।।আজ রইল বাঙালির একদিনের ভ্রমণ গন্তব্য, দীঘা।।
।।চলুন বন্ধুরা। ঘুরে আসি দীঘা।।
নমস্কার বন্ধুরা। সবাই আশা করি ভালো আছেন। কলকাতার গরম যেন অসহ্য হয়ে উঠেছে। গ্লুকোজের জল আর ছাতা ছাড়া রাস্তায় হাঁটা দায় হয়ে উঠেছে৷ এর মধ্যে চলছে গরমের ছুটি৷ পোশাকি ভাষায় গ্রীষ্মাবকাশ। এই ছুটি যেন সকলের কাছে নষ্টালজিয়ার মতো। স্কুলে কলেজে পড়ার সময় গ্রীষ্মাবকাশে কোথায় যাওয়া হবে তার প্রস্তুতি যেন তিন মাস আগে থেকেই করা হয়ে যেত। আর তার তোড়জোড় হত হৈহৈ করে৷ কখনো পুরী, কখনো দীঘা অথবা দার্জিলিং। আর মাঝেমাঝে সময় সুযোগ পেলে সিকিম, সিমলা, কাশ্মীর তো আছেই৷
আমরা যারা স্কুলে চাকরির সাথে যুক্ত আছি, তারা আজও এই নষ্টালজিক ছুটির সুযোগ পেয়ে থাকি৷ আর এই ছুটির সময়টা যেন বহু প্রতীক্ষিত। এবারেও চলছে স্কুলের গ্রীষ্মের ছুটি। হঠাৎ ঠিক করলাম একদিনের জন্য ঘুরে আসি দীঘা। পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রধান সৈকত শহর দীঘা। বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলে এ এক মনোরম ভ্রমণ কেন্দ্র। ভ্রমণ পিপাসুদের ভীষণ পছন্দের ঠিকানা। সময় সুযোগ পেলেই বাঙালি পৌঁছে যায় সেখানে। আর সমুদ্র সৈকতে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে দাপাদাপি করে কাটায় কিছু মূল্যবান মুহূর্ত। কম টাকায় মনের মত টুরিস্ট লোকেশন হিসাবে দীঘার তুলনা নেই৷ কলকাতা শহর থেকে মাত্র ১৮৫ কিলোমিটার পথ। আর যাবার জন্য উপায় একাধিক। প্রতিদিন একাধিক ট্রেন, বাস সময়মত পৌঁছে যাচ্ছে বাঙালির প্রিয় দীঘা বীচে৷ একদিন বা দুদিনের ছুটিতে তাই দীঘা সবসময়ই বাঙালির সেরা গন্তব্য। বাঙালির বিখ্যাত দীপুদা (দীঘা পুরী দার্জিলিং) বলে কথা। আমার কাছেও যথারীতি ভীষণ প্রিয়৷ নির্জন ঝাউবন আর সুউচ্চ বালিয়াড়ি এখানকার প্রধান বৈশিষ্ট্য। এরমধ্যে দীর্ঘ সৈকত ও সমুদ্র গর্জন তো আছেই।
গত ৫ই মে আমিও পৌঁছে গেছিলাম দীঘা সমুদ্র সৈকতে। মাত্র একদিনের ছোট ট্রিপ। তাতেই কত আনন্দ। কত মজা। আসুন আমার অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের দীঘা সম্বন্ধে কিছু তথ্য দিই।
যাতায়াত
দীঘা যাওয়া ভীষণ সহজ। দিনে দুটি এক্সপ্রেস ট্রেন হাওড়া থেকে ছেড়ে যায় দীঘার উদ্দেশ্যে। প্রথমটি সকাল ৬-৪৫ মিনিটে। তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস৷ আর দ্বিতীয়টি দুপুর ২-২৫ মিনিটে। কাণ্ডারী এক্সপ্রেস৷ সময় লাগে কমবেশি সাড়ে তিন ঘন্টা। ভারতীয় মুদ্রায় নন এসিতে ভাড়া ১০০ টাকা এবং এসিতে ৩৮০ টাকা। এছাড়াও কলকাতার ধর্মতলা থেকে, করুণাময়ী থেকে ও হাওড়া স্টেশন থেকে আর পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন শহরতলি থেকে (কল্যানী, বারাসাত, শ্রীরামপুর, বারুইপুর, বর্ধমান ইত্যাদি) অনেক বাস প্রতিদিন পৌঁছে দেয় দীঘা। কলকাতা থেকে বাসে চার থেকে সাড়ে চার ঘন্টা বরাদ্দ। খরচ আওতার মধ্যেই।
মাথা গোঁজার ঠাঁই
দীঘায় থাকবার জন্য দুটি জায়গা। নিউ দীঘা ও ওল্ড দীঘা। দুটি জায়গাতেই অসংখ্য হোটেল। সি বীচের সামনে হলে দাম একটু বেশি৷ আর ভেতরে কম বেশি সবরকম মিলিয়ে মিশিয়ে রয়েছে। সাধ্যমতো একটা বুকিং করে নিলেই হল৷ পৌঁছেও হোটেল বুক করা যায়, তবে শনি রবি বা ছুটির দিন হলে দাম ও চাহিদা উভয়েরই পারদ চড়তে থাকে। সমুদ্রের পাশে সাধ্যের মধ্যে থাকার জন্য ওল্ড দীঘায় হোটেল সি ভিউ এবং নিই দীঘায় হোটেল রাণীকুঠি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য। ফোন নম্বর ইন্টারনেটে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন খুব সহজে। বুকিং করে চলে যেতেই পারেন পরিবার বা বন্ধুদের সাথে নিয়ে। হোটেল সি ভিউতে থাকবার খরচের মধ্যে পাবেন কমপ্লিমেন্টারিটি ব্রেকফাস্টও।
ইতিহাস ফিসিফিস কথা কয়

দীঘার আগের নাম বীরকুল। জায়গাটি দেখার পর স্বয়ং ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলার ব্রাইটন বলে উল্লেখ করেন। মেদিনীপুর জেলার এই সমুদ্রতট সাহেবদের প্রিয় জায়গায় পরিণত হয় খুব সহজেই। এরপর বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় জন ফ্র্যাঙ্ক স্নেইথ নামক কলকাতার এক ব্যবসায়ী সাহেব সেখানে বসবাস শুরু করেন। তখন থেকেই দীঘা হয়ে উঠতে শুরু করে বাঙালির প্রিয় গন্তব্য। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী বিধান চন্দ্র রায় দীঘার উন্নয়নে অগ্রণী ভুমিকা নেন। দীঘা হয়ে ওঠে বাংলার অন্যতম সেরা এক পর্যটন কেন্দ্রস্থল।
বেরিয়ে পড়ুন ঘুরে দেখতে
সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি আমি এইবারেও গিয়ে ঘুরে দেখলাম দীঘার বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানগুলো। যতবারই যাই, ততবারই জায়গাগুলো ঘুরে আসি ভ্যান বা টোটো বুক করে। যেমন ভোর বেলা রোদ ওঠার আগে ঘুরে আসতে পারেন দীঘা মোহনা থেকে। যেখানে চম্পা নদী সমুদ্রে এসে পড়েছে। অসাধারণ জায়গা। সাথে চোখের সামনে দেখে নিন মাছ ধরার হালহকিকত৷ প্রচুর ট্রলার এই জায়গায় জড়ো করা থাকে। সারা বাংলায় মাছ সরবরাহের একটি প্রধান বন্দর এটি৷ যদিও মাছের তীব্র গন্ধ আপনাকে কিছুটা বিড়ম্বনায় ফেলতে পারে বৈকি। তবে মোহনার প্রাকৃতিক শোভা আপনার মন ভালো করে দেবে। এছাড়াও যেতে পারেন দীঘা থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে উড়িষ্যা বর্ডার পেরিয়ে তালসারি সমুদ্র সৈকতে। সেটি সুবর্ণরেখা নদীর মোহনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুবিদিত। কাছেই আছে চন্দনেশ্বর শিব মন্দির। ঘন্টাখানেকের ট্যুরে ঘুরে আসতেই পারেন সেখান থেকে। হাতে একটা দিন সময় থাকলে গাড়ি নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন নিকটবর্তী উদয়পুর, তাজপুর আর শঙ্করপুর সৈকত থেকেও৷ উদয়পুর বীচে লাল কাঁকড়ায় সমারোহ আপনার পয়াসা উশুল করে দেবে। শঙ্করপুর পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রধান মৎস্য বন্দর। যেখান থেকে রোজ সারা বাংলায় মাছের সরবরাহ হয় রোজ।
এছাড়াও দীঘা শহরেই আছে মেরিন অ্যাকোরিয়াম, সায়েন্স সেন্টার, কাজল দিঘি (টয় ট্রেন রাইড) ও অমরাবতী পার্ক। এগুলো সব ঘুরতে এক বেলা বরাদ্দ রাখতে হবে। অমরাবতী পার্কে রোপওয়ে ও বোটিং রয়েছে। শিশুদের কাছে যা খুব মনোরঞ্জনের।
পেট পুজোর খবরাখবর
দীঘায় যাবেন আর সৈকতে মাছ খাবেন না এমন যেন না হয়। চিঙড়ি, ভেটকি, পমফ্রেটের এখানে ওঢেল সম্ভার। একাধিক দোকান সমুদ্রতটে আপনার চাহিদামতো ভেজে খাওয়াবে এইসব জিভে জল এনে দেওয়া মাছ ভাজা। বিকেলে ওল্ড দীঘার সৈকতে সমুদ্রের পাড়ে পা ঝুলিয়ে ঠোঙায় মাছ ভাজা খাবার অনুভূতি ভাষায় ব্যক্ত করবার নয়। আমরা নিয়েছিলাম ভেটকি। আপনারা যে কোনো মাছেরই স্বাদ নিতে পারেন। দীঘায় রেস্তোরাঁর অভাব নেই৷ সব ধরনের খাবারই সহজলভ্য। তাই কোনো ভ্রমণপিয়াসু মানুষেরই এখানে খাওয়ায় অসুবিধা হওয়ার কোনো সুযোগই নেই।
কিন্তু সাবধান
তবে দীঘায় সমুদ্র স্নান করবার বিষয়টায় সাবধানী হবেন। সমুদ্রের পাড়ে প্রচুর বড় বড় পাথর। পাড় বেঁধে রাখার জন্য বোল্ডার ফেলা রয়েছে। তাই একমাত্র ভাঁটার সময়েই স্নানের যোগ্য বালির বীচ দৃশ্যমান হয়। সুতরাং জোয়ারের সময় কখনোই স্নান করবার ঝুঁকি নিতে যাবেন না সাহস দেখিয়ে। বিপদ বলে আসে না। আর বেড়াতে গিয়ে আপনার ছোট্ট একটা ভুল যেন আপনার পরিজনের কান্নায় না পরিণত হয়। তাই আনন্দ করুন, কিন্তু সাবধানতা আগে।
তবে শেষ করি
কম খরচে একটা সুন্দর উইকেন্ড ডেস্টনেশন হিসাবে দীঘার জুড়ি মেলা ভার। আমার মতো আপনিও ঘুরে আসতে পারেন বাংলার এই সমুদ্র সৈকতে। দৈনিক কর্মব্যস্ত জীবনে দুদিনের এই ভ্রমণ আপনার অক্সিজেন সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। আর ফিরে এসে তরতাজা মনে আবার ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবেন দৈনিক ব্যস্ততার জীবনে। সাথে রয়ে যাবে দীঘার সাগর সৈকতের টাটকা স্মৃতি আর বালুচরে ফেলে আসা দু একটা রঙিন দিন। ফিরে আসার জন্য বাসে বা ট্রেনে অগ্রিম বুকিং অবশ্যই করে রাখবেন। তাহলে আর সময় নষ্ট কেন। চট করে বেরিয়ে পড়ুন আর ঘুরে আসুন দীঘা।
(সব চিত্রগ্রহণ আমার ইনফিনিক্স হট ৩০ মোবাইলের সৌজন্যে।)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার সহ সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
এইতো কদিন আগেই দীঘা সমুদ্র সৈকত থেক
ঘুরে এলাম। দাদা তোমার পোস্ট পড়তে গিয়ে সব স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে এলো। তবে তোমার এই কথাটির সাথে আমি সহমত
পোষণ করছি। সবার আগে আমাদের সাবধানতা কে গুরুত্ব দিতে হবে। 💕
হ্যাঁ। দীঘায় বেপরোয়া স্নান করতে গিয়ে দুর্ঘটনা যেন বেড়েই চলেছে৷ আসলে জোয়ারের সময়ে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে, আর তখন বেপরোয়া স্নান খুব বিপদজনক হয়ে ওঠে। তাই দীঘার সমুদ্রে স্নানের সময় বিচার ও পরিস্থিতি বিচার খুব জরুরী। আর পরিজনের নিরাপত্তার আগে কিছুই হতে পারে না৷ তুমিও ভালো থেকো। সাবধানে থেকো।
ওয়াও দাদা ছুটি পেয়ে দীঘাতে ঘুরতে গিয়ে বেশ ভালোই করেছিলেন। শুনেছি কলকাতার দিঘা অনেক বড় সমুদ্র শুনেছি কলকাতার দিঘা অনেক সুন্দর এবং বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত। কয়েকদিন আগেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে আসলাম সত্যি বলতে সমুদ্রের বিশালতা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এই জায়গাটিতে আমার যাওয়ার খুব শখ আছে যদি কখনো ইন্ডিয়া যাই। অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন এবং সেটা আমাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেছেন পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা।
অবশ্যই দীঘা আসুন। দীঘা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান ভ্রমণ গন্তব্য। এছাড়াও কলকাতা নিজেই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি আকর্ষণ। তাই পশ্চিমবাংলা ট্যুরে আসতেই পারেন এবং কলকাতা, দীঘা, দার্জিলিং, মুর্শিদাবাদ, শান্তিনিকেতন এইসব জায়গা ঘুরে যেতেই পারেন। আমাদের দুই বাংলায় আজও আবেগ ও মনন বাঁধা আছে৷ কাঁটাতার তৈরি হয়, কিন্তু মননের বিভাজন হয় না।
এক সময় দীঘা যেতাম সারাদিন ঘুরে রাতে বাড়ি চলে আসতাম৷ তারপর জানলাম বাঙালির দিপুদা সম্পর্কে৷ আমি জীবনে একবারই দীঘায় থেকেছি৷ তোমার পোস্টের ডিটেলিং দেখে মনে হয় আবারও দীঘাতে গিয়ে রাতে থাকি৷ আগে এই মাছের দোকান বা বিরাট মার্কেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসত৷ এখন সবটাই ভীষণ গোছানো৷
খুব ভালো লিখেছ৷ উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হিসেবে উপকূলীয় অঞ্চল দীঘা বাঙালির কাছে আবেগ৷
একই জেলায় বাড়ি হলে তো তেমনই হয়। সকালে গিয়ে বিকেলে আবার ঘরে ফেরা। কিন্তু এইবার রাতের সৈকত খুব ভালো লাগছিল। খালি আর বিস্তৃত বেলাভূমির সৌন্দর্য। সেই ছবিটাই শেয়ার করেছি এই লেখার সাথেই। তোমার কমেন্ট পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। লেখার অনুপ্রেরণা যেন। ভালোবাসা রইল।
আনন্দম বন্ধু৷ এভাবেই লিখে চলো৷