একটি ভালো কাজের অনুভূতি।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আবার এসেছি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।

team-spirit-g315a0d01c_1280.jpg

সোর্স pixabay

আমি এর আগেও কোন এক পোস্ট এ বলেছি আমি আমার আব্বা আম্মা ভাই বোন মানে আমার পরিবারের সবাই একই স্কুলে পড়াশোনা করেছি। আজ আমি আম্মার স্কুলের ফ্রেন্ডদের বেপারে কিছু কথা বলব। আম্মার স্কুলের ব্যাচ এর নাম হচ্ছে ৮৪ এর ব্যাচ। সেই ব্যাচের অনেকেই আজ প্রতিষ্ঠিত। তাদের স্পেশালিটি হচ্ছে ৮৪ সালের পর থেকে আজ ৩৯ বছর পরও তাদের সবার সাথে সবার যোগাযোগ আছে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা কিছুদিন পর পর গেট টুগেদার করে সবাই মিলে। আমি লাস্ট একটি প্রোগ্রামে গিয়েছি, সেখানে দেখলাম সবাই পরিবার নিয়ে গিয়েছে এবং সব মিলিয়ে ১৮৩ জন লোক হয়েছে। এত সুন্দর লাগছিল দৃশ্য টা বলে বোঝানো যাবে না। তাদের আরো স্পেশাল বেপার হচ্ছে তাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে কেউ যদি খুব বিপদে পরে এবং তারা সেটা জানে তাহলে বিপদগ্রস্ত পরিবারের অজান্তেই তারা ফান্ড কালেক্ট করে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফান্ড পৌঁছে দেয়। সেই সাহায্যের একটিতে আমি অংশগ্রহণ করেছি এবং তার অনুভূতি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

আজ সকালে আমার আম্মা ফোন দিলেন। আম্মার সাথে সাধারণত আমার কথা হয় বিকেলের দিকে। সকাল সকাল ফোন পেয়ে ভাবলাম কোন ঝামেলা হল কিনা আবার । ফোন দিয়ে বললেন আম্মার এক বান্ধবী বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে হাসপাতালে আছেন। উনার শাসনালি এবং কণ্ঠনালি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। উনি ঢাকায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। উনার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন । সেই টাকা আম্মার স্কুলের ব্যাচের ফ্রেন্ডরা সবাই মিলে সংগ্রহ করছে। আমাকে আম্মা বললেন তুমি কিছু টাকা পাঠাতে পারবে? আমি আম্মা কে বললাম বদরুল আংকেল কে পাঠাতে হবে? আমি আগে থেকেই বদরুল আংকেল বলেছি কারণ আমি এর আগেও কয়েক বার উনার কাছে বিভিন্ন প্রোগ্রামের টাকা পাঠিয়েছি। আম্মা বললেন হ্যাঁ বদরুল সবার টাকা সংগ্রহ করে কাল সকালে বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে আমি রাতের মধ্যেই টাকা পাঠিয়ে দিব।

শুক্রবার দিনের বেলা অনেক কাজ থাকে তাই সারাদিন টাকা পাঠানো হয়নি। আপনারা জানেন আমি শুক্রবার পরিবার নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করি আজও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আজকের বের হওয়ার ব্যাপারটা অন্য দিন শেয়ার করব। বাসায় ফেরার পথে বিকাশের দোকানে গিয়ে নিজের পার্সোনাল একাউন্টে টাকা লোড দিয়ে বাসায় ফিরেছি। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বদরুল আংকেল কে ফোন দিয়েছি বিকাশের নাম্বার কনফার্ম করার জন্য। আংকেল ফোন রিসিভ করেই বললেন টাকা পয়সা লেনদেনের সময় শুধু তোমার সাথে কথা হয় অন্য সময় ত ফোন দাও না। আমি বললাম এটাও ত ভালো যে আপনার সাথে আমার কথা হয়। আমি নাম্বার কনফার্ম করে ফোন রেখে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। আংকেল আমাকে কনফার্ম করলেন টাকা এসেছে। বিশ্বাস করেন টাকাটা পাঠিয়ে আমারই শান্তি লাগছিল তাহলে আমার আম্মার কেমন হবে অনুভূতি সেটা ভেবেই ভালো লাগছিল। এই অনুভূতিটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করে খুব ভালো লাগছে।

দোয়া করি সেই আন্টি যেন সুস্থ হয়ে যায়। উনার পরিবারের সবাই যেন উনার পাশে থাকেন এই আশা করছি।

আসলে প্রত্যেকটি মানুষ যদি তার পাশের মানুষটির কিছুটাও খোঁজ রাখত এবং যতটুকু সম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত তাহলে সমাজ টা আরো সুন্দর হয়ে উঠত।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার আজকের লেখাটি পড়ে। এভাবে যদি সমাজের সব মানুষগুলো সবার বিপদে এগিয়ে আসতো তাহলে হয়তো সমাজটা বেশ সুন্দর হতো। আমার শত ব্যস্ততার মধ্যেও মায়ের বান্ধবীর জন্যও নিজে টাকা পাঠানোর বিষয়টি আমার বেশ ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

আপনার আম্মু ওনার ফ্রেন্ড দের সাথে এখনো সম্পর্ক খুব সুন্দর ভাবে রেখেছে এটা জেনে ভীষণ ভালো লেগেছে ভাইয়া। ওনাদের সবার একে অপরের সাথে যোগাযোগ আছে তাহলে। আর ওনারা কিছুদিন পর পর সবাই মিলে গেট টুগেদার করেন এটা জেনে তো আরো বেশি ভালো লেগেছে। সবাই মিলে একসাথে হওয়ার পরে প্রায় 183 জন হয়। দোয়া করি যেন আপনার আম্মুর যে বান্ধবীটা অসুস্থ উনি যেন সুস্থ হয়ে পড়েন এবং ওনার ফ্যামিলির মাঝে আবারও হাসিখুশি ভাবে জীবন যাপন করতে পারেন।

 2 years ago 

ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। আপনি আপনার আম্মুর এক বান্ধবীর চিকিৎসার জন্য সাহায্য করেছেন। এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আমাদের সবার উচিত কাছের মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো। এতে করে সৃষ্টিকর্তাও সন্তুষ্ট হয় আমাদের প্রতি। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96239.49
ETH 2782.12
SBD 0.67