ঠাকুর নগর বারুনী মেলায় সুন্দর মুহূর্ত ও ফটোগ্রাফি
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ভ্রমণ পোস্ট উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
ঠাকুর নগর বারুনী মেলা অনুষ্ঠানটি হয়ে থাকে প্রত্যেকটি বছর। এই মেলাতে হাজার হাজার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ উপস্থিত হয়ে থাকে।ঠাকুর নগর এই বারুনী মেলা এক সপ্তা ব্যাপী হয়ে থাকে। মার্চের ২৭ তারিখ শুরু হয় এই মতুয়া সম্প্রদায়ের বারুনী অনুষ্ঠান।আমরা ঠিক করি আমরাও একদিন এই মেলাতে যাব। যেই ভাবা সেই কাজ দাদাকে বললাম যাবার কথা দাদা এক কথায় রাজি হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের দিন আমরা গেলাম না কারণ এ দিন প্রচুর লোকের ভিড় হয়ে থাকে আর প্রতিনিয়ত এখানে ভিড় জমেই থাকে কিন্তু প্রথম দিনটা একটু বেশি হয়ে থাকে। আমরা ভেবেছিলাম দাদার গাড়িতে করেই আমরা সবাই মিলে যাব। কিন্তু দাদা আমাদের বলল গাড়িতে যাওয়া যাবেনা ট্রেনে আমরা যাব। ট্রেনের কথা শুনে শরীর ঘামতে শুরু করল। কারণটা হলো গরমের সময় ট্রেনে যাওয়াটা অনেকটা কষ্টদায়ক। কিন্তু কি করার দাদা বলল ট্রেনে যাবে তাই আমি আর ডিপ্রো দাদা দুজনে আগে থেকে টিকিটটা কেটে রাখলাম। আমরা চারজনে যাব আমি,বড় দাদা, ডিপ্রো দাদা, নিলয় দাদা। আমাদের ট্রেনের সময় ছিল দুপুর তিনটায় বুঝতেই পারছেন এই সময়টাতে সূর্যের কতটা তাপ হয়ে থাকে। যাইহোক, তোমার সময় মত পৌঁছে গেলাম স্টেশনে পাঁচ মিনিট পর আমাদের ট্রেনটি এলো আমরা উঠে পড়লাম ট্রেনে। ট্রেনের ভিতরে ঢুকেই অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেল কারণ প্রচুর লোকের ভিড় ছিল সবাই ঠাকুর নগর বারুনী মেলায় যাচ্ছিল। ট্রেনে প্রায় এক ঘন্টা জার্নি করার পর আমরা পৌঁছে গেলাম ঠাকুর নগর। ঠাকুর নগর স্টেশনে থেকে নেমে আরো কিছুটা পথ হেঁটে আমরা পৌঁছে গেলাম মূল গন্তব্যে।
দুপুরের রোদে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা কিছুটা সময় বিশ্রাম ঘরে আইসক্রিম খেতে খেতে বিশ্রাম নিলাম। গরমে বড় দাদার খুব কষ্ট হয়ে গেছিল তাই দাদা মূল মন্দিরে আর প্রবেশ করতে পারল না। আমি আর নিলয় দাদা দুজনে মুল মন্দিরের প্রবেশ করলাম। অনেক লোকের ভিড় ছিল মন্দির প্রাঙ্গণে আর ভিড় হওয়াটা স্বাভাবিক। একটা বছর পর এই মতুয়া সম্প্রদায়ের এই অনুষ্ঠানটা হয়ে থাকে। দুর দুরান্ত থেকে মতুয়া ভক্তরা এই অনুষ্ঠানে এসে থাকে। যাইহোক, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর মন্দিরে প্রণাম করে প্রসাদ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। পাশে একটি পুকুর ছিল পুকুরটির নাম কামনা সাগর। কামনা সাগর বলতে আপনারা বুঝতেই পারছেন এই পুকুরে শুদ্ধ মনে স্নান করলে সবার কামনা বাসনা পূর্ণ হয়। আমরা ওখান থেকে ঘুরে চলে গেলাম মেলার মাঠে। এখানে অনেক বড় জায়গা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে। যেহেতু আমরা মেলায় এসেছি আর মেলায় এসে গরম গরম জিলাপি খাব না এটা কখনো হয়না। একটি দোকানে দেখতে পেলাম গরম জিলাপি ভাজি করছে আমরা সেখান থেকে কিছু জিলাপি নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। গরম জিলাপি খাওয়ার মজাটাই কিন্তু আলাদা হয়ে থাকে।
আমরা যেহেতু দুপুরের দিকে পৌঁছে ছিলাম যার জন্য মেলার বাজারে ভিড়টা একটু কম ছিল। আমরা জিলাপি খেতে খেতে মেলার বাজার ঘুরতে লাগলাম। ঘুরতে ঘুরতে আমি একটি দোকানে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কারণ এখানে বেতের তৈরি অনেক পুরাতন কিছু জিনিসপত্র আমি দেখতে পেলাম। যেসব জিনিসপত্র গুলো বর্তমান হারিয়ে যেতে বসেছে। এই জিনিসপত্র দেখে আমার গ্রামের কিছু স্মৃতির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। সামনাসামনি এমন কিছু আমি দেখতে পাবো সেটা আমি কখনো কল্পনা করতে পারিনি। আর একটা জিনিস বলতেই হবে মেলার মাঠে অনেক জানা-অজানা জিনিসপত্র আমরা কিন্তু দেখতে পাই। মেলার মাঠে আবার সার্কাস বসেছেন ইচ্ছা করছিল সেখানে যাবার কিন্তু সময় না থাকার কারণে সেখানে আর যাওয়া হলো না। এখানে ঘর সাজানোর জন্য অনেক দোকান বসেছে আমরা সেখান থেকে কিছু ঘর সাজানোর জিনিসপত্র কিনলাম। মেলায় সব থেকে বেশি বাচ্চাদের খেলনার দোকান বসে । খেলনার দোকান থেকে কিছু খেলনা নিয়ে নিলাম ভাগ্নের জন্য।
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৯.০৩.২০২৫
সময়:০৫:০৯ মিনিট
স্থান: ঠাকুর নগর।
মেলার ভেতর ঘুরতে ঘুরতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে এলো বুঝতেই পেলাম না। এরপর আমরা চলে গেলাম মিষ্টির দোকানে সেখানে যেয়ে কিছু মিষ্টি খেলাম। এরপর সেখান থেকে চিনি দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন ডিজাইনের বাতাসা কিনলাম। এই চিনির বাতাসা দেখতে যতটা সুন্দর খেতে কিন্তু ততটা ভালো না। এরপর আমরা বাজার থেকে বেরিয়ে পড়লাম কারণ আমাদের ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছিলাম। স্টেশনে যেতে কিছুটা সময় আমাদের হাঁটতে হবে। আমরা হেঁটে হেঁটেই যাচ্ছিলাম রাস্তার পাশে দেখতে পেলাম ভুট্টা কয়লায় পুড়িয়ে বিক্রি করছে। সেখান থেকে চারজনের জন্য চারটি ভুট্টার পিস কিনে খেতে খেতে স্টেশনে এসে পৌছালাম। যাইহোক, অবশেষে একটা কথাই বলবো ঠাকুর নগর বারুনী মেলায় অনুষ্ঠানে যে খুবই ভালো লেগেছে। আমার তো আরো ভালো লেগেছে কারণ বেশ কয়েকদিন পর এমন একটি জায়গায় ঘুরতে পেরে।
Beautiful place, thanks for sharing.