জেনারেল রাইটিং || উন্নত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অবনতি হচ্ছে শিক্ষার
হাই বন্ধুরা!
হাই
বন্ধুরা!আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটু কথা বলতে এসেছি । দীর্ঘদিনের স্বচক্ষে দেখা শিক্ষা ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু কথা ব্যক্ত করব।আলোচনার বিষয়: |
---|
একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বাস্তবতা অনুভব করে, মনের অনুভূতি প্রকাশ করলাম। আশা করি ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ছোটবেলার একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি। সম্ভবত তখন ক্লাস ফোরে পড়তাম। আমরা খালাতো ভাই ছিলাম ৬ জন একটা ছিল খালাতো বোন। এ নিয়ে বেশ ভালোলাগা আমাদের মধ্যে ছিল। পরবর্তীতে আরো খালাতো ভাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যাই হোক,আমরা বেশ কয়েকজন খালাতো ভাই আমাদের বাড়িতে উঠানে বসে ছিলাম। এই মুহূর্তে আমার পাশে ছিল আমার নানি এবং আমার ছোট খালা। আমরা খালাতো ভাইরা আনন্দের সাথে বিভিন্ন খেলার নাম নিয়ে কথা বলছিলো ও আনন্দ করছিলাম। হঠাৎ করে আমরা ছোট খালাম্মা বাংলা বর্ণমালা সংখ্যা ইংরেজি লেটার এসব নিয়ে কথা উঠিলো। খালাম্মার কথা শুনে বেশ বিরক্তিবোধ করছিলাম আমরা। কারণ অনেকদিন পর বেশ কয়েকজন খালাতো ভাই একত্র হতে পেরেছি খেলাধুলা করব, এর ভিতরে কেন লেখাপড়া টেনে আনছে খালা।
কথায় কথায় খালা আমাদের ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত অর্থাৎ বাংলা বর্ণমালা বলতে বলল। আমরা বলতে বলতে মাঝপথে ভুল হয়ে যায়। আমাদের একাধিকবার সুযোগ দিল। কিন্তু আমরা কেউ পারলাম না ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত সঠিক ভাবে বলতে। তখন খালা বলল দেখবি তোর নানি সব বলে দিবে। নানীকে বলতে বলল। আমরা নানির ভুল ধরার জন্য বই নিয়ে আসলাম। বই এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম নানী বলতে থাকলো। নানীর ভুল হলো না। এভাবে অ আ, ক খ, ABCD, এমনকি নামতাও বলে দিল দশের ঘর পর্যন্ত। আমরা দশের ঘর পর্যন্ত নামটা বলতেও ব্যর্থ হলাম। সেখানে ছাত্র হিসেবে আমি একটু নরমাল ছিলাম তবে আমার ভাই খালাতো ভাইয়েরা ভালো পর্যায়ের ছাত্র ছিল। কিন্তু তারাও তো পারল না। সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে নানি বলল যতদিন যাবে তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নত হতে পারে কিন্তু লেখাপড়ার উন্নতি হবে না। কারণ আগেকার শিক্ষকরা ছিল বিশেষ শিক্ষায় শিক্ষিত, জ্ঞানসম্মত জ্ঞানী গুণী ব্যক্তি। যারা কঠোর পরিশ্রম করে খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া শিখেছে। তাদের শিক্ষা সঠিক শিক্ষা। আর এখনকার যে সমস্ত শিক্ষকরা হচ্ছে তারাও ফাঁকিফুকি তাদের ছাত্ররাও লেখাপড়া করে ফাঁকিবাজি। শিক্ষা নিয়ে আরো বিভিন্ন কথা হলো তখন, আমরা অগ্রাজি করে মনোযোগী হলাম না তাদের কথায়, শুধু কানে যা আসলো। আরো মন্তব্য করেছিলেন নানি ভবিষ্যতে লেখাপড়া অবনতি হতে পারে। সবাই বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করবে খুব সহজে, কিন্তু তাদের মাথায় কিছুই থাকবে না। কারণ এরা তো পরিশ্রম করে মনোযোগ দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে না। আর যতটুকু যা শিখে সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা করেনা, এখন শুধু শুরু হয়েছে সার্টিফিকেট অর্জন।
সেই দীর্ঘ বছর পর অনুভব করে বুঝতে পারছি সত্যি কথাটা সংক্ষিপ্ত হলেও বাস্তব এবং বাস্তবতার সাথে মিল। ওই মুহূর্তে আমার ছোট খালা একটা কথা বলেছিল আগেকার ফাইভ পাশ, আর এখনকার বিয়ে পাশ সমান। তখন আমরা খালার কথা হেসে উড়িয়ে দিয়ে ছিলাম। নানী বলেছিল তোরা হাসাহাসি কর আর যাই কর ভবিষ্যতে এর প্রমাণ পাবি। সত্যিই আমি খেয়াল করে দেখেছিলাম নানি 5 পাস করে বিয়ে হয়ে গেছে। তবে তার মধ্যে বেশ ট্যালেন্ট ছিল। শুধু অ আ ক খ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি বেশি ইংরাজি বলতে পারতেন। যেখানে সামান্য ইংরেজি শিখতে হলে প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে লাখ টাকা খরচ করতে হয়। তবে নানি তো কষ্ট করে ফাইভ পাস করেছিল তাই না। আগে তেমন শিক্ষক এমন শিক্ষা ব্যবস্থা ছিলনা। আর এখন ঘরে ঘরে শিক্ষকের অভাব নেই, শিক্ষিত মানুষের অভাব নেই। সামান্য একটু শিক্ষা গ্রহণ করতে গেলে অনেক টাকা খসাতে হয়। কিন্তু মেধার বিকাশ ঘটে না। আগের ছাত্ররা শিক্ষকের মাইর খাওয়ার ভয়ে, ব্যস্ততার মধ্য থেকে লেখাপড়া মুখস্থ করে রেডি হয়ে স্কুলে যেত পাঁচ গ্রাম পার হয়ে। বর্ষার সময় এক হাঁটু কাদা বেধে থাকতো রাস্তায়। তাইতো উনি আরো বলেছিলেন "লেখাপড়া শিখলে মানুষ শিক্ষিত হয়, এখন বেশিরভাগ হচ্ছে মূর্খ"। এদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তোর সুন্দর একটা কথা বলেছিলেন, সেটা নাই বললাম।
আমি সেই ছোট থেকে যখন ক্লাসে পড়া পারতাম না, ভালো রেজাল্ট করতে পারতাম না। এমনকি নাইন টেন এসএসসি দেওয়ার মুহূর্ত, ইন্টার পরীক্ষা দেওয়ার মুহূর্ত, অনার্সে পরীক্ষা দেওয়ার মুহূর্ত, মাস্টার্সের পরীক্ষা দেওয়ার মুহূর্ত, সব সময় সেই দিনের কথা, সে মুহূর্তের কথা স্মরণ করে চলেছি। নানীর কথার সাথে বাস্তবতার অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। হয়তো আমাদের জেনারেশন টাও বেশ কষ্ট করেছে। রাস্তাঘাট তেমন বেশি একটা ছিল না এত বেশি স্কুল কলেজ ছিল না। তবে তারপর থেকে দেশের ব্যাপক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থার। কিন্তু সেই তুলনায় মেধার বিকাশ কেমন হয়েছে তা আপনারাই জানেন। এত বেশি মেধার বিকাশ হয়ে গেছে যে, টিকটক বিভিন্ন প্রকার অশ্লীল ভিডিও করে পথে ঘাটে নিজের মান সম্মান বিলিয়ে বেড়ায় হাজার হাজার স্টুডেন্ট। এমনকি শ্রেণীকক্ষের মধ্যেও টিকটক করে। তাই বলতে পারি সেই দিনের কথাগুলো, হতে পারে ছোট্ট কয়েকটা কথা ও কয়েকটা লাইন। কিন্তু বাস্তবতার সাথে অনেক মিল। যেখানে শিক্ষকদের ফাঁকি ফুকি আর ছাত্রদের ফাঁকিবাজি প্রতিনিয়ত চলতেই আছে। আমরা জানি শিক্ষা লাভ করে দেশ ও জাতির উন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু সেই জায়গায় কতটা উন্নত হচ্ছে আমাদের জেনারেশন এবং রাষ্ট্র তা তো স্বচক্ষে দেখছি। তাই আমাদের গার্জিয়ানদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নিজের সন্তানেরা সঠিকভাবে লেখাপড়া শিখছে নাকি শিখছে না। তারা যেভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছে সে শিক্ষা ভবিষ্যতে তাদের সাফল্য বয়ে আনবে নাকি অন্ধকার পথে ঠেলে দিবে। অবশ্যই এই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রেখে সন্তানদের প্রতিষ্ঠানে পাঠানো উচিত এবং তাদের প্রতি খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
বিষয় | শিক্ষা |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো উন্নতি হলেও কিন্তু শিক্ষার তেমন কোনো উন্নতি ঘটছে না। তাছাড়া এখন কাউকে ক খ ধরলে পারবে বলে আমার মনে হয় না। বাকিগুলোর কথা বাদই দিলাম। কিন্তু আপনার নানি কিন্তু একদম সম্পূর্ণ সবগুলো বলে দিয়েছে। সত্যিই এর মাঝে বোঝা যায় শিক্ষার অবনতি হচ্ছে। পোস্টটি দারুণ ছিল ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আগের মানুষ সুন্দর ভবিষ্যৎবাণী।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো উন্নতি হলেও শিক্ষার কোনো উন্নতি না হয়ে যেনো দিন দিন অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।পড়াশুনায় মনোযোগী না হয়ে এখন শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে আসক্ত হচ্ছে।দারুন লিখেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
কথা আছে গরিবের কথা বাসি হলেও ফলে।
অনেক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আপনি লিখেছেন। আমিও আপনার সাথে সহমত পোষণ করলাম এবং এ কথা সত্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ থেকে ৪ তলা পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ভালো ভালো রেজাল্ট হচ্ছে। কিন্তু সে সমস্ত শিক্ষার্থীদের ভালো মানের মেধা নেই বললেই চলে। যখনই মানুষ আবোল-তাবোল দিকে মনোযোগ দিবে তখন মেধার অবক্ষয় হবেই।
একদম ঠিক কথা
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই বর্তমান সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তো যতটা চকচকে তার লেখাপড়ার মান ততটাই সাদাসিদে। আমরা যখন স্কুলে যেতাম টিচাররা ক্লাসে ঢুকলে ভয়ে কাঁপুনি শুরু হয়ে যেত আর এখন দেখি শিক্ষকদের সাথে ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে মনে হচ্ছে তারা বন্ধু। আর আপনি যে গল্পটা শোনালেন যে পড়াগুলো আপনারা পারলেন না সেগুলো আপনার নানী বলে দিল আসলে সে সময়ে লেখাপড়ার একটা মান ছিল যে মানটা এখন একেবারেই নাই আমাদের সময়ও আমরা লেখাপড়া না করে ক্লাসে ঢুকতাম না। আমার মনে হয় যতদিন যাবে এখন থেকেই যদি এ ব্যাপারে সতর্ক না হওয়া হয় তাহলে আমাদের কোমলমতি ছেলে মেয়েরা লেখাপড়ার নামে ফাজলামো আর অশিক্ষা কুশিক্ষা ছাড়া কিছুই শিখতে পারবে না।
হ্যাঁ একদম ঠিক তাই আমাদের সজাগ হতে হবে
ভাইয়া আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছেন। আসলে সব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই কিন্তু আগের মতো সেই শিক্ষা এখন আর নেই। আগের মত কোন কিছুই এখন আর নেই।।সবকিছুর অবনতি হয়েছে।
ঠিক বলেছেন।
আপনার টপিকের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। আমরা বাবা-মায়েরাও দেখি স্কুলের চাকচিক্যতা কতটা ভালো, তার ওপর নির্ভর করেই বাচ্চাদেরকে স্কুলে ভর্তি করায়। আর এজন্যই শিক্ষকেরাও এই দুর্বলতা কাজে লাগাছে।
আপনি কিন্তু ঠিক বলেছেন।