"দাদা বৌদির হোটেলে বিরিয়ানি পার্টি"

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে কিছুদিন আগে কলকাতার বিখ্যাত দাদা বৌদির বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলাম। সেই মুহূর্তটি আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করছি।আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

IMG-20240102-WA0029.jpg


দাদা বৌদির হোটেলে বিরিয়ানি পার্টির আয়োজন করেছিলেন ডিপ্রো দাদা। দাদা নতুন বাইক কিনে ছিলেন সেই উদ্দেশ্যেই পার্টির আয়োজন করেছিলেন। অনেকেই গিয়েছিলাম বিরিয়ানি খেতে বড় দাদা ছোট দাদা অনেকেই। কোন জায়গায় খাওয়ার নিমন্ত্রণ থাকলে সেদিন আর বাড়িতে খেতে ইচ্ছা করে না আরো যদি হয় বিখ্যাত দাদা বৌদির বিরিয়ানি। যাইহোক সন্ধ্যেবেলায় আমাদের যাওয়ার কথা ছিলো তাই সন্ধ্যা হতেই দ্রুত তৈরি হয়ে নিলাম যাওয়ার জন্য। দাদারা গাড়িতে করে গিয়েছিলেন আর আমরা বাইকে করে গিয়েছিলাম। বাইকে চলতে খুবই মজা লাগে কিন্তু শীতকাল হলে বাইকে চলতে মোটেও ইচ্ছা করে না। শীতকালে বাইক চালাতে প্রচন্ড কষ্ট হয় কারণ শীতের ঠান্ডা হাওয়া যখন শরীরে লাগে তখন আর ইচ্ছা করে না বাইক চালাতে। যাইহোক তেমন একটা অসুবিধা আমার হয়নি কারণ নিলয় দাদা বাইক চালাচ্ছিল আর আমি নিলয় দাদার পিছনেই বসে ছিলাম এ কারণে আমার তেমন একটা কষ্ট হয়নি কিন্তু তার পরেও যতটুকু হাওয়া লাগছিল মনে হচ্ছিল কেউ ছুরি দিয়ে আঘাত করছে।বাসা থেকে দাদা বৌদির হোটেলে যেতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লেগে থাকে।


আমি আগেও একবার গিয়েছিলাম আমার এক বন্ধুর সাথে। প্রচন্ড ভিড় হয়ে থাকে এবং এখানে খাবারের মানটা খুব ভালো এই কারণে এখানে লোকের ভিড়ও লেগেই থাকে। আগে এই দাদা বৌদি ছোটখাটো বিরিয়ানির বিজনেস শুরু করে। আর এখন সেই বিজনেসটাকে এত বড় করেছে আসলে তাদের থেকেই আমাদের শেখা উচিত কারণ এনারা জিরো থেকে আজ হিরো হয়েছে। যাই হোক আমরা পৌঁছে গেলাম সেই বিখ্যাত দাদা বৌদির বিরিয়ানির হোটেলে। আমরা ফাস্টে ভুল করে চলে গিয়েছিলাম দাদা বৌদির দ্বিতীয় একটি বিরিয়ানি হোটেল আছে সেই হোটেলের সামনে। যাহোক এখান থেকে শুনতে পেলাম যে এটা দাদা বৌদির দ্বিতীয় হোটেল এটা তাই আমরা এখান থেকে বের হয়ে দাদা বৌদির হোটেলে যে বড় দাদার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণ পরে বড় দাদা ও চলে এলো আমরা গাড়ি পার্কিং করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। এই শীতের সময় একটা জিনিস বেশিই দেখা যায় সেটা হচ্ছে বিবাহ। আমরা যেদিন বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলাম আসলে সেদিন ইন্ডিয়াতে 13 লাখ বিবাহ হয়েছিল। আমরা যখনই ভিতরে ঢুকবো সামনে দেখতে পেলাম দুজন এই মাত্র বিবাহ করে এসেছে তার ও ফ্যামিলি সহ এই দাদা বৌদির বিরিয়ানি খেতে এসেছে।


ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম একদম জমজমাট অবস্থা এত লোক এখানে খেতে এসেছে তা বলার বাইরে। আমাদের বুক করা ছিল তাই তেমন একটা অসুবিধায় পড়তে হলো না সোজা চলে গেলাম দ্বিতীয় তালায় ওখানে আমাদের জন্য বসার ব্যবস্থা করেছে। সেখানে যে যার যার আসন গ্রহণ করলাম কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল কারণ যেকোনো রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে অর্ডার করার সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু খাবার আসে না কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আমরা যে শুধু বিরিয়ানি খেয়েছিলাম তা কিন্তু নয় সাথে আরো অনেক কিছু খেয়েছিলাম যেমন ফিস ফ্রাই, চিকেন কষা, ইত্যাদি আর সাথে তো স্পেশাল বিরিয়ানি আছেই। সবাই যার যার মতন অর্ডার করেছিল কারণ এখানে বিভিন্ন ধরনের বিরিয়ানি পাওয়া যায় আলু বিরিয়ানি, এগ বিরিয়ানি, চিকেন বিরিয়ানি, মটন বিরিয়ানি। বিরিয়ানি হলেই আমি মটন বিরিয়ানি অর্ডার করে থাকি কারণ মটন বিরিয়ানি খেতে আমার কাছে খুবই দারুন লাগে। অর্ডার করার বেশ কিছুক্ষণ বসে ছিলাম আমি একটু বিরক্তবোধ হচ্ছিলাম। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরে বড় দাদা ফিস ফ্রাই অর্ডার করেছিলেন এই অর্ডারটি চলে এলো। আমরাও দাদার সাথে ফিস ফ্রাই নিলাম এবং চিকেন নিলাম প্রত্যেকের জন্য এক পিস করে চিকেন বরাদ্দ ছিল।
IMG-20240102-WA0040.jpg

IMG-20240102-WA0039.jpg

IMG-20240102-WA0042.jpg

IMG-20240102-WA0044.jpg


এগুলো শেষ করতে না করতে আমাদের মেইন যে বিরিয়ানি সেটিও চলে এলো। এখানে একটু আলাদা কারণ সব জায়গায় পেলেটেই বিরিয়ানি দেওয়া হয় কিন্তু এখানে প্লেটের উপর কলার পাতা দিয়ে তারপর বিরিয়ানি দেওয়া হয় এটা স্পেশালি ছিলো। বড় একটি আলোর পিস এখানে ছিল আর মটনের পিসটা ও বড়ই ছিল। আমার সামনে খাবার থাকলে আমি কারো সাথে কথা বলি না শুধু খাবারের দিকে মনোযোগ দিয়ে থাকি এজন্য সবার আগেই আমার খাবারটা শেষ হয়ে যায়। যাই হোক বিরিয়ানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরী না করে খাওয়া শুরু করে দিলাম প্রথমে গালে দিতেই মুখ থেকে একটি শব্দই বের হয়ে এলো জাস্ট ওয়াও।
IMG-20240102-WA0045.jpg

IMG-20240102-WA0046.jpg

IMG-20240102-WA0047.jpg


মটন বিরিয়ানি আমার খাওয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় দাদা আমাকে আবার চিকেন বিরিয়ানি খেতে দিল। চিকেন বিরিয়ানিটা খুব ভালো ছিল আমার সামনে নিলয় দাদা বসে ছিলো তার একটু সমস্যা হচ্ছিল কারণ এত পরিমাণে বিরিয়ানির আলু খেয়েছিল যার কারণে মাংস খেতেই পারছিলো না 😀😀😀। সবার আগে আমার খাওয়া শেষ হয়ে গেছিলো তাই ফ্রেশ হয়ে সবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম আর বসে বসে এখানকার কিছু ফটোগ্রাফি করছিলাম।
IMG-20240102-WA0037.jpg

IMG-20240102-WA0024.jpg

IMG-20240102-WA0036.jpg

IMG-20240102-WA0026.jpg

IMG-20240102-WA0030.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A79 5G
ক্যামেরার দৈর্ঘ্য:4.05mm
তারিখ:১৫.১২.২০২৩
সময়:৮.৩২ মিনিট
স্থান: ব্যারাকপুর


আমি নিলয় দাদাকেই দেখছিলাম আর হাসছিলাম কারণ ওই সময়টাতে দেখতে অদ্ভুত লাগছিল নিলয় দাদাকে। খাওয়ার শেষে একটা জিনিস কিন্তু না খেলেই হয় না সেটা হচ্ছে কোলড্রিংস। একে একে সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেল এবং আমরা বিল পরিশোধ করে আবার রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। ধন্যবাদ জানাই ডিপ্রো দাদাকে কারণ এত সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য। ভালোই আনন্দ করেছিলাম আর খাওয়া ভালো হলে সত্যিই ভালো লাগে।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হব সবার মাঝে।সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 last year 

তাহলে তো দারুন একটি পার্টির ব্যবস্থা হয়েছে। তবে এটা সত্য বলেছেন দাওয়াত থাকলে অনেক সময় বাড়িতে খেতে ইচ্ছে করে না। দাওয়াতে সবার সাথে আড্ডা দিয়ে খেতে অনেক বেশি মজা লাগে। তবে এখন যেহেতু শীতকাল বাইক নিজে ড্রাইভ করতে অনেক কষ্ট। কারণ পুরো বাতাস যে ড্রাইভ করে তার গায়ে লাগে।আপনি নিলয় দার পিছনে বসার কারণে আপনি হয়তো বাতাস থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছেন। আর এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো আসলে জিরো থেকেই হিরো হয়। প্রথমত তারা যদি ভালো মানের খাবার সার্ভ করতে পারে, তখন সেগুলো জিরো থেকে হিরো তে পরিণত হয়। আর সেটাই ঘটেছে এই দাদা বৌদি বিরিয়ানি রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে। সর্বোপরি খুব ভালো সময় অতিবাহিত করেছেন খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

দাদা বৌদির হোটেলে গিয়ে বিরিয়ানি পার্টি করা হয়েছিল এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। শীতের সময় বাইক চালানোটা সত্যি অনেক কষ্টকর। আর আপনি যেহেতু নিলয় দাদার পিছনে বসে ছিলেন, তাই বুঝতে পারছি আপনার খুব একটা কষ্ট হয় নাই। হালকা বাতাস লাগাতে আপনি এরকম বলতেছেন, জানি না নিলয় দাদার কি অবস্থা। বিরিয়ানি দেখেই তো আমার জিভে জল চলে এসেছে। ইচ্ছে করছে এখনই তুলে নিয়ে খেয়ে ফেলি। সবাই মিলে খুব ভালো সময় কাটিয়েছিলেন বুঝতেই পারতেছি।

 last year 

হোটেলের নাম টি অসাধারণ দাদা বৌদির হোটেল।আপনি দাদাদের সাথে এই সুন্দর একটি হোটেলে গিয়েছেন এবং সুন্দর সুন্দর খাবার খেয়েছে।একদিনে ১৩ লক্ষ বিয়ে জেনে আমি অবাক।মাটন বিরিয়ানি সত্যি ভীষণ লোভনীয়। নিলয় দাদা আলু খেয়ে আর মাটন খেতে পারছে না জেনে হাসি পেলো তবে নিলয় দার মতো আমিও মাটনে আলু ভীষণ পছন্দ করি।মাংস না দিয়ে যদি আমাকে আলু দেয়া যায় আমি খুশি হয়ে চেটেপুটে খেয়ে নেব আনন্দের সাথে। ধন্যবাদ দাদা খুব সুন্দর খাওয়াদাওয়ার ফটোগ্রাফি ও বর্ননা দিয়ে আমাদের সাথে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

দাদা বৌদি হোটেলের বিরিয়ানি কলকাতায় বেশ জনপ্রিয়, এটা প্রায়ই শুনে থাকি। দাদা বৌদি ছোটখাটো বিজনেস শুরু করে আজকে অনেক উপরের লেভেলে চলে গিয়েছে। আসলে খাবারের মান ভালো হলে জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগে না ততোটা, তবে অবশ্যই ভাগ্য সহায় হতে হয়। যাইহোক বড় দাদা এবং ছোট দাদাসহ, আপনারা বেশ কয়েকজন ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছেন দাদা বৌদি হোটেলে গিয়ে। প্রতিটি খাবার বেশ লোভনীয় লাগছে দেখতে। মাটন বিরিয়ানি আমার ভীষণ পছন্দ। শীতকালে বাইকে চড়লে শরীরে অনেক বাতাস লাগে এবং প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হয়। যাইহোক সবমিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে এবং দেখে। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলে এই ধরনের ছোটখাটো বিজনেসের মাধ্যমে মানুষ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। তেমনি দাদা বৌদি ছোটখাটো এই বিজনেসের মাধ্যমে অনেক উঁচু লেভেলে চলে গিয়েছে। যাইহোক দাদা বৌদি হোটেলে আপনারা খুব ভালো ভাবে খাওয়া দাওয়া করেছিলেন। বিরিয়ানির পার্টি ছিল এটা জেনে অনেক বেশি ভালো লাগলো। খাবার গুলো দেখতে কিন্তু সত্যি খুবই লোভনীয় লাগতেছিল। যেভাবে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন যে কেউ যদি খাবার গুলো দেখে তাহলে অনেক বেশি লোভ লেগে যাবে।

 last year 

আসলেই ওইদিন কিন্তু সবাই একসাথে বেশ ভালো আনন্দ হয়েছিল। মাঝে মাঝে এইরকম একসাথে খেতে গেলে ভালো আনন্দ হয়। মটন বিরিয়ানিটা বেশ ভালো ছিল, সাথে মাছটাও। আবার একদিন সবাই একসাথে যাবো এইরকম খেতে, ভালো মজা হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96335.91
ETH 2788.63
SBD 0.67