হেলথ টিপস
কিছু খাবার চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। পেটের মেদ কমাতে চাইলে এসব খাবার যোগ করা উপকারী। শুধু শরীরচর্চা নয়, দেহের বাড়তি মেদ কমাতে খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হয়। আর এমন খাবারই খাওয়া উচিত যা বারবার খাওয়ার ইচ্ছা কমাবে। অন্যদিকে জোগাবে পুষ্টি।
১) ডার্ক চকোলেট: ‘লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি’র করা এক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে জানানো হয়, চকোলেট শরীরের অন্ত্রে-স্বাস্থ্যকর পলিফেনলিক যৌগ উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার মধ্যে একটি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা প্রদাহের সাথে যুক্ত জিনকে বন্ধ করে দেয় এবং শরীরের জ্বালানি হিসাবে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।
২) লেবুর পানি: দেহের বিপাক বাড়াতে পানি সহায়তা করে। এর সাথে লেবু যোগ করা দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জোগায়। চীনের সাউথওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কলেজ অব হর্টিকালচার অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার’ এর করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাক প্রক্রিয়ার গোলমাল সারাতে সাহায্য করে, ফলে চর্বি পোড়ানোর পরিমাণও বাড়ে।
৩) পেয়ারা: পেয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। তবে এক কাপ পেয়ারায় চার গ্রাম তৃপ্তিকারী প্রোটিন থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখা যায়।
৪) সরিষা: ওজন কমাতে সরিষা উপকারী। ‘ইংল্যান্ড’স অক্সফোর্ড পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’য়ের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, এক চা-চামচ সরিষা খাওয়া ঘণ্টায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিপাক বাড়ায় যা ওজন কমাতে সহায়ক।
৫) চকোলেট দুধ: কম-চর্বি-জাতীয় চকোলেট দুধের প্রতি এক কাপে আট গ্রাম প্রোটিন থাকে যা শরীরচর্চার আগে খাওয়ার জন্য উপযোগী। শরীরচর্চার সময় পেশি চর্বির চেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়ায়। তবে চকোলেট দুধ নির্বাচন করার সময় তাতে যেন চিনির পরিমাণ কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৬) কফি: কালো কফি বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে, এতে বাড়তি ক্রিম বা কৃত্রিম মিষ্টি যোগ করা হলে ফলাফল ভিন্ন হয়। ‘সাইকোলজি অ্যান্ড বিহেইভিয়ার’ এর সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করে তাদের বিপাক হার অন্যদের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।
৭) বাদামের বাটার: বাদামের বাটার বা পিনাট বাটার পেটের মেদ কমাতে উপকারী। কেননা এটা ‘মনোস্যাচুরেইডেটেড ফ্যাট’ ও প্রোটিনসমৃদ্ধ।
৮) পনির: পনিরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। দুধের তৈরি খাবার দেহের ওজন কমাতে সহায়ক বলে জানা যায় ‘ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো হেল্থ সায়েন্স সেন্টার’য়ের ‘সেন্টার ফর হিউম্যান নিউট্রিশন’য়ের করা গবেষণা থেকে। নাস্তায় পনিরের সাতে আঁশসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উপকারী।
৯) কাঠ-বাদামের মাখন: কাঠ বাদামের মাখন অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। ‘দি পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ১.৫ আউন্স কাঠ বাদাম খাওয়া পেট ও পায়ের মেদ কমাতে সহায়তা করে।
১০) কাঁচা কলা: অল্প কাঁচা কলা ‘রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। এটা সুস্থ অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে, যা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি-সিক্স যা শক্তি জোগায়।
১১) লাল আপেল: এ ফলে রয়েছে দ্রবণীয় আঁশ যা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ যারা গ্রহণ করে, তাদের পাঁচ বছরে ৩.৭ শতাংশ চর্বি কমাতে সহায়তা করে।
১২) বাঁধাকপি: বাঁধাকপি যে আঁশে পরিপূর্ণ সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পুষ্টিবিজ্ঞানের আরো তথ্যানুসারে এ সবজি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে। খাওয়ার পর হজমের জন্য পিত্তথলি থেকে পাচক রস বের হয়। আর এ রসকে চর্বি গ্রহণে বাধা দিতে পারে বাঁধাকপি।
১৩) লাল মরিচ: ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ডসমৃদ্ধ যা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের মাত্রা কমায়। বেশি চাপে থাকলে কর্টিসলের মাত্রা বাড়ে, যা পেটের চর্বি জমাট বাধায়। লাল মরিচ খাওয়া এ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।
১৪) কিডনি বিন: দ্রবণীয় আঁশ পেটের মেদ কমায় এবং কিডনি বিন দ্রুত পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে। এতে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে ও চর্বি কম। মটর খাওয়া পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ও মেদ কমাতে সহায়তা করে।