গল্প রাইটিং- যৌতুকের বিরুদ্ধে নীলিমার নীরব যুদ্ধ || written by@maksudakar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করি বেশ ভালো আছেন। আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ্ বেশ ভালো । আমি @maksudakawsar, বাংলাদেশের ঢাকা হতে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আমার লেখা দিয়ে কমিউনিটির বন্ধুদের কে মুগ্ধ করার জন্য। হয়তো বা আমি আপনাদের মত এত ভালো করে লিখতে পারি না। পারি না আমার মনের ভাষাগুলো কে আপনাদের সামনে সঠিক ভাবে লিখার যাদুতে উপস্থাপন করতে। তবুও চেষ্টা করি। তাই তো আজও আবার চলে আসলাম আপনাদের সামনে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
আমাদের চারপাশে আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো সুখী মানুষের অভাব নেই। কারও মুখ দেখেই কিন্তু বুঝার উপায় নেই কে সুখী আর কেই বা অসুখী। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত হাসিমুখে থাকে। নিজের মনের দুঃখগুলো কে কাউকে বুঝতে দেয় না। বুঝতে দেয় না নিজের কষ্টগুলোকেও। অথচ নিজের ভিতরে বহন করে নিয়ে চলে এক সমুদ্র দুঃখ। হয়তো বা এই কষ্ট আর দুঃখগুলোকে পালতে পালতে এক সময়ে মানুষটির বিদায় নিতে হয় এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে। আর আড়ালেই থেকে যায় তার দুঃখ কষ্টগুলো।
CANVA দিয়ে তৈরি
নীলিমা একজন সংগ্রামী মেয়ে। জীবনের সাথে সংগ্রাম করতে করতে তার বেড়ে উঠা। জীবনকে সে খুব কাছ থেকে উপভোগ করেছে। তাইতো জীবন চলার পথে এখন সে আর কোন ভাবেই নত স্বীকার করতে নারাজ। যদিও বিয়ে স্বাদী করায় তার তেমন কোন আগ্রহ নেই তবুও সামাজিক এবং পারিবারিক চাপে তাকে এক সময়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। তবে নীলিমা কিন্তু সেই ছেলেবেলা হতেই একটু পুরুষ বিদ্বেষী। আর সেই কারনেই নীলিমার বিয়েটাও হয় একটু দেরীতে। যেহেতু নীলিমা জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছে তাই সে বিয়ের আগেই তার হবু বরের সাথে কথা বলে নেয়। নীলামা একজন চাকরিজীবি নারী। এছাড়া একজন স্বাধীন চেতা এবং যৌতুক বিরোধী। তাই বিয়ের আগেই হবু বরের সাথে এসব বিষয়ে সব কিছু পরিস্কার কথা বলে নেয়। যাতে তার ভবিষৎ সংসার জীবনে কোন প্রভাব না পড়ে। আর নীলিমার কথা শুনে নীলিমার হবুও বরও সবকিছু মেনে নেয়।
এক সময়ে তাদের বিয়ে হয়। তারা বেশ সুখে শান্তিতে তাদের সংসার জীবন কাটাতে থাকে। কিন্তু নীলিমার শ্বশুড়বাড়ীর মানুষ গুলো বেশ লোভী। বিশেষ করে নীলিমার শ্বাশুড়ী। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে নীলিমাকে এটা সেটার জন্য চাপ দিতে থাকে। তারা ভাবে যে নীলিমা যেহেতু চাকরি করে সেহেতু সে বেশ টাকার মালিক। তাই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের নাটক সাজিয়ে নীলিমার কাছ হতে টাকায় আদায় করার জন্য নীলিমার শ্বশুড়ী সব সময় ব্যাস্ত থাকে। কিন্তু ঐ যে নীলিমা জীবনের অনেক কাঠখর পুড়িয়ে এসেছে। তাই বেশ সহজেই তার শ্বাশুড়ী এবং শ্বশুড় বাড়ীর মানুষের চালাকি ধরে ফেলে। তাই সে এসব বিষয়গুলোকে বেশ সুন্দর এবং সহজ ভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা করে এবং সফল হয়।
কিন্তু লোভী মানুষ তো আর সহজে হাল ছাড়ে না। তারা যে কোন ভাবেই নীলিমার কাছ হতে অর্থ খসাবে সেই চিন্তায় থাকে। এক সময়ে নীলিমার স্বামীকে তার পিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করার নাটক সাজানো হয়। তাই নীলিমা কে বিভিন্ন ভাবে বাড়ীর দোতালার উপর তৃতীয় তলা করার কথা বলা হয়। কিন্তু নীলিমা এই বিষয়টিও বিভিন্ন ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু লোভী মানুষ তো আর পিছু ছাড়ে না। তারা নীলিমার পিছে বেজেই থাকে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জিনিস খাইয়ে নীলিমার মন যোগানোর চেষ্টা করে। কিন্তু নীলিমা তাদের চালাকি ধরে ফেলে। তবুও তারা নীলিমার পিছু ছাড়ে না।
কারন নীলিমার শ্বশুড় বাড়ীর সবাই জানে যে নীলিমার বরের কাছে এত টাকা নেই যে সে বাড়ীতে করা ব্লিডিং এর উপর ২০-৩০ লাখ টাকা খরচ করে একটি ফ্লাট করবে। তাই নীলিমাকে প্রতিনিয়ত সেখানে একটি ফ্লাট করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। নীলিমা কে এই বলে বুঝানো হয় যে ঈদের সময় বা বিভিন্ন ছুটিতে বাড়ীতে গেলে নিজের ঘরে উঠে শান্তিতে থাকতে পারবে। আসলে নীলিমা তো থাকে অন্য জায়গায়। এত গুলো টাকা দিয়ে ফ্লাট করে সেই ফ্লাটে কে থাকবে? কেনই বা এমন বাহানা। নীলিমা বেশ ভালো করে বুঝতে পারে শ্বশুড়ীর চালাকি। তাই নীলিমা আর তার বর মিলে সিদ্ধান্ত নেয় সেই ফাঁদে তারা পা দিবে না। তাছাড়া নীলিমা বুঝতে পারে যে এই ফ্লাটে অবশেষে তার নোনাসদের কেই থাকতে দিবে। আর কেনই বা নীলিমা তার নিজের টাকায় অন্যের বাড়ীতে বাড়ী করবে?
তাই নীলিমা হয়ে উঠে প্রতিবাদী। আর নীলিমার এমন প্রতিবাদ দেখে তার শ্বশুড়ীও তার উপর রেগে যায়। আর সেই থেকে শ্বশুড়ী নীলিমা কে বিভিন্ন ভাবে অপমান করার চেষ্টা করে। এবং দিনের পর দিন তাকে বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিতে শুরু করে। এক সময়ে নীলিমা সিদ্ধান্ত নেয় যে সে আর কোন ভাবেই তার শ্বাশুড়ীর ফাঁদে পা দিবে না। তাই নীলিমা এখন তার শ্বাশুড়ীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকে। এখন নীলিমা আর তার বর বেশ শান্তিতেই সময় পার করে। তাদের মন খারাপ থাকলে তারা ঘুরে বেড়ায়। সুখের জীবন এখন নীলিমার।
শেষ কথা
শেষ কথা
আমি বুঝিনা যে এমন কেন মানুষ করে? তারা কি ভাবে না যে তার নিজের সংসারেও তার মেয়ে আছে। এমন কিছু শ্বশুড়ীদের জন্যই নীলিমার মত মেয়েরা হারিয়ে যায়। জানিনা আপনাদের মতামত কি?
ধন্যবাদ সকলকে
@maksudakawsar
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আমাদের সমাজে অনেক মেয়ে আছে যারা যৌতুকের প্রতিবাদ করতে গেলেই বিপদে পড়ে যায়। হয়তো সবাই নীলিমার মত প্রতিবাদী হয়ে ওঠে না। অনেকে নিরবে চোখের জল ফেলে। যৌতুক প্রথাটা সত্যিই অনেক ঘৃণার। আপু আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর একটি বিষয়কে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।আসলে এখনও সমাজে সেই আদিকালের যৌতুক প্রথা রয়েগেছে। যার কারনে সমাজের অনেক অসহায় মেয়েরা দুঃখের সাগরে ভাসছে। জানিনা কবে এই সমাজের এমন প্রথা থেকে আমরা মুক্তি পাবো।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
যৌতুক একটি অপরাধমূলক কাজ।যারা এগুলো করে খুব অন্যায় করে।নীলিমার মতো প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারলে সব মেয়েরা তাহলে হয়তো বা এটা থেকে বাঁচা যেত।ভালো লাগলো টপিকটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
যৌতুক সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি এবং বিভিন্নভাবে এখন ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে যৌতুক আদান প্রদান করা হয়। তবে এটি একটি অপরাধ এবং অনেকে এগুলো এখন বিপুল পরিমাণে করছে৷ তবে নীলিমার মত এরকম প্রতিবাদী যদি সব মেয়েরা হয়ে ওঠে তাহলে এসব কিছুর প্রচলন শুরু থেকেই হত না এবং সব সময় এগুলো থেকে মানুষ দূরে থাকতো৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷