দূর্গা পূজা নিয়ে কিছু কথা।।
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজ আমি বাঙালির দুর্গা পুজো নিয়ে কিছু লিখতে চলেছি।
দুর্গা পুজোর ইতিহাস এবং বাঙালির আবেগ একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত।দুর্গা পুজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আবেগের প্রতীক।
দুর্গা পুজোর ইতিহাস:
দুর্গা পুজোর মূল উৎস সম্ভবত প্রাচীন বৈদিক যুগ থেকে শুরু হয়েছে যেখানে দেবী দুর্গাকে শক্তির প্রতীক হিসাবে পূজা করা হতো।বাঙালি সংস্কৃতিতে দুর্গা পুজোর প্রাচীনতম উল্লেখ পাওয়া যায় মধ্যযুগে।প্রথমদিকে এটি ব্যক্তিগত বা রাজবাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।১৬শ বা ১৭শ শতাব্দীতে পশ্চিমবঙ্গের জমিদার পরিবারগুলোতে দুর্গা পুজো প্রচলিত হয় বিশেষ করে নবাবি আমলে।
১৮শ শতকের মধ্যভাগে কলকাতায় দুর্গা পুজো একটি বড় সামাজিক উৎসব হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।জমিদার বা ধনী ব্যবসায়ীরা এটি আড়ম্বরপূর্ণভাবে উদযাপন করতেন।তবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়, পুজো ক্রমে একটি সমাজিক মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয় যেখানে ব্রিটিশ আধিকারিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বাঙালি অভিজাতরা সামাজিক সংযোগ স্থাপন করতেন।
১৯শ শতকে সার্বজনীন দুর্গা পুজো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যেখানে এটি শুধুমাত্র ধনী পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সর্বসাধারণের উৎসবে পরিণত হয়।স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় দুর্গা পুজো একটি জাতীয় পরিচয়ের অংশ হয়ে ওঠে এবং বাঙালির মধ্যে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।
বাঙালির আবেগ:
দুর্গা পুজো বাঙালির জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে কারণ এটি শুধু ধর্মীয় নয়,সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং সৃজনশীল আবেগকে একত্রিত করে। পুজোর দিনগুলোতে বাঙালিরা নতুন পোশাক পরে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটায় এবং নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করে।এটি মিলনের একটি উৎসব যেখানে বাঙালিরা একত্রিত হয়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করে এবং একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেয়।
দুর্গা পুজোর সময় শহর বা গ্রাম উজ্জ্বল আলোয় সাজানো হয় মণ্ডপগুলোতে নানা ধরনের সৃষ্টিশীল থিম এবং শিল্পকর্ম দেখা যায়। বাঙালিরা এই সময়ে নিজেদের সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করার সুযোগ পায়, যা তাদের সংস্কৃতির অংশ।
বাঙালির কাছে দুর্গা পুজো মানে মাতৃশক্তির প্রতি সম্মান, অসুরের বিরুদ্ধে শুভর জয় এবং জীবনের নবীনতা ও আনন্দ উদযাপন।বিশেষ করে বাঙালি নারীর কাছে দুর্গা পুজো মাতৃত্ব ও নারীত্বের এক বিশেষ প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
এই আবেগ শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা দুর্গা পুজোকে নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অঙ্গ হিসেবে উদযাপন করে।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

খুব সুন্দর লিখেছেন দিদি মা দূর্গা পূজা নিয়ে কিছু কথা।সত্যি মা দূর্গাকে বাঙালির মধ্যে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
আসলেই দূর্গা পূজার সময় বাঙালিরা প্রচুর আনন্দ করে থাকে। সুন্দর সুন্দর মন্ডপ দেখতে আমারও খুব ভালো লাগে। দূর্গা পূজা নিয়ে চমৎকার কিছু কথা লিখেছেন বৌদি। পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দূর্গা পুজোর জাঁকজমক শুরু হয় শোভাবাজার রাজবাড়ির রাজা নবকৃষ্ণ দেবের হাত ধরে৷ পরের দিকে সার্বজনীন হওয়ার পেছনে একটি কারণ ছিল। এই পুজো মরশুমেই লিখব সে কথা৷ যাইহোক আপনার ব্লগটি পড়ে বেশ ভালো লাগল৷
আমরা বাঙালিরা শক্তির পূজা করি৷ তার মধ্যে দুর্গাই বলে দেয় মেয়েরা ঠিক কতখানি শক্তিশালী হতে পারে প্রয়োজনে। আর দশভুজাই বা কেন৷
সামনের পুজো আসছে৷ সমস্ত অসুর বিনাশ হোক। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
পুজো মানে বাঙালির আবেগ। আর পুজো নিয়ে অনেক সুন্দর করে নিজের কথাগুলো তুলে ধরেছেন দিদি। এত কিছু আগে জানতাম না। আজকে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দিদি। অনেক ভালো লাগলো।
দিদিভাই, দুর্গাপূজা আগে থেকেই সার্বজনীন, এটা আমি জানতাম, তবে পূর্বের সময়ের কথা মোটেও জানতাম না । ভালোই লাগলো লেখাটা।
দুর্গাপূজা এমন একটি পূজা যাতে জাতি ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে অংশ নিতে পারে।বর্ধমানের জমিদার বাড়িতেও দুর্গাপূজার বিশেষ নাম রয়েছে।তবে কলকাতায় দুর্গাপূজা বিখ্যাত, অনেক সুন্দর কথা লিখেছো বৌদি।ভালো লাগলো পড়ে, ধন্যবাদ।
পূজা মানেই আনন্দ। পূজার সময় বাঙালির ঘরে ঘরে আনন্দ উল্লাস চলে ।দুর্গাপূজা সম্পর্কে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম।পূজার সময় সুন্দর মন্ডপ গুলো দেখতে আসলেই অসাধারণ লাগে। অনেক ধন্যবাদ দিদি চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।