হয়তো তোমার আর দেখা পাবো না।😔
"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......
আদি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সে রাজনীতিতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে আছে। তার বাবার দেশের বড় একজন নেতা। সে তার বাবার রাজনৈতিক কাজে সবসময় সহযোগিতা করে। হঠাৎ একদিন তার বাবার সাথে কথা কাটাকাটি করে বাড়ি ফেরে না সেদিন। সে তাদের বাগানবাড়িতে যায়। বাগানবাড়িতে যাওয়ার সময় রাস্তার একটি দোকান থেকে কিছু খাবার কিনে নিয়ে যায়।
বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে, খাবার খেয়ে নিলো। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সে তার রুমে চলে যায়। সে তার ফোনের চার্জারও সাথে করে আনেনি। যার কারণে ফোনে চার্জ না থাকায় ফোন বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে তার পরিবারের কেউই তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। সে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর বেলকনিতে বসে তার পছন্দের একটি বই পড়তে লাগলো।
রাত তখন সাড়ে বারোটা। হঠাৎ তার ঘরের দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো। ব্যালকনি থেকে উঠে দরজা খুলতে যায়। দরজা খুলে সে অনেকটা ঘাবড়ে গেল। কারণ তার দরজার ওপাশে ছিল বিপরীত দলের লোকজন অস্ত্র হতে। আসলে সেদিন তাদের বাবা তাকে বকাবকি করেছিল কারণ আদি বিপরীত দলের লোকজনদের সাথে ঝামেলা করেছিল। এজন্য তারা এতো রাতে প্রতিশোধ নিতে এসেছে। দরজা খোলার সাথে সাথেই বিপরীত দলের লোকেরা বন্ধুক বের করে গুলি করে দিলো আদিকে। তাদের গুলিতে আদি সেখানেই লুটিয়ে পড়ে। তার কিছুক্ষণ পরে সেখানেই মারা যায়।
বাগান বাড়ির কেয়ারটেকার দেরি না করে তৎক্ষণাৎ আদির বাবাকে ফোন করে ঘটনাটা জানায়। আদির বাবা তার ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে বাগান বাড়িতে যায়। আদির ঘরে গিয়ে আদিকে ঐভাবে পড়ে দেখে খুব ভয় পেয়ে যায় তার বাবা। সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। সে আদির মাকে কি জবাব দিবে। আদির ছোট ভাই তৎক্ষণাৎ পুলিশে ফোন করে। পুলিশ এসে আদি লাশকে হসপিটালে পাঠিয়ে দেয় ফরেনসিক রিপোর্ট করানোর জন্য।
পরের দিন সকালে হসপিটাল থেকে আদির লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের বাড়ি জুড়ে যেন শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আদি চলে যাওয়ার পর পুরো বাড়ি যেন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গেছে। আদির মা তো কোনোভাবেই এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছে না। সে কিছুক্ষণ পরপরই জ্ঞান হারাচ্ছে। ছেলের শোকে সে পাগল প্রায় হয়ে গেছে। ছেলে হারানোর বেদনা তিনি সহ্যই করতে পারছে না।
অন্যদিকে মাত্র দু'মাস আগে আদি তার ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ে করে বাড়িতে এনেছিল। আদ্রিতা আদিকে হারিয়ে কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। কারো সাথে সে কথা বলছে না। দুদিন হলো অদ্রিতা নিজের ঘর থেকে বের হয়নি। সে সবসময় একা একা থাকে, আর রাত হলে গুমরে গুমরে কাঁদে। আসলে ভালোবাসার মানুষ হারালে বুঝি জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত একা একা লাগে।
আদ্রিতা আদির ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে, "জানিনা কিভাবে তোমার আর দেখা পাবো! জানিনা কিভাবে তোমাকে কাছে পাবো! শুধু এটুকুই জানি, এই অবুঝ মনটা অনেক মিস করে তোমায়!".......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কাহিনিটি খুবই হৃদয়বিদারক ও দুঃখজনক। আদির অকাল মৃত্যু এবং তার ভালোবাসার মানুষের শোক অত্যন্ত মর্মস্পর্শী। গল্পের মধ্যে ভালোবাসার গভীরতা, ক্ষতির বেদনা এবং শোকের প্রকাশ যথার্থভাবে ফুটে উঠেছে। আদ্রিতার কষ্টের অনুভূতি সত্যিই সকল হৃদয়ে দাগ রেখে যায়। আপনার গল্পটি গভীর ভাবনায় এবং অনুভূতির গভীরতাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালোবাসার মানুষটি হারিয়ে গেলে তার যে বেদনা সেই বেদনা শুধু যার হারিয়েছে সেই বোঝে। ভালোবাসা সত্যি অনেক নির্মম। সত্যি কারের ভালোবাসা মানুষকে পাগল প্রায় করে দেয়। আমি মনে করি, আদির অকাল মৃত্যুর এক মাত্র কারণ হলো রাজনৈতিক কারণ।
ভালো থাকবেন আপু।
রাজনৈতিক ফ্যামিলি গুলোর মধ্যে এটাই সবচাইতে বড় সমস্যা এক দলের সাথে অন্য দলের সমস্যা থাকলেই তারা একা পেলে সেই মানুষটাকে খুন করে যেটা আদির ক্ষেত্রে হয়েছিল তবে সে তার ভালোবাসার মানুষকে কোন কিছুই বলতে পারল না এমন একটা জায়গায় মারা গেল যেখানে তার প্রিয় মানুষ বলতে কেউ ছিল না তাই আমি মনে করি রাজনৈতিক জীবন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়াটা অনেক বেশি ভালো হয়তো বা কষ্ট হবে চলাফেরা করতে তবে আপনি আপনার পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারবেন।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ে এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। আমি আপনার সাথে একমত রাজনৈতিক পরিবারের সবথেকে বড় সমস্যা হলো এক দলের সথে অন্য দলের বিরোধিতা। তাদের এই বিরোধিতার জন্য আদির মতন এমন অনেক মানুষ মারা যায়। এরকম অকাল মৃত্যুর কারণে ভালোবাসা গুলো পূর্ণতা পেয়েও শেষমেষ অপূর্ণই থেকে যায়। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতিতে না জড়ানো।
ভালো থাকবেন আপু আপনি।