছবি দুটি কেয়ারকিভারের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে নেওয়া।
ড্রয়িং পুরস্কার প্রতিযোগিতায় গতদিন আমার ছেলের টিয়া পাখি এঁকেছিল।ছেলের পুরষ্কার প্রাপ্তিতে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত।ও নিয়মিতই ড্রয়িং এ পুরস্কার পায়।আমার মেয়েও চিত্রাঙ্কনে পুরস্কার পেতো।কিন্তু বর্তমানে সময়ের অভাবে সে আঁকাআঁকি করতে পারে না।
ছেলের স্কুল থেকে মেয়ের কলেজে গেলাম।যেয়ে দেখি সে মেলা থেকে ছোট ছোট দুটি ক্যানভাস কিনেছে চিত্রাঙ্কন করার জন্য।এগুলো দেখে আমি হাসলাম।এদিকে বলছিল যে ওর টাকা সব শেষ হয়ে গিয়েছে বান্ধবীদেরকে খাওয়াতে গিয়ে।ওর কলেজে আজকে মেলা বসেছিল।মেলায় অনেক ধরনের খাবার ছিল। বান্ধবীরা মিলে খেতে গিয়েছে কিন্তু কারো কাছে টাকা নেই। অবশেষে আমার মেয়ে সবার টাকা পরিশোধ করলো।আমি শুনে ভাবছিলাম এই যে সামাজিকতা সে শিখেছে এটা অনেক বড় একটি ব্যাপার।
পৌনে দুইটার দিকে বাসায় এসে দেখি আমার রুমের টিউব লাইটে খুলে ঝুলে রয়েছে। আমার মনে হয় ঘরে জ্বিন-ভুতের আবির্ভাব হয়েছে।তাই একটার পর একটা জিনিস শুধু নষ্টই হচ্ছে।আমি ঠিক করে সারি না আবার জিনিস নষ্ট হয়ে যায়।কি আর করা!!!
গোসল করে নামাজ পড়ে নিলাম।এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।খাবার খেয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেস্টে ছিলাম।এরপর বিকেলের রান্নার সব জিনিস গুছিয়ে নিলাম।সন্ধ্যার দিকে ক্ষুধা লাগলে লিচু খেলাম।এখনকার লিচুগুলো স্বাদে অত্যন্ত ভালো।আসলে বাজারে বোম্বাই লিচু চলে এসেছে।এই সময় লিচু না খেলে আর ভালো লিচু পাওয়া যাবে না।
অতঃপর ঘরের কাজ গুছিয়ে নিলাম।আমার ছেলে আজ ফুলকপির পাকোড়া ছাড়া ভাত খাবে না।তাই ওর জন্য আজ দু'বেলায় ফুলকপির পাকোড়া বানাতে হলো। এদিকে সন্ধ্যায় কিচেন হুড মিস্ত্রি ফোন দিল যে সে আজকে কাজ করতে আসবে।আসতে বললাম তাকে।ছেলেটি আমার ব্লেন্ডারটা ও ঠিক করে আনলো।যাক আরেকটি ঝামেলা থেকে বাঁচলাম।কিচেন হুডের কাজ শেষ করে মিস্ত্রি যখন বললো যে বাসার যে কোন ইলেকট্রিক যন্ত্র নষ্ট হলে আমাকে বলবেন। আমি সব কাজ পারি।
আমি বললাম তাহলে আমার লাইটটা ঠিক করে দিয়ে যাও।চটজলদি সে ঠিক করে দিল।আমিও দুশ্চিন্তা থেকে বাঁচলাম কারণ ছোট্ট এই কাজের জন্য আবার আমাকে মিস্ত্রী আনতে হতো।এরকমই ব্যস্ততার মাঝে আজকের দিনটি পার করলাম।ভালো থাকবেন সবাই।
.
Device | Name |
Android | vivo v19 |
Camera | triple camera 48mp+8mp |
Location | Bangladesh 🇧🇩 |
Shot by | @hasnahena |
![JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xyWsw1kHnXVkn7Qp6hme6bwxmeXAsiaziMYqPesnvAxBKoZxpvAxoJGLfGnEUeMr1gEv2DbujLXro4ihMK4nci7VnRSHt.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZnSpLz8dhMCaFkH7ozKhPk5rY7E69YD3vUKjpQrprvZt/JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xyWsw1kHnXVkn7Qp6hme6bwxmeXAsiaziMYqPesnvAxBKoZxpvAxoJGLfGnEUeMr1gEv2DbujLXro4ihMK4nci7VnRSHt.png)
◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার
উপহার পেতে আমরা সবাই পছন্দ করি তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি আনন্দ দেয়। যেটা আপনার ছেলেকে দেখে বোঝা যাচ্ছিলো।
এই প্রতিযোগিতা টা দেখে আমি ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম ।আমি যখন গার্লস স্কুলে পড়তাম ওখানে এরকম প্রতিযোগিতা হতো, দিনগুলো মনে পড়লে মনে হয় ওই দিনগুলোতে আবার
ফিরে যাই।।
মাঝে মাঝে এমন হয় ঘরের একটা জিনিস নষ্ট হলে সাথে সাথে বাকি জিনিসটা নষ্ট হওয়া শুরু করে, আর আমি তো মাঝেমধ্যে ইচ্ছা করে ঠিক করি না। যাইহোক আপনার দিনটি শুভ হোক সে প্রার্থনা করছি।
অনেক সময় এমনই হয়, আকাশের পরিস্থিতি দেখে মনে হয় প্রচুর বৃষ্টি নামবে তবে শেষ পর্যন্ত সেটা হয় না। হয়ত ঈদের সময় সবাই বাড়িতে ফিরছে এবং কেনাকাটার জন্য বাইরে বেরিয়েছে এজন্য রাস্তায় অনেক বেশি জ্যাম আর জ্যামে বসে থাকা সত্যি খুব বিরক্তিকর।
লিচুগুলোর কালার তো বেশ চমৎকার। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন।