বেহেস্তবাসীদের বিবাহ শাদী
বেহেস্তবাসী প্রত্যেক পুরুষ ৩৩ বৎসর বয়স্ক যুবক এবং প্রত্যেক স্ত্রীলোক ১৬ বৎসর বয়স্কা যুবতীতে পরিণত হইবে । তাহাদের এই বয়স আর কখনো বাড়ীবে না অর্থাৎ তাহাদের যৌবনে বা কুমারীতে কখনো ভাটা পরিবে না ।
তাহাদের প্রত্যেকের সহবাসের আনন্দও একশত গুণ বৃদ্ধি পাইবে ।
প্রত্যেক বেহেস্তবাসী পুরুষ তাহার দুনিয়ার স্ত্রীকে এবং প্রত্যেক বেহেস্তবাসীনী স্ত্রীলোক তাহার দুনিয়ার স্বামীকে বেহেস্তের মধ্যে প্রাপ্ত হইবে, যদি তাহারা সামী-স্ত্রী উভয়েই বেহেস্তবাসী হইয়া থাকে । যে সকল পুরুষের স্ত্রী বেহেস্তবাসী হইবে না তাহাদিগকে বেহেস্তে পুনরায় বিবাহ দেওয়া হইবে।
ইহা ছাড়াও প্রত্যেক বেহেস্তবাসী পুরুষ ৭২ জন করিয়া হুর পাইবেন।
দুনিয়ায় যে সকল স্ত্রীলোকের একাধিক স্বামী ছিল,তাহারা দুনিয়ায় যে স্বামীর সহিত সর্বাপেক্ষা অধিক মহব্বত ছিল,তাহাকেই প্রাপ্ত হইবে। প্রত্যেক স্বামীহীনা স্ত্রীলোকের এবং প্রত্যেক স্ত্রীহীন পুরুষের বিবাহ ফেরেস্তাদের তত্ত্বাবধানে বেহেস্তের মধ্যে সম্পন্ন হইবে । যে সকল পুরুষ ও স্ত্রিলোক দুনিয়ায় সাবালেগ ও সাবালিগা হইয়া বিবাহ হইবার পূর্বেই মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিল, বেহেস্তে ফেরেস্তাদের মাধ্যমে তাহাদেরো বিবাহ সম্পন্ন হইবে । সুতরাং বেহেস্তে খুব ধূমধামের সাথে কোটি কোটি নরনারীর শুভ বিবাহ অনুষ্টিত হইবে । সেই সব বিবাহে দাওয়াতে ওলিমারও ব্যবস্তা করা হইবে এবং মহা ধুমধামের সাথে মেহমানদারী করা হইবে ।
বেহেস্তীদের বিবাহ মজলিসে কোটি কোটি ফেরেস্তার সমাগম হইবে।নবী ও ওলীদের মজলিস হইবে এবং পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ-আলোচনা এবং পানাহার চলিবে। এইসব বিবাহ অনুষ্টানে হযরত দাউদ (আঃ) এবং হযরত ইস্রাফিল (আঃ)–এর সমবেত কন্ঠের গান, তুবা নামক বৃক্ষের অপূর্ব বাদ্য ধ্বনি এবং হুরদের নৃত্য পরিবেশন করা হইবে এবং কোটি কোটি গেলমান মেহমানদিগকে নানা প্রকারের খাদ্য ও পানীয় পরিবেশন করিয়া পরিতৃপ্ত করা হইবে ।
একটি ইসলামিক শিক্ষণীয় ঘটনা
এক ব্যক্তি স্ত্রীর বকায় অতিষ্ট হয়ে খলিফা উমর রাঃ এর কাছে আসেন নালিশ করার জন্য। খলিফার ঘরের দরজায় আসতেইতিনি শুনতে পান খলিফার স্ত্রী রাগান্নীত স্বরে খলিফাকে বকছে।শুনে ঐব্যক্তি তো হতবাক। তিনি খলিফাকে কিছু না বলে ফিরে চললেন। ইতিমধ্যে খলিফা দরজা খুলে বাইরে এলেন।ঐ ব্যাক্তিকে চলে যেতে দেখে ডাক দিলেন। জানতে চাইলেন,কেনো এসেছিলে আর কেনোইবা কিছু না বলেই চলে যাচ্ছ।.ঐব্যাক্তি বললেন,আমি এসেছিলাম স্ত্রীর ব্যাপারে নালিশ করতে কিন্তু এসে শুনলাম আপনার স্ত্রী আপনাকে আরো বেশী কথাশোনাচ্ছে।তাই ফিরে যাচ্ছিলাম।আচ্ছা আমরা পুরুষরা আপনাকে বাঘের মত ভয় করি সেখানেএকজন মহিলা আপনাকে কি করে কথা শোনায়?. হযরত উমর রাঃ বলেন,ভাই ঐমহিলার অনেক হক আছে যা আমি আদায় করতে পারিনি।তাছাড়া এই মহিলা আমার জন্য রান্না করে,ঘর-বাড়ি, কাপড় চোপর পরিস্কার করে,সন্তানদের প্রতিপালন করে, এমনি আরও অনেক অনেক কাজ যা সে করতে বাধ্য নয়।এসব কাজ করে সে আমায় এহসান করে,অতএব সে একজন পাওনাদার আর পাওনাদারের দুকথা বেশী বলার অধিকার আছে।.ঐ ব্যক্তি তখন বললো আমার স্ত্রীও তো এসব কাজ করে এবং আমিও তো তার অনেক হকই আদায় করতে পারিনি। .খলিফা হাসি মুখে বললেন,তাহলে ভাই একটু সহ্য কর।
মহিলাদের সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা নিজের স্ত্রীদেরকে সূরায়ে নূর শিক্ষা দাও কেননা আল্লাহ তায়ালা এ সুরায় স্মামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক, দায়ীত্ব ,কর্তব্য সতীত্ব ও পবিত্রতার বর্ণনা দিয়েছেন
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ হে মহিলাগণ ! জেনে রাখ স্বামীই তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম ।
রাসুলুল্লাহ (সা:) – বলেছেনঃ যে মহিলা একান্ত অসুবিধা ছাড়া তার স্বামীর নিকট তালাক চায় তারজন্য বেহেস্তের সুগন্ধি হারাম ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে মহিলা তার স্বামীর প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে তার উপর আল্লাহর লানত পতিত হয় ।
রাসলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ বেগানা পুরুষদের সামনে সাজগোজ করে হেলে দুলে চলাফেরাকারিনী মহিলারা কিয়ামতের অন্ধকারের ন্যায়, যার মধ্যে কোন আলো থাকবে না ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ঐ সমস্ত মহিলার উপর আল্লাহ তায়ালার লানত যারা পুরুষের আকৃতি গ্রহণ করে এবং ঐ সমস্ত পুরুষের উপর লানত যারা মহিলাদের আকৃতি গ্রহণ করে । অর্থাৎ মহিলেদেরকে পুরুষের লেবাস পোশাক ও চালচলন আবলম্বন করতে নিষেধ করা হয়েছে ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেয় সে আমার উম্মতের আওতাভুক্ত নয় ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তারা অর্থাৎ হিজড়ারা যেন তোমাদের ঘরে প্রবেশ না করে ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ বেগানা মহিলার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপকারী পুরুষ এবং বেগানা পুরুষের প্রতি নজর দেয় এমন মহিলা (উভয়ের) প্রতি আল্লাহ তায়ালার লানত ।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা মুসলমান মহিলাদেরকে আদেশ করেছেন তারা যখন কোন প্রয়োজনে গৃহ থেকে বের হবে, তখন মাথার উপর দিক থেকে চাদর লটকিয়ে মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলবে এবং পথ দেখার জন্য একটি চক্ষু খোলা রাখবে। (ইবনে কাসীর)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যখনই কোন পুরুষ কোন বেগানা মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত হয় তখন শয়তান তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে তাদের মধ্যে এসে উপস্তিত হয় ।
অর্থাৎ শয়তান তাদেরকে প্ররোচনা দিয়ে কুকর্মে লিপ্ত করে ।