অসুস্থতার মাঝে, একটু খেয়াল অনেক মূল্য রাখে! In the midst of illness, a little care is worth a lot!

in Incredible India13 days ago
1000049104.png

যারা আমার লেখায় খানিক নজর রাখেন তারা হয়তো জানবেন শারীরিক দিক থেকে কতখানি লড়াই আমাকে করতে হয়েছে বিগত দিনগুলিতে!

তাও লড়াইটা লড়েছি একলা, এবং শারীরিক অবস্থা অবনতির জন্য কমিউনিটি তথা নিজের দায়িত্বে কোন ফাঁক রাখিনি।

তবে, অতিরিক্ত ওষুধ খাবার ফলে, বর্তমানে বড্ডো বেশি এনার্জির অভাব বোধ করছি, সাথে খানিকক্ষণ একটু দাড়িয়ে থাকলেই মনে হচ্ছে মাথা ঘুরে পড়ে যাবো।

যেদিন ফ্ল্যাটের মিটিং ছিল, সেদিন আমার শারীরিক পরিস্থিতি দেখে বড়রা দাড়িয়ে থেকে আমাকে বসার চেয়ার দিয়েছিলেন।

আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বাধ্য হয়ে বসে পড়েছিলাম।
এবারের সমস্যার কারণ অনাহার, সাথে কড়া ওষুধ সেবন খালি পেটে।

যাইহোক, নিজের সমস্যা নিজেকে মেটাতে হবে, বিগত বছরগুলোতে এই শিক্ষাই পেয়েছি বাস্তব জীবন থেকে!

অন্যের বিপদে আপনাকে পাশে পাবার আশা অনেকেই রাখবেন, কিন্তু নিজের বিপদে একই ইচ্ছে প্রকাশ রীতিমত অপরাধ!

যাক! কথায় আছে যার কেউ নেই তার সাথে সৃষ্টিকর্তা আছেন।
যেকোনো লড়াই কখনোই একলা আসে না, যখন লড়াই আসে তখন সব দিক থেকেই।

এই শরীর নিয়ে প্লাম্বার্ ডেকে কাজ করিয়ে যেমন ইঁদুরের সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে হয়েছে, তেমনি সেইদিন ঐ শরীর নিয়ে একবার নয় তিনবার ঘর মুছতে হয়েছে!

কারণ, ইঁদুর এতখানি নোংরা করে রেখেছিল যে সেসব পরিষ্কার না করে উপায় ছিল না।
আগেও জানিয়েছি, একলা হাতে শারীরিক, মানসিক তথা আর্থিক দিক সামলাতে গিয়ে এমাসে আমার নাজেহাল অবস্থা!

মন্দের ভালো এত খরচের মাঝে খুব কাছের বিশেষ একজন আজকে আমাকে রীতিমতো সারপ্রাইজ দিয়েছেন!

তখন বেলা বাজে সকাল সাড়ে এগারোটা।
আজ বৃহস্পতিবার, কাজেই ঘরের কাজ থাকেই।
একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন পেলাম, আজকাল অচেনা নম্বর ধরতে বেশ ভয় পাই, এত ফ্রড কল আসে।

যাইহোক, ফোন ধরতেই বললো, ম্যাডাম আপনার দরজার বাইরে দাড়িয়ে আছি একটা পার্সেল আছে, দরজাটা খুলুন!

আসলে অনলাইন থেকে সবসময় কিনলে মোটামুটি ঠিকানা ওদের মুখস্ত হয়ে যায়!

1000049089.jpg
1000049088.jpg
1000049091.jpg
উপহার!

আমি দরজা খুলতেই পার্সেল পেলাম, কাগজ খুলে দেখলাম, আমার জন্য ১.২ কেজি ড্রাই ফ্রুট এবং নাট পাঠানো হয়েছে!

বুঝেই গিয়েছিলাম কার কাজ! তবে জানতাম ঐ সময় ফোন করলে পাবো না!

তাই আগে ঘরের কাজ সেরে, ভাবলাম ঠাকুরের সাথে আজ প্রসাদ হিসেবে উপহার ভাগ করে নি!
সেটাই করলাম, এবং প্রসাদ হিসেবে পেলাম ড্রাই ফ্রুট এবং নাট!

বিষয়টি হলো, যেহেতু আমি রান্নার সময় পাইনা বললেই চলে, তার উপরে সেটা করতে হলেও বাজারে গিয়ে সমস্ত আমাকেই বিয়ে আনতে হবে, বর্তমানে সেই শারীরিক শক্তি আমার তলানিতে।

কোন রকমে যে কাজগুলো না করলেই নয়, সেগুলোই করছি।
তবে, লেখায় ফাঁকি দিয়েছি এটা কেউ বলতে পারবেন না!

ছবিতে দেখতেই পাচ্ছেন, এই মিক্সড ড্রাই ফ্রুট এবং নাট এর মধ্যে আছে খেজুর, কিসমিস, ব্ল্যাক কারেন্ট, অ্যালমনড, কাজু।

সারাদিন ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না হলে এই খাবার ততক্ষণাৎ এনার্জির জোগান দেয় শরীরে।

কেবলমাত্র শারীরিক অসুস্থতার কারণে নয়, ছোট থেকে বড় সকলের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় উপরিউক্ত উল্লেখিত জিনিসগুলো রাখা প্রয়োজন।

সত্যি বলতে এখনও শরীরের পরিস্থিতি যা অবস্থা পারতপক্ষে কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে, মুখ বুজে দৈনন্দিন কাজ সমাধা করে যাচ্ছি!

কিছু সময় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি, আবার নিজেকেই নিজে উদ্বুদ্ধ করছি!
আর এটা যে কেবল এই মুহূর্তের পরিস্থিতির জন্য করছি সেটা কিন্তু নয়, এই লড়াই আমার বহু পুরনো, তাই হয়তো আজকাল ক্লান্ত হয়ে পড়ছি একটু তাড়াতাড়ি।

1000049100.jpg
1000049101.jpg
বর্তমানে এই একটি রক্তের সম্পর্ক অবশিষ্ট - আমার একমাত্র দিদি, একেবারে এক মায়ের পেটের!

তবে, গতকাল আমার দিদি ফোন করে প্রায় এক ঘণ্টা আমাকে অনেক মোটিভেট করেছে, আমি জানি ওর লড়াইটাও কম কঠিন নয়!

বাস্তব লড়াইটা আমাদের কারোরই কম নয়, তাই একে অন্যকে সময় সময় জ্ঞান দিয়ে পরে নিজেরাই হাসি, কারণ ঐ মায়ের কাছে মাসির গল্পের মতো হয়ে যায় আমাদের বিষয়গুলো, সবটাই জানা তবুও নতুন করে বলা, আর শোনা!

কালকে দুজনেই অনেক পুরনো স্মৃতি আওড়ালাম, সেই আমাদের আলোচনা ঘিরে ফিরে মাকে নিয়েই।

তারপর কি কি হয়েছে এই সমস্ত আর কি!
যাক, এক মায়ের পেটের একটা সম্পর্ক এখনও অক্ষত আছে, এটাই প্রাপ্তি।

তবে শেষ পাতে বলে যাই, সংসারের পাশাপাশি নিজেদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেবেন, আমার যেমন নেবার কেউ নেই, তেমনি যাদের আছে, তাদের ক্ষেত্রেও অন্যের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেদের খেয়াল রাখাটা কতখানি কষ্টকর সেটা আমি বুঝি।

এই একটা ক্ষেত্রে স্বার্থপর হলে সৃষ্টিকর্তা রাগ করেন না, কারণ কথায় আছেই আপনি বাঁচলে বাপের নাম! কি বলেন?

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 13 days ago (edited)

এটি একটি প্রেরণাদায়ক এবং হৃদয়স্পর্শী পোস্ট।

আপনি যেমন বলছেন, অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানো সহজ, কিন্তু নিজের বিপদে সেই সাহায্য পাওয়া কঠিন।

আপনার উপরের এই কথাটুকু একদম ১০০% সত্য দিদি।
আপনার লেখার মধ্যে সংগ্রামের গল্প রয়েছে,তা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখে যেভাবে আপনি নিজের শক্তি ও সাহস ধরে রেখেছেন, তা সত্যিই এক মহান দৃষ্টান্ত। স্বাস্থ্যহীনতার মধ্যে থেকেও আপনি কীভাবে জীবনকে সংগ্রামের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন, তা একেবারে অনুকরণীয়।
এছাড়া, আপনার দিদির ফোন কল এবং পুরনো স্মৃতিগুলি আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আপনাকে আরও শক্তি জোগায়। পরিবার এবং ভালো মানুষের সান্নিধ্য ছাড়া কিছুই পূর্ণতা পায় না।

আপনার কাছ থেকে এমন ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা আমাদের শেখায় যে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যায়ন করতে হয় এবং কখনোই হাল ছাড়তে হয় না। বিশেষ করে যখন শরীরের অবস্থা খারাপ থাকে, তখনও মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আপনার জন্য, আপনি যেন অতি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠেন এই দোয়াই রইল।

 11 days ago 

জীবনের আরেক নাম যুদ্ধ! আর সেটা যে কেবলমাত্র আমি করছি এমনটা নয়, বরঞ্চ খুঁজলে এবং একটু আশেপাশে নজর ঘোরালে দেখ যাবে, অনেকের লড়াই হয়তো আমার চাইতে এবং অন্যান্য অনেকের চাইতে অধিক।

তবে, প্রত্যেকের লড়াই করবার ধরন ভিন্ন! বেশিরভাগ মানুষ হাল ছেড়ে দিতে অভ্যস্ত আর মুষ্টিমেয় মানুষ লড়াইটা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আমাকে একদিন একজন বলেছিলেন, হার মেনে নেওয়া সহজ কাজ, আর সহজ কাজ সবাই করতে পারে, তুমি করো না।

আমার জীবনে যেমন লড়াইয়ে অভিজ্ঞতা আছে তেমনি কিছু মানুষের অনুপ্রেরণার শব্দ আছে, যেগুলো আমার লড়াইয়ের পাথেয় বলতে পারেন।

 11 days ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন,জীবনের আরেক নাম যুদ্ধ। এত সুন্দর একটি উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার লেখাটি অনেক মূল্যবান যা জীবনের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন।

Loading...
 12 days ago 

আপনার লেখা পড়ে সত্যিই হৃদয় ছুয়ে গেল দিদি। শারীরিক কষ্টের মাঝেও যেভাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সেটা প্রশংসনীয়। উপহারের এই ছোট্ট মুহূর্তগুলো সত্যিই মনে প্রশান্তি আনে।আপনার দিদির মত আপনজনেরা পাশে থাকুক সবসময়, আর আপনি শক্ত থাকুন। নিজের যত্ন নেবেন কারণ আপনি ভালো থাকলেই চারপাশও ভালো থাকবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল

Loading...
 11 days ago 

আপনার কথাগুলোর সাথে আমি একমত, এর সমাজে বিপদে সবাই আপনাকে পাশে যাবার ইচ্ছে পোষণ করবে, কিন্তু আপনার বিপদে ওই সকল মানুষদেরকে পাবার আশা করাটা খুব বেশি একটা শ্রেয় নয়। তবুও মানুষকে ভালবাসতে হবে সবার বিপদে পাশে দাঁড়াতে হবে।

আপনি বেশ কয়েকদিন যাবত অসুস্থ সেটা আপনার কয়েকটা পোস্টেই উল্লেখ ছিল, দিদি আপনি একটু নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন। এত পরিমান দুশ্চিন্তা অনিহার ইত্যাদি আপনার শরীরকে আরো খারাপ করে দেবে আরো দুর্বল করে দেবে।

নিজের প্রতি একটু যত্নশীল হবেন, আপনি অসুস্থ হয়েও আপনার দায়িত্ব পালন করছেন তবে নিজের সুস্থতা ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দোয়া করি আপনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন আর সারপ্রাইজ টা কিন্তু খুব ভালো ছিল 🖤🖤

If you don’t survive, how will you carry your father’s name

When it comes to our health, I really don’t know why we always pay less attention to it. Because of our quest for money, we neglect our health forgetting that “health is wealth”. Even me talking, I’m not an exception.

I’m so sorry about what you have been going through. I pray you get back on your feet feeling very healthy again and I must give it to you, you’re indeed a very strong woman to be very active on Steemit despite what you are going through

 9 days ago 

অন্যের বিপদে আমরা ঠিকই দৌড়ে গিয়ে তার পাশে দাঁড়াই, কিন্তু নিজের বিপদে কাউকে পাশে পাওয়ার চিন্তাভাবনা করাটা একেবারেই বোকামি। এটা অনেক বড় একটা অপরাধ। এটা বর্তমান সময়ে এসে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। আপনি কতটা অসুস্থ আছেন বা বিগত দিনে ছিলেন সেটা মোটামুটি আমাদের জানা রয়েছে। কিন্তু আপনি আপনার কাজের প্রতি কখনো অবহেলা করেন না, এটাও আমরা জানি।

যাক! কথায় আছে যার কেউ নেই তার সাথে সৃষ্টিকর্তা আছেন।
যেকোনো লড়াই কখনোই একলা আসে না, যখন লড়াই আসে তখন সব দিক থেকেই।

আসলে এটা একেবারেই বাস্তব যার কেউ নেই তার সৃষ্টিকর্তা আছে। তিনি কখনোই মানুষকে ছেড়ে দেয় না হয়তো বা কিছুটা সময়ের জন্য ছাড় দেয়। বিপদ যখন আসে তখন প্রতিটা দিক থেকেই মনে হয় ঘিরে ধরে। তারপরেও আমরা চেষ্টা করি সবকিছু সমাধান করে, আবারও সামনের দিকে এগিয়ে চলতে।

আপনার বড় বোন আছে কোন বিপদে বা কোন সমস্যায় পড়লে, উনি আপনাকে মোটিভেট করে আবার উনি যখন কিছু সমস্যায় পড়েন। তখন আপনি তাকে মোটিভেট করে, এটাই তো বড় পাওয়া। আসলে মেয়েরা যতই গল্প করুক না কেন? দিন শেষে তাদের মা সবচাইতে শ্রেষ্ঠ চরিত্র হিসেবে তাদের সাথে ধরা দেয়।

সবাই বলে সঙ্গে আছি, দিনশেষে যখন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে যায়। তখন দেখা যায় কে সঙ্গে ছিল আর কে সঙ্গে থাকবে। আমরা অন্যদেরকে যত্ন ভালবাসা সবকিছু দিয়ে আগলে রাখতে গিয়ে, নিজেদের দিকে খেয়াল রাখার কথা ভুলেই যাই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অসুস্থতা নিয়েও আপনার মনের অনুভূতি, আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 95247.94
ETH 2686.31
SBD 0.62