ইফতারি ❤️
হ্যালো
কেমন আছেন সবাই। আশা করছি খুবই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও ভালো আছি সুস্থ আছি আপনাদের আশির্বাদে ও সৃষ্টি কর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো ইফতার নিয়ে কিছু কথা। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
আমার মেয়ে যখন অনেক ছোট চার বছর বয়স তখন থেকেই আমার বাড়ির সামনের এক পরিবারের সাথে ইফতার খেয়ে থাকে।গরিম কৃষক পরিবার। আমার দাদু শ্বশুর আমাদের বাড়ির সামনে এক টুকরো জায়গায় বসিয়েছেন নিজের কাজের জন্য। সেই তখন থেকে এখানেই থাকে পরিবারটি।এই পরিবারের একটি বাচ্চা মেয়ে আছে আমার মেয়ের এক বছরের বড়ো কিন্তুু দেখলে মনে হবে আমার মেয়ে ওর তিন বছরের বড়ো।অপুষ্টিতে ভুলছে কিছুটা বংশগত গ্রোথ সমস্যা।
বাচ্চা মেয়েটির সাথে আমার মেয়ে খেলা করে এবং সেই সুবাদে ওদের বাড়িতে যাওয়া আসা।পরিবারের সবাই আমার মেয়েকে বেশ ভালোবাসে।
রমজান মাস এলে আমার মেয়ে খুশি হয়ে যায় ওদের সাথে ইফতারি খাবে বলে।আমার মেয়ে ঠিক ইফতারের সময় হাজির হবে আর যদি কখনে না যায় তবে ঠিক ইফতারের সময় এসে নিয়ে যাবে।আমরাও ইফতার খেতে ভালোবাসি।একজন্যই আমরা পূজা বা ঈদে বলে থাকি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। উৎসব সবার মানে আপনাদের ঈদের নামাজে আমরা না থাকলেও খাওয়া দাওয়ায় কিন্তুু উৎসব মূখর ভাবেই করে থাকি।আমাদের এলাকায় রেওয়াজ আছে পূজায় আমরা নারু মোয়া,মুরকি আশেপাশে সব মুসলিম পরিবারে পাঠাই এবং মুসলিম পরিবার গুলো সকালে রান্না করা সেমাই নাস্তা পাঠিয়ে দেয় এবং কোরবানি ঈদে সেমাইয়ের প্যাকেট ও চিনি পাঠায়।
আমরা ঈদের দিন খাসির মাংস, মুরগির মাংস রান্না করে থাকি এবং বাড়ির মেয়েরা মুসলিম মেয়েদের সাথে সাজুগুজু করে সময় কাটায় এটাই হলো উৎসব। ইদানীং ধর্মাঅন্ধ ফতোয়াবাজ কিছু ব্যাক্তি ধর্ম যার যার উৎসব সবার বলতে দেয় না।তারা মনে করে এটা বল্লেই ধর্মপালন করা হয়ে যায়। সৃষ্টি কর্তা তাদের শুভ বুদ্ধি দান করুন সেই কামনা করি।
যাই হোক, মেয়ে ইফতার করে আসে খুবই তৃপ্তি নিয়ে আমিও প্রশ্ন করি আজ কি দিয়ে ইফতার করলা মা মেয়ে খুবই আনন্দের সাথে উত্তর দেয় কোনদিন মুড়ি মাখা,কোনদিন মুড়ি দিয়ে চানাচুর আবার কোনদিন বা শুধুই বুট বিরিয়ানি। আসলে গ্রামের মানুষের অভাব এবং স্বাভাব দু'টোই বলতে পারেন কারণ অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার আছে যারা বেশির ভাগেই মুড়ি নিয়ে ইফতারি করে ভাত খায়।শহরের মতো বাহারি ইফতারি পছন্দ করে না।তবে অনেকেই আবার নানান রকমের সুস্বাদু ইফতারি বানিয়ে বা কিনে খেয়ে থাকে তাও হাতে গোনা এবং প্রতিদিন নয় এক মাসের মধ্যে হয় তো দশ পাঁচদিন হবে।
আমরা প্রতিদিন ইফতারি কিনে এনে খাই কিন্তুু মেয়ে ওনাদের সাথেই খাবে তাই প্রতি বছর এক-দুটি আমি ইফতারি কিনে মেয়েকে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। আমাদের থানা শহরে একটি ইফতারের দোকান রয়েছে খুবই সুন্দর ইফতারি বিক্রি করে থাকে।আমরা স্থানীয় এলাকা থেকে ইফতারি কিনে খাই কিন্তুু ওই দোকানের ইফতার একদিন খেতেই হয় আর ঐ দোকান থেকে ইফতারি কিনে এনে দেই ওনাদের কে।
প্রতি বছর বর রমজান মাসে ছুটিতে আসে এবং তুনি ইফতারি এনে দেন কিন্তুু এবার সাভারে পোস্টিং হওয়ার কারণে এবার এখনো ছুটিতে আসেনি তবে রমজান শুরুর কয়েকদিন আগেই ছুটি কাটিয়ে গেছে একজন্য আমি গেলাম ইফতারি কিনতে। গিয়ে দেখলাম ইফতারের পশরা বানিয়ে রেখেছে নানান রকমের ইফতারের। বিক্রি ও বানানো চলছে এক সাথেই।
আমার কিছু কাজ ছিলো সেগুলো সেরে ইফতারি কিনতে গেলাম এবং কিনে নিয়ে চলে আসলাম ইফতারের আগেই এবং মেয়েকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম।
আমার মেয়ে এবার একদিনও ইফতারি খেতে যায় নি আসলে এখন বড়ো হয়েছে তাই লজ্জা পায়। ডাকলেনও আর যায় না। ওনাদের বাড়িতে ইফতারি দিয়ে এসে আমরাও আমাদের জন্য আনা ইফতারি গুলো খেলাম।
আমার মেয়ে প্রতিদিন ইফতার খেয়ে থাকে এবং ঠিক ইফতারের সময়েই খেতে হয় ওর সাথে আবার শরবত ও বানিয়ে নেয় আসলে এটাই উৎসব। একেই বলে ধর্ম যার যার উৎসব সবার।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন নতুন পোস্টের মাধ্যমে।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। তবে আপু এখন শহরের থেকে গ্রামে ইফতার কোন অংশে কম হয় না বলেই চলে।হয়তো গ্রামের কিছু লোক আছে যাদের সামর্থ্য নেই ইফতার করার আর বেশির ভাগ মানুষ অভাব নয় স্বভাবে ভাত খায়।যাইহোক পাশে এমন লোকজন থাকলে সত্যি বাচ্চারা অনেক আনন্দ পায়। আর উৎসব আমাদের সবার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্টটা পড়ে। আসলে সবার সাথে মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেয়ার মাঝেই হলো আনন্দ। আপনারা সবাই ইফতার ভাগাভাগি করে খান আবার নিজেরাও এখন কিনে নিয়ে এসে ইফতারির সময় ইফতারি করেন বিষয়টা শুনে খুব ভালো লাগছে আপু। আসলে সমাজের গরীব দুঃখীদের সাহায্য করলে বিধাতা নিজেই অনেক বেশি খুশি হন। সেটা হোক যেকোনো ধর্মের মানুষ। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের আয়োজন দেখে।
সবার উপরে মানুষ সত্য এই কথা সব সময় মানি।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
একটা কথা দারুন বলেছো, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আসলে উৎসব তো একপ্রকার মিলনের অধ্যায় তাই আনন্দ যাপন কিংবা মিলন প্রাঙ্গণের জন্য আমরা সমস্ত ধরনের উৎসবে নিজেরা একত্র হই। তোমার আজকে ব্লগটা পড়ে খুব স্পষ্ট ভাবে মনে হচ্ছে তুমি কতখানি উদার মনস্ক। আমরা যে আসলেই আগে মানুষ এবং পরে আমাদের সাথে ধর্মের পরিচয় জুড়ে যায় তা তোমার পোস্ট পড়ে অনেক বেশি অনুভব হচ্ছে। দেখতে গেলে মানুষ এভাবেই বেঁচে আনন্দে থাকতে চায় কিন্তু কিছু মানুষের স্বার্থপরতা এবং লোভ মনুষ্যত্বকে নষ্ট করে দিচ্ছে সাথে আমাদের সমাজ কেও। এইভাবে যদি সারা পৃথিবী ভালো থাকতো তাহলে হয়তো পৃথিবীর রং টাই অন্যরকম হতো।
ধন্যবাদ তোমাকে আমার পোস্ট টি পড়ে সুন্দর গঠনমূলক পোস্ট করার জন্য।
আপনার পোস্ট টা পড়ে খুব ভালো লাগল আপু। আমাদের এই ভাতৃত্বের বোধ বহু যুগের আগে থেকে। এটা কখনও ভেঙে যাবে না একেবারেই। সবসময় আমরা একজন আরেকজনের হাসি দুঃখ উৎসবে সামিল হবো।
ঠিক তাই ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলে এটা ঠিক বলেছেন আপু বর্তমানে কিছু ধর্মান্ধ ব্যক্তি আছে যারা ধর্ম নিয়ে বেশ বাড়াবাড়ি করে। আমাদের ইসলামে কিন্তু এটি নেই। আপনার মেয়ে ইফতার খেতে পছন্দ করে জেনে ভালো লাগলো। খুব ভালো করেছেন তাদের বাসায় ইফতার পাঠিয়ে। আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।