একদা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ সফরে ছিলেন। পথের সম্বল ও সমান শেষ হয়ে গেল। তিনি দেখলেন মাঠে ছাগলের পাল বিচরণ করছে। তৎকালীন আরবে রেওয়াজ ছিল, রাখালরা মুসাফির পেলে দুধ দিয়ে মেহমানদারী করবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ রাখালের কাছে গিয়ে বললেন, ভাই, আমি মুসাফির। আমার পথের সম্বল শেষ হয়ে গেছে। আমাকে একটি ছাগলের দুধ দোহন করে আমাকে দাও। আমি পান করব। রাখাল বলল, আপনি মুসাফির। আপনাকে অবশ্যই আমি দুধ দিতাম। কিন্তু সমস্যা হল, এই বকরিগুলো আমার না। এগুলোর মালিক অন্য এক ব্যক্তি। আমাকে শুধু চড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই এ বকরিগুলো আমার কাছে আমানত। এগুলোর দুধও আমানত। তাই আমি আপনাকে দুধ দিয়ে মেহমানদারী করতে পারছি না।।।
একথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ তাকে আরেকটু বাজিয়ে দেখতে চাইলেন। তিনি বললেন, দেখ ভাই, আমি তোমাকে একটা কথা বলছি, এতে তোমারও ফায়দা (লাভ), আমারও ফায়দা। তুমি বরং এক কাজ কর, একটি বকরী আমার কাছে বিক্রি করে দাও। বিক্রয় মূল্য তুমি নিয়ে নেবে। এতে তুমিও কিছু পয়সা পেলে আর আমারও উপকার হল। পথে পথে আমি এর দুধ খেয়ে সময় পার করতে পারব। আর হ্যাঁ, মালিককে বলবে, একটি বকরী বাঘে খেয়ে ফেলেছে। দেখ, সে কোন সন্দেহ করবে না। কারণ পাহাড়-জঙ্গলে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এটা করলে আমাদের দুজনেরই লাভ হবে। রাখার লোকটি তার কথা শুনে সাথে সাথে উত্তর দিল, يا هذا، فاين الله؟ আরে ভাই, আমি এই কাজ করলে আল্লাহ কোথায় যাবেন? রাখালের কথার অর্থ ছিল,,, আমি ও তুমি মিলে না-হয় এই কাজ করলাম, মালিককেও জবাব বানিয়ে দিয়ে দিলাম। কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু সকল মালিকের একজন মালিক আছেন। তিনি সব দেখেন। তাঁর কাছে গিয়ে আমি কী জবাব দিব??? তাই আমি এই কাজ করতে পারি না।আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ যেহেতু তাকে একটু বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন, তাই তার এ কথা শুনে তিনি বললেন, যতদিন তোমার মত মানুষ পৃথিবীতে থাকবে, কোনো জালেম কারও প্রতি জুলুম-অবিচার করতে পারে না [উসদুল গাবাহ্ ৩/২২৮]
যতক্ষণ অন্তরে আল্লাহ তা'য়ালার ভয়, দিল-দেমাগে আখেরাতের ফিকির এবং আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর অনুভূতি থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অপরাধ ও অন্যায় হতে পারে না। ইসলামে পুরোপুরি প্রবেশ করার এটাই অর্থ।নির্জন জঙ্গলে একাকী অবস্থায় তার চিন্তা হল, আমার কোনো কাজ যেন আল্লাহ তা'য়ালার মর্জির খেলাফ না হয়। এটা দ্বীনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ ছাড়া কোন মুসলমান, মুসলমান হতে পারে না। হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لا إيمان لمن لا أمانة له،
যার অন্তরে সততা ও আমানতদারি নেই তার ঈমান নেই [মুসনাদে আহমদ]
The force is with you! You got a 33.33% upvote from @steemyoda courtesy of @nazmul8877!