জেনারেল রাইটিং:-"ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাস: পবিত্র মাহে রমাদান "II written by @maksudakawsarII
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আমিও আছি ভালোই। চলছে পবিত্র মাহে রমদান। আর এই পবিত্র মাসে আমরা যেন নিজেদের কে ক্ষমা আর ত্যাগের মহিমার ভাগিদার করে তুলেতে পারি আসুন সবাই সবার জন্য সেই দোয়াই করি। সেই সাথে রমাদানের হক গুলো সঠিক ভাবে পালন করার চেষ্টা করি। যাতে করে মহান আল্লাহ আমাদের কে ক্ষমা করে দেন।
প্রতিদিনই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই চারদিকের মানুষগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কষ্টগুলো কে আমার লেখার যাদুতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। জানিনা কতটুকু আপনাদের মাঝে নিজের মনের কথা গুলো কে শেয়ার করতে পারি। আজ চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
.png)
Canva দিয়ে তৈরি
মুসলমানদের জন্য আল্লাহ্ যে বিধান গুলো ফরজ ইবাদত হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে পবিত্র মাহে রমজান একটি। আর এই রমজান মাসটি একটি পবিত্র মাস হিসাবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মুসলিম সম্প্রদায় কে ধার্মিক ভাবে আরও বেশী অভিজ্ঞ করে তোলার বেশ সুযোগ রয়েছে এ মাসে। রমাদান মাস ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র এবং বরকতময় মাস। আর এই পবিত্র মাসেই নাজিল হয়েছে বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী পবিত্র আল-কুরআন। রমাদান মাসে রয়েছে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অনন্য সুযোগ। রমাদান শুধুমাত্র উপবাস থাকার নাম নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। যা কিনা মানব সম্প্রদায় কে নৈতিকতা, আচার-আচরণ ও আত্মসংযমের শিক্ষা দেয়। এ মাসে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ রোজা পালন করে, ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকে এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন-"হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।" (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)। তাকওয়া হলো আল্লাহভীতি, যা মানুষকে পাপ থেকে বিরত রাখে এবং সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করে। আর রমাদানের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জন করা।
দিনের বেলায় ক্ষুধা ও তৃষ্ণা সহ্য করার পাশাপাশি সকল প্রকার অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা রোজার অন্যতম মূল শিক্ষা। আর এমন করেই রমাদান ধৈর্য ও আত্মসংযমের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা দেয়। এছাড়াও রমাদান দান-সদকা যাকাত প্রদানের মাস। এ মাসে দরিদ্রদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন-“রমাদানে যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে, তবে রোজাদারের সওয়াব মোটেও কমবে না-” (তিরমিজি)।
রমাদানের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য হলো এ মাসেই পবিত্র আল-কুরআন নাযিল করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-"রমাদান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং সত্যপথের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও ন্যায়নীতি প্রমাণকারী হিসেবে"-(সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)। এ কারণে মুসলিমরা এ মাসে কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন শিক্ষা এবং বেশী বেশী আমল করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়। রমাদানের শেষ দশ দিনের মধ্যে একটি রাত রয়েছে, যা লাইলাতুল কদর নামে পরিচিত। এ রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।আর এ রাতে ইবাদত- বন্দেগি করলে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করার পাশাপাশি নেকী দান করেন। কুরআনে বলা হয়েছে -"নিশ্চয়ই আমি এটি কদর রাতে নাজিল করেছি। আর তুমি কি জানো কদর রাত কী? কদর রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম"- (সূরা আল-কদর: ১-৩)
রমাদান শারীরিক সুস্থতারও এক অনন্য মাস। এ মাসে মানুষের দেহে এক আমল পরিবর্তন ঘটে। কারন মানুষ যখন রোজা পালন করে তখন তার হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়। যার কারনে দেহের হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমে, এবং মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে সাথে দেহকে করে তোলে রোগ মুক্ত।
রমাদান কেবল মাত্র আধ্যাত্বিক মাস নয়। এ মাস নিজেকে পরিশুদ্ধ করে গড়ে তোলার মাস। এ মাসে প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত ও কল্যাণকর কাজে ব্যয় করা উচিত, যেন আমরা আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভ করতে পারি। তাই আসুন রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা করে রমাদান মাসের সঠিক মূল্যায়ণের মাধ্যমে আমরা নিজেদের কে নতুন করে গড়ে তুলি।
বন্ধুরা কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের লেখাগুলো? আশা করবো প্রতিদিনের মত করে আজও আপনারা আমার লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন। আশা করবো মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
আমার পরিচিতি
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy

রোজা যেমন ঈমানদারদের জন্য ফরজ, তেমনি রমজান শুদ্ধ আত্মার উন্নতির মাস। কারণ যাদের ঈমান নেই তারা সারা মাস রোজা রাখলেও আত্মশুদ্ধি হবে না। সেজন্যই বলা হয় রমজান আত্মশুদ্ধির মাস নয় বরং শুদ্ধ আত্মার উন্নতির মাস। যাইহোক আপু খুব সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
রমজান মাস আমাদেরকে ধৈর্য, সংযম ও সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। এই মাসে আমরা শুধু খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকি না, বরং সকল প্রকার খারাপ চিন্তা ও কাজ থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করি। এটি আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর প্রতি আমাদের আনুগত্য বৃদ্ধি করে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
রমজান একটি পবিত্র মাস, যা আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও ত্যাগের শিক্ষা দেয়। এই মাসে শুধুমাত্র শারীরিক উপবাস নয়, বরং আত্মারও পরিশুদ্ধি হয়। আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে রমজান এক অনন্য সুযোগ।আমিও একটু আগে এই বিষয় নিয়ে একটা পোস্ট করলাম।যাই হোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা এত সুন্দর ভাবে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।