দ্যা কলোনি - The Colony [ প্রথম খন্ড ]
হ্যালো বন্ধুরা
আসসালামুয়ালাইকুম। কি অবস্থা সবার? আজকে আমি একটা মুভি রিভিউ করতে যাচ্ছি যেটার নাম কলোনি (Colony) । বাস্তব কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত এই মুভিটি । শুধুমাত্র রিভিউ পড়ে একটি মুভির সম্পূর্ণ মজা নেয়া কখনোই সম্ভব নয়। এই জন্য আমার রিভিউ টি পড়ে আপনাদের যদি ভালো লাগে তাহলে মুভিটি সরাসরি দেখে আসতে পারেন। তাহলে চলুন শুরু করি।
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত পোস্টার
মুভি সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ-
নাম: কলোনিয়া
পরিচালক: ফ্লোরিয়ান গার্লেনবের্গার
দেশ: জার্মানি, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, ইউ.কে
মুক্তি: ১৩ সেপ্টেম্বর , ২০১৫
ভাষা: ইংরেজি,স্প্যানিস
বক্স অফিস : $৩.৬ মিলিয়ন
তথ্যগুলো Wikipedia থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
কাস্ট-
নং | বাস্তব নাম | চরিত্রে |
---|---|---|
১ | এমা উয়াটসন | লিনা |
২ | ড্যানিয়েল ব্রুল | ড্যানিয়েল, লিনা'স বয়ফ্রেন্ড |
৩ | মাইকেল নিকোভিস্ট | পল |
৪ | লিসেন্ডা কারেই | গিসেলা |
প্লট/ স্টোরিলাইনঃ-
ছবির প্রেক্ষাপট ১৯৭৩ সাল, যখন দক্ষিণ আমেরিকার একটি দেশ চিলি - ওখানকার রাজনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ওই সময় চিলির মিলিটারির জেনারেল ওই দেশের প্রেসিডেন্ট কে সরিয়ে নিজে ক্ষমতায় বসতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই দেশের সাধারণ জনগণ প্রেসিডেন্টকে খুবই ভালোবাসতো । তাই সবাই আন্দোলন গড়ে তুলেছিল প্রেসিডেন্ট কে বাঁচানোর জন্য।
এবার দৃশ্যপট চেঞ্জ হয়। আমাদেরকে দেখানো হয় একটা প্লেন উড়ে চিলিতে আসছে। আর সেই প্লেনে লিনা নামের একজন এয়ারহস্টেজ আছে। লিনা প্লেন থেকে নেমে সহকর্মীদের সাথে যখন রাস্তা দিয়ে একটি গাড়িতে যাচ্ছিল তখন সে দেখতে পায় তার বয়ফ্রেন্ড ড্যানিয়েল চিলির সাধারণ জনগণের সাথে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে অর্থাৎ তার বয়ফ্রেন্ড চায় প্রেসিডেন্ট যেন টিকে থাকে। এরপর লিনা তার সহকর্মীদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তার বয়ফ্রেন্ড ড্যানিয়েলের বাসায় চলে যায়। তারা দুজনে ছিল জার্মানির নাগরিক। কিন্তু চিলিতে দীর্ঘদিন থাকার ফলে তাদের সময় এখানে ভালই কাটছিল। যাই হোক তাদের দুইজনের সময় অনেক ভালো কাটছিল। কিন্তু তার পরের দিন সকালে ড্যানিয়েলের ফোনে একটা ফোন আসে। সে জানতে পারে যে মিলিটারি জেনারেল ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে।
এরপর লিনা আর ড্যানিয়েল খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে আর তারা তখনই বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গিয়ে দেখতে পায় বাহিরের অবস্থা খুবই খারাপ। মিলিটারিরা সাধারণ জনগণের ধরে খুব অত্যাচার করছে। তাদেরকেই অত্যাচার করছে যারা মিলিটারির বিপক্ষে ছিল। তো এই সময় ড্যানিয়েল এই অত্যাচারের মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করতে যায়। হঠাৎ একজন মিলিটারি ড্যানিয়েলের ছবি তুলতে দেখে ফেলে। এরপর অন্যান্য সকলের সাথে ড্যানিয়েল আর লিনাকে একটি লাইনে দাঁড় করানো হয়। আমাদের দেশে যেমন রাজাকার ছিল ঠিক ঐ রকম একজন অসৎ লোক মিলিটারিদের কাছে সবকিছু বলে দিতে থাকে যে কে কে তাদের বিপক্ষে ছিল । যারা যারা তাদের বিপক্ষে ছিল তাদেরকে ওখানেই মিলিটারিরা গুলি করে মেরে ফেলে। আর এটা দেখে ড্যানিয়েল খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। এরপর ওই রাজাকার যখন ড্যানিয়েলের কথা ফাঁস করে দেয় তখন মিলিটারিরা কোন কারণে তাকে না মেরে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়। আর লিনাকে ছেড়ে দেয়।
পরের দিন সকালের দৃশ্য দেখানো হয়। লিনা খুবই চিন্তিত ছিল। ওর বয়ফ্রেন্ডের জন্য খুব খারাপ লাগছিল। এরপর লিনা সিদ্ধান্ত নেয় যেকরেই হোক তার বয়ফ্রেন্ডকে উদ্ধার করতে হবে। এরপর লিনা তার বয়ফ্রেন্ডের কর্মস্থলে যায়। সেখানে যাদের সাথে ড্যানিয়েল কাজ করতো তাদের কাছে গিয়ে সাহায্য চায়। কিন্তু তারা ছিল এক ধরনের প্রটেস্ট গ্রুপ। তারা তাদের নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিল। একজনের জন্য তারা বেশি সময় ব্যয় করতে পারবে না। কিন্তু ড্যানিয়েলকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে লিনাকে তথ্য দেয় তারা। লিনাকে বলা হয় কলোনি নামে একটা জায়গায় ড্যানিয়েলকে পাঠানো হয়েছে। আর এই জায়গাটার নামেই এই মুভিটির নাম করণ করা। এই জায়গাটা বাইরের দুনিয়া থেকে একেবারেই আলাদা৷ লোকজনকে খুব অত্যাচার করা হয় এখানে। বাইরের দুনিয়ার সাথে কোন কানেকশন নেই এখানে। সব সময় এখানকার বাসিন্দাদের টর্চার করা হয় আর পাগল বানিয়ে দেয়া হয়। আর ওখানে একবার যে যায় সে আর কখনো ফিরে আসতে পারেনা।
এরপর আমরা দেখতে পাই ড্যানিয়েলকে প্রচন্ড অত্যাচার করা হচ্ছে। ইলেক্ট্রিক সক দেওয়া হচ্ছিল । এরপর ড্যানিয়েল অজ্ঞান হয়ে যায়। এতোটুকু দৃশ্য দেখানোর পর আবার লিনাকে দেখানো হয়। লিনা একজন ব্যক্তির কাছে গিয়ে কলোনি সম্পর্কে বিভিন্ন ইনফর্মেশন নিচ্ছে। ওই ব্যক্তিটি কলোনি সম্পর্কে সকল ধরনের ইনফরমেশন দেয় আর এটাও বলে যে ওখানে যাওয়া খুবই সহজ কিন্তু কেউ বেরিয়ে আসতে পারে না কখনো। আর তুমি ওখানে যেও না কিন্তু। লিনা তার কথা শোনে না। তাকে তার বয়ফ্রেন্ড এর কাছে যেতেই হবে।
এরপরে দেখানো হয় লিনা একটি বাসে করে ওই এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। কলোনিতে যখন পৌঁছায় তখন লিনা ওই এরিয়াতে প্রবেশ করে। আর ওখানে থাকা একজন বৃদ্ধ মহিলা লিনাকে নিয়ে ওই এলাকার বস তার নাম হল 'পল' তার কাছে নিয়ে যায়। পল প্রথমে সন্দেহ করেছিল লিনাকে। কারণ এখানে তো কেউ ইচ্ছে করে আসতে চায় না। এইজন্য পলের সন্দেহ ছিল। কিন্তু লিনা ছিল খুবই বুদ্ধিমতি একটা মেয়ে। সে বলে আমি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে এসেছি। এইসব ভুলভাল বলে পলকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে।
এবার শুরু হলো আসল মিশন। টানটান একটি উত্তেজনাপূর্ণ সিন ক্রিয়েট হয় এরপর থেকে। কিন্তু পরের অংশটুকু পড়তে হলে অবশ্যই আমার ওয়ালে চোখ রাখুন। আমি ২ টি খন্ডে ভাগ করেছি পুরো মুভি রিভিউটি। প্রথম খন্ড আজ শেয়ার করলাম। পরবর্তী খন্ড খুব শীঘ্রই শেয়ার করব। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন সবাই, সুস্থ থাকবেন৷ আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ্ হাফেজ।
মুভি ট্রেইলারঃ-
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

হ্যারি পটার দেখার পর থেকেই এমা ওয়াটসন আমার পছন্দের একজন অভিনেত্রী। মুভির রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লাগলো । মুভি টা দেখে ফেলব এবার।
আশাকরি মুভিটা ভালোই লাগবে।
"দ্যা কলোনি" এই মুভি রিভিউটি যখন পড়ছিলাম তখন বারবার পাকিস্তানি বাহিনীর কথা মনে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল যেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বর্বর চিত্রগুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে। জানিনা ড্যানিয়েলকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা। কিন্তু তারা ড্যানিয়েলের ওপর অনেক অত্যাচার করছে। লিনা যেহেতু সেখানে পৌঁছে গিয়েছে আশা করছি পরবর্তী পর্বে আশার আলো দেখতে পাবো। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
যাক পাঠকের একটা আকর্ষণ ধরে রাখতে পেরেছি। এটাই সার্থকতা আমি খুব শিগগিরই দ্বিতীয় খন্ড শেয়ার করব। ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ নতুন একটি মুভির সন্ধান দেওয়ার জন্য।ক্রাইম থ্রিলার দেখতে দেখতে বোর হয়ে গেছি।এবার স্বাদ বদলাতে হবে এটা দিয়ে।
হুম,, ভালো লাগবে আশা করি।
ভাইয়া মনে হচ্ছে মুভিটি অনেক উত্তেজনা পূর্ণ হবে বিশেষ করে দ্বিতীয় খন্ডে। আসলে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও মিলিটারি বাহিনী যে অত্যাচার করেছিল। এক্ষেত্রে একই রকম ঘটনা ঘটেছে রাজাকার লোকটি যদি মিলিটারি বাহিনীকে বলে না দিত তাহলে লিনা ও ড্যানিয়েলের জীবনে এই পরিণতি আসতো না। তবে ড্যানিয়েল কে বাঁচানোর জন্য লিনার নিজেকে উৎসর্গ করে দেওয়ার ঘটনাটি খুব ভালো লেগেছে। দ্বিতীয় খন্ড দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
ভাইয়া 'দ্যা কলোনি' মুভিটির প্রথম খন্ডের রিভিউ পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। রিভিউটি পড়ে আমি অনেকখানি মিল পেয়েছি আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনীদের বিভিন্ন অত্যাচারের সাথে। এখন দেখার বিষয় লিনা ড্যানিয়েল কে কিভাবে মুক্ত করার প্রচেষ্টা করে। ভাইয়া পরবর্তী দ্বিতীয় খন্ড রিভিউটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।