একুশে বইমেলা( পর্ব- ৩ )!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
নালন্দা প্রকাশনীর স্টলে দাঁড়িয়ে আমি বইগুলো সব নেড়েচেড়ে দেখছি। বিশেষ করে বইয়ের নাম প্রচ্ছদ ভালো লাগলে পেছনের স্টোরি প্লট টা পড়ছি। আমাকে এভাবে পড়তে দেখে ঐ আপু আমাকে আরও কিছু বই সাজেস্ট করে। এরমধ্যে বেশ কিছু অনুবাদগ্রন্থ ছিল। জান্নাতুল নূর দিশা এর লেখা পুরুষ সাবিত্রী বইটা আমার মধ্যে একটা কৌতূহল এর সৃষ্টি করে। নামটা বেশ অদ্ভুত। তবে স্টোরি প্লট ছিল আমার পছন্দ হয়নি। এখানে অনেক টা নারীদের অধিকার এইরকম কিছু নিয়ে লেখা হয়েছে। আর এই ধরনের বই আমার খুব একটা ভালো লাগে না। তবে বইয়ের নামটা বেশ ইস্টারেস্টিং লেগেছিল আমার কাছে। এরপর আমি ইসমাইল হোসেন ইসমী এর লেখা দূরের আলো বইটা দেখি। এই বইয়ের প্রচ্ছদে বেশ কিছু পরিচিত দৃশ্য এবং মুখ ছিল।
এই বইটা বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া জুলাইয়ের গণঅভুত্থান নিয়ে লেখা। যেহেতু এইটা আমি পুরোপুরি নিজের চোখের সামনে থেকে দেখেছি এইজন্য খুব বেশি আগ্রহ দেখাইনি। তবে ঐ আপু বলে কিছু ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট আছে এটার মধ্যে। এরপর উনি আমাকে একটা রহস্যময় থ্রীলার উপন্যাস দেখাই। এটা অনুবাদগ্রন্থ। অগাথা ক্রিস্টি এর লেখা মার্ডার অন দ্যা অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস। বইয়ের বাংলা অনুবাদক এর নামটা আমার খুব একটা খেয়াল নেই। এইজন্য বলতে পারছি না। বইটার কাহিনী কিছুটা পড়ে বেশ ভালো লেগেছিল। তবে আমার উইসলিস্টে না থাকায় এই বইটা আমি নেয়নি। পাশেই আমার নজর যায় আরিয়ান শুভ এর লেখা ডানায় আগুন বইটার দিকে। এটার কাহিনী টা বেশ অদ্ভুত। এর আগে আমি আরিয়ান শুভ এর কোন বই পড়িনি। বইয়ের প্রচ্ছদ টা বেশ সুন্দর ছিল বলতে হয়।
দ্রোপদী নামটা আপনারা শুনে থাকবেন আশাকরি। বিশেষ করে যারা মহাভারত পড়েছেন তারা জানবেন। দ্রোপদী মহাভারতের সবচাইতে আলোচিত একটা চরিত্র। বলতে গেলে এই দ্রোপদির জন্যই কুরুক্ষেএের যুদ্ধ টা হয়েছিল। দ্রোপদী বইটার লেখক মাহমুদুর রহমান। মূলত বইটা লেখা হয়েছে দ্রোপদীকে নিয়ে। পুরো মহাভারত টা দ্রোপদীর ভাবনা থেকে লেখক বর্ণনা করেছেন। যেখানে দারুণ কিছু ব্যাপার উঠে এসেছে। পাশেই ছিল মাহমুদুর রহমান এর লেখা আরেকটা বই। এটাও মহাভারত এর ঘটনা নিয়ে লেখা। বইটার নাম পঞ্চকন্যা। মহাভারতের পাঁচজন বিশেষ নারী চরিএ হিড়িম্বা, গান্ধারী, সত্যবতী, সুভদ্রা এবং অম্বা। এই পাঁচ জন নারীকে নিয়ে উনি বইটা লিখেছেন। এরা সবাই মহাভারতের নারী চরিএ। তবে এরা মহাভারতে অনেক টা উপেক্ষিত বলা যায়। এইজন্যই লেখক বিশেষ ভাবে এই বইয়ে তাদের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন।
এরপর উনারা আমাকে সাইকোলজিক্যাল ফান্ট্যাসি এর আঙ্গিকে লেখা রবিন জামান খান এর আরেক বই দেখায়। এই বইটার নাম কাল পতঙ্গ। যাইহোক অনেক গুলো বই দেখে ফেলেছিলাম ততক্ষণে আমি। এরপর আমি যে বইটা সাইডে রেখেছিলাম মিথ্যার আড়ালে ঐটার দাম জিজ্ঞেস করি। উনারা আমাকে ২৫% ডিসকাউন্ট দিয়ে দাম বলে। বইমেলায় এর চেয়ে বেশি ডিসকাউন্ট আপনি পাবেন না। তবে অনলাইন বইয়ের পেইজগুলোতে অনেক কমে পাওয়া যায়। যাইহোক এরপর আমি বইয়ের দাম মিটিয়ে দিলে উনারা বইটা উনাদের প্রকাশনীর সুন্দর একটা ব্যাগে আমাকে দেয়। আমি বইটা আমার বন্ধুর হাতে দেয়। এবং এরপর আমি সামনের দিকে এগিয়ে যায়। আরও কয়েকটা স্টল নজরে আসে। তবে অন্য স্টলে যাওয়ার কোন ইচ্ছা তখন ছিল না। আমি তখন বাতিঘর প্রকাশনী স্টল নাম্বার ৫৮০ খুজতে থাকি।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার বইমেলায় ঘুরে ঘুরে বই ঘাটাঘাটির অভিজ্ঞতা পড়ছিলাম। বেশ সুন্দর সময় দিয়ে আপনি বই পছন্দ করেন। একটা কথা না বলে পারছি না সাধারণ মানুষ অনেকেই ভাবেন যে মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধটা দ্রৌপদীর কারণেই হয়েছিল। আসলে তা নয়। যুদ্ধ তো হতোই। দ্রৌপদী সামান্য উপলক্ষ। এবং যেকোনো নারীকে হয়তো সহজেই দোষ দিয়ে ফেলা যায় যেমন বাড়ির কোন সন্তান ভালো ফলাফল করলে তাকে বলা হয় বাবার সন্তান আর ভুল ত্রুটি কিছু করলে বলে যেমন মা তার তেমন ছা। যদিও আমি একেবারেই নারীবাদী মানুষ নয় এবং নারীবাদী কথাটাও সমর্থন করি না। আপনাকে মনে রাখতে হবে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের পর দূর্যোধন বা কৌরবদের ১৪ বছর সময় দেয়া হয়েছিল নিজেদের শুধরে নিতে। যা নিতান্তই কম নয়। পুরো হস্তিনাপুর নিয়ে যাদের সন্তুষ্টি ছিল না ইন্দ্রপ্রস্থও হস্তগত করতে চেয়েছিল। লোভটা তাদেরই বেশি অথচ কর্ম ক্ষমতা নেই। তাই দ্রৌপদীকে কখনোই দায়ী করা যায় না কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কারণে। হ্যাঁ দ্রৌপদীর প্রতি অন্যায়গুলোর শাস্তি দেখানো হয়েছে। যুদ্ধ তো হতোই।
অনেক সুন্দর একটা মুহূর্ত শেয়ার করেছেন বইমেলার। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে আপনার কাটানো পুরো মুহূর্তটা দেখে। বিভিন্ন রকম বইয়ের অনেক সুন্দর করে ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে বেশি ভালো লেগেছে। অপেক্ষায় থাকলাম আপনার পরবর্তী পর্বটা দেখার জন্য।
আপনার বইমেলার কাটানো সময়টি পর্ব করে সুন্দর ভাবে লিখছেন বলে ভালো লাগছে। বইমেলায় সময় কাটাতে ভীষণ ভালো লাগে। আসলে হাজার বইয়ের মধ্যিখানে থাকতে এক আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হয়। আমার তো কলকাতা বইমেলা শেষ হয়ে গেলে রীতিমতো মন খারাপ করে। বাংলাদেশের একুশে বইমেলাতেও আমি গিয়েছি। সেই মেলায় গিয়েও আমার খুব ভালো লেগেছিল। বিভিন্ন ধরনের সুসজ্জিত স্টল এবং বইয়ের আয়োজন আমায় আকর্ষণ করেছিল ভীষণ।