হেপাটাইটিসের প্রথম চিকিৎসা

in #health6 years ago

ভাইরাল হেপাটাইটিসের প্রথম চিকিৎসা
ক. শরীরের পরিপূর্ণ বিশ্রাম এবং খ. স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া চালিয়ে যাওয়া। অনেকে মনে করেন, জন্ডিস হয়েছে তাই এখন বেশি বেশি ফলের রস ও পানি খেতে হবে এবং হলুদ মরিচ খাওয়া যাবে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল, আমি বলব জন্ডিস হলে রোগীকে হলুদ, মরিচ, তরিতরকারি, মাছ-মাংস ইত্যাদি স্বাভাবিক খাবার খেতে দিন। ফল ডাবের পানি, আখের রস ইত্যাদি খাওয়াবেন না। ঘন ঘন গোসল করাবেন না। জনমনে আরও কুসংস্কার রয়েছে, যেমন: নাকে নস্যি দেয়া কিংবা লতাপাতা খাওয়ানো, এসব চিকিৎসার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। নাকে নস্যি দেয়ার ফলে অনেকে মারাত্মক সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আমাদের কাছে আসেন। জন্ডিস হওয়ার ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে যদি রোগের লক্ষণ ভালো না হয়, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। জন্ডিস হওয়ার পর কেউ অস্থিরতা, অস্বাভাবিক আচরণ করলে বা অজ্ঞান হলে, এটা মারাত্মক জরুরি অবস্থা। তাকে অনতিবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
ক্রনিক হেপাটাইটিস
লিভারের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ফলে যেসব রোগ হয়ে থাকে তাকে ক্রনিক হেপাটাইটিস বলে। বাংলাদেশে ক্রনিক হেপাটাইটিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি ভাইরাস। রোগী প্রাথমিক অবস্থায় বুঝতেই পারেন না কখন তিনি বি অথবা সি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে কখনও কোনো কারণে রক্ত পরীক্ষা করলে হঠাৎ হেপাটাইটিস বি অথবা হেপাটাইটিস সি ভাইরাস ধরা পড়ে।
হেপাটাইটিস বি এবং সি সংক্রমণ মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকলে আপনার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রথম পর্যায়ে সচেতন না হলে বোঝার কোনো উপায় নেই। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আস্তে আস্তে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন: দুর্বলতা, খাওয়ার প্রতি অনীহা, শরীরের ওজন কমে যাওয়া কিংবা জন্ডিস প্রকাশিত হওয়া। এরপরও যদি রোগী বুঝতে না পারেন তাহলে ক্রমান্বয়ে পেটে ও শরীরের অন্যান্য অংশে পানি আসবে। এ অবস্থায় লিভারের অবস্থা মারাত্মক হয়ে যায় এবং লিভার সিরোসিসে রূপ নেয়। সময় থাকতে চিকিৎসা শুরু করলে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসজনিত লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ করা যায়।
লিভার ক্যান্সারের কারণ
আমাদের দেশ লিভার ক্যান্সারের মূল কারণ হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি ভাইরাস। এ দুটি ভাইরাসের সংক্রমণকে প্রতিহত করলে লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। লিভার ক্যান্সার হওয়ার আগে সিরোসিস হয় এবং এই সিরোসিস প্রতিহত করতে পারলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রাথমিক অবস্থায় খুব ছোট আকারের লিভার ক্যান্সার ধরা পড়লে তা প্রতিরোধ করা যায়। আর তা না হলে পরবর্তী সময়ে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করে।
লিভারের অসুখের জন্য আপনি কতটা দায়ী?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হেপাটাইটিস ই এবং হেপাটাইটিস এ খাদ্যাভাসের জন্য হয়ে থাকে। যত্রতত্র বিক্রি হওয়া রাস্তার ধারের খোলা খাবার কিংবা আখের রস অথবা শরবত যারা খান তাদেরই এই জন্ডিস হয়। যারা শহর অঞ্চলে বসবাস করেন কিন্তু পানি না ফুটিয়ে পান করেন কিংবা গ্রামগঞ্জে টিউবওয়েলবিহীন স্থানে যারা ডোবা বা পুকুরের পানি পান করেন তারা হেপাটাইটিস এ বা ই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
অন্যদিকে দূষিত সুচ কিংবা দূষিত রক্ত গ্রহণের ফলে অথবা ব্যক্তিগত ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের ফলে হেপাটাইটিস বি এবং সি জনিত লিভার রোগ হতে পারে। তাছাড়া যত্রতত্র খোলা খাবার গ্রহণের ফলে লিভারে ফোঁড়া (Liver Abscess) হতে পারে। মদ্যপান বা এলকোহল খেতে যারা অভ্যস্ত বা আসক্ত তাদের লিভারের রোগ অবশ্যম্ভাবী। যে কোনো ধরনের নেশা করলে লিভার আক্রান্ত হবেই

Sort:  

@fresh94, I gave you a vote!
If you follow me, I will also follow you in return!

I allready following you brother

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62151.48
ETH 2421.34
USDT 1.00
SBD 2.57