[ফোটোগ্রাফি পোস্ট] বাগবাজারের গঙ্গার কাছে কুমোরটুলিতে একদিন - পর্ব ০২
আজ আবার এসে গিয়েছি আমার কুমোরটুলিতে ঘোরাঘুরির ফোটোগ্রাফি নিয়ে । এই স্থানটি ঘিঞ্জি, নোংরা এবং জরাজীর্ণ হলেও এর শিল্পনির্মাণের স্থানগুলি তাক লাগানোর মতো । খুব আনন্দ পেয়েছি এই স্থানটিতে ঘুরতে এসে । আমি একজন শিল্পপ্রেমী মানুষ । তাই শিল্পের প্রতি আমার আকর্ষণ থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক ।
কুমোরটুলি হলো মৃৎশিল্পের এক স্বর্গ । এখানকার মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশই কিন্তু স্থানীয় নয় । পলাশী যুদ্ধের কিছুটা পূর্বে নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর থেকে দলে দলে মৃৎশিল্পীরা এসে সুতানুটিতে গঙ্গার ধারে এই স্থানে তাদের বসতি গড়ে তোলে । গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চল বেছে নেওয়ার কারণ হলো মাটির সহজলভ্যতা । মৃৎশিল্প তৈরিতে প্রধান উপাদানই হলো মাটি । আর নদীর পলিমাটি হলো এসব ক্ষেত্রে সর্বোৎকৃষ্ট । তাই গঙ্গার তীরবর্তী এই স্থানে পত্তন হয় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের অন্যতম বৃহৎ মৃৎশিল্পের কারখানা।
মূর্তি তৈরির জন্য যে মাটি লাগে সেটা কুমোররা সংগ্রহ করে গঙ্গা থেকে । ভাঁটির সময়ে যখন গঙ্গার জল অনেকটা নেমে যায় তখন তার বুকে বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে চর জাগে । এই চর থেকে পলিমাটি সংগ্রহ করে এনে সেগুলো রোদে ভালো করে শুকিয়ে পলিথিনের ব্যাগে করে সংরক্ষণ করা হয় ।
এরপরে যখন শিল্প গড়ার সময় আসে তখন সেই শুকনো মাটির ঢেলা ভেঙে গুঁড়িয়ে চালুনি দিয়ে মিহি গুঁড়ো আলাদা করা হয় । এরপর সেই মিহি মাটির গুঁড়োর সাথে পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে এরপরে এর সাথে তুষ আর খড়ের কুচি মেশানো হয় পরিমাণ মতো । এই ভাবেই প্রস্তুত হয় মৃৎশিল্প কর্মের উপযোগী মাটি ।
আজকে বেশ কিছু ফটো শেয়ার করেছি কুমোরটুলির মৃৎশিল্পের ষ্টুডিওগুলোর । তো চলুন দেখে নেওয়া যাক সেসব । আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের ।