মূত্রাশয়ে ইনফেকশন এর কারণ ও প্রতিকার
![IMG_20180723_015011.jpg](https://cdn.steemitimages.com/DQmQbDaX4pmLU46jNz2Ro1GRttdrbLnxozBcxrLxLoUQM5k/IMG_20180723_015011.j
নারী, পুরুষ, ছোট-বড় অনেককেই দেখা যায় বারবার টয়লেটে যাচ্ছেন বা নার্ভাস বোধ করছেন৷ কাছাকাছি টয়লেট না থাকায় বিরক্তও হচ্ছেন৷ মূত্রাশয়ে সংক্রমণের কারণে সাধারণত যা হয়ে থেকে৷ এ থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতামূলক কিছু তথ্য৷
নারীরাই ভোগেন বেশি
মূত্রাশয়ের সংক্রমণের ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় নারীদেরই বেশি৷ জার্মান একটি জরিপের ফলাফলে জানানো হয়েছে, ওই দেশে প্রতি দু’জনের একজন মহিলা জীবনে অন্তত একবার মূত্রাশয়ের সংক্রমণে আক্রান্ত হন৷ এই সংক্রমণ সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার কারণেই হয়ে থাকে। আর একবার যে নারীর এই ইনফেকশন হয়, পরবর্তীতেও তার সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে৷ মূত্রনালি পুরুষদের ২০ এবং নারীদের ৪ সেন্টিমিটার হওয়ার ফলে পরিষ্কার রাখা কষ্টসাধ্য হয়৷
সকলেরই হতে পারে
এ সমস্যা নারী, পুরুষ সবারই হতে পারে এবং তা যে কোনো বয়সে৷ মূত্রাশয়ের সমস্যা মানুষকে নার্ভাস করে ফেলে, বিশেষ করে অপরিচিত কোথাও গেলে বা ভ্রমণকালে অথবা অচেনা মানুষ সাথে থাকলে তো কথাই নেই! এই সমস্যায় মানুষ সংকোচ বা লজ্জা বোধ তো করেনই, এমনকি এ সমস্যা নিয়ে সরাসরি কারুর সাথে কথাও বলতে চান না৷ মূত্রাশয়ের এই ‘ইনফেকশন’ বা সংক্রমণ বেশিদিন ধরে বয়ে বেড়ালে এর থেকে কিন্তু জটিল অসুখও হতে পারে৷ তাই সাবধান!
যৌনমিলনে সংক্রমণ
মূত্রনালি ও মূত্রাশয় ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হলে মূত্রাশয়ে জ্বালা এবং ব্যথা হয়৷ জীবাণু সাধারণত পাকস্থলী ও অন্ত্রের নিচের অংশে থাকে, যা যৌনমিলনের সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ জীবাণু মূত্রনালি দিয়ে মূত্রাশয়ে ঢুকলে সাধারণত প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়৷ তবে জীবাণু বংশবিস্তার শুরু করলে মূত্রাশয়ে সংক্রমণ ঘটে৷ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, সহবাসের পর জীবাণু ধুয়ে ফেলার জন্য প্রস্রাব করা এবং পরিষ্কার করা উচিত৷
সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ
কোনো জীবাণু ঢোকার পরই সংক্রমণ ঘটে এবং প্রস্রাবের সময় ব্যথা ও জ্বালা অনুভব হয়৷ তখন তার সারাক্ষণই মনে হতে থাকে যে টয়লেটে যেতে হবে৷ সমস্যাটা আরো মারাত্মক হয় যখন জীবাণু কিডনিতে প্রবেশ করে৷ তখন শুধু জ্বালা নয়, পাশাপাশি জ্বর হয়৷ তাই এমনটা হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷
ডালিম বা বেদানা খান
মূত্রনালির সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দরকার শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ তাছাড়া সুস্থ ব্লাডারের জন্য প্রয়োজন বিশেষ ব্যায়াম৷ এছাড়া ব্লাডার বা মূত্রাশয়কে ঠিক মতো পরিষ্কারের জন্য দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান প্রয়োজন৷ ভিটামিন সি, জিংক এবং সেলেনিউম ব্লাডারের রোগের প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে৷ এক্ষেত্রে বেদানায় থাকা উপাদানও ‘ইউরেনারি ইনফেকশন’ হওয়া থেকে দূরে রাখে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই জরুরি
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিশেষ জরুরি, বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে৷ পরনের প্যান্টি বা আন্ডার প্যান্টস, স্লিপ হওয়া উচিত অবশ্যই সুতির, যাতে বাতাস চলাচল করতে সুবিধা হয়৷ পলিয়েস্টার কাপড়ের তৈরি অন্তর্বাস সহজেই গোপন জায়গায় জীবাণু ছড়াতে পারে, হতে পারে ছত্রাকও৷ বলেন স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডোরোথি স্ট্রুক৷ তাছাড়া প্রস্রাবের বেগ হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় প্রস্রাব ধরে রাখা এ রোগ হওয়ার আরো একটি কারণ, তাই আর চেপে রাখা নয়!
বেশি ওষুধ নয়
তলপেটে ঠাণ্ডা লাগা থেকে দূরে থাকা দরকার এবং তার সাথে যথেষ্ট পানি পান করুন৷ মনে রাখবেন, খাবারে সরিষার তেলের ব্যবহার মূত্রাশয়ে সক্রমণের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দেয়৷ রোজমেরির মতো নানা ভেষজ উদ্ভিদও অত্যন্ত কার্যকর এক্ষেত্রে৷ তবে যারা ডায়াবেটিস, ব্যথানাশক ওষুধ বেশি সেবন করেন, তাদের কিন্তু মূত্রাশয়ের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়৷