শৈশবের রোজার দিন যে ভাবে কাটিয়েছিলাম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তবে মনমানসিকতা ভালো নেই। আর মনমানসিকতা যদি ভালো না থাকে তাহলে শরীর মন অচল হয়ে পড়ে। তারপরেও আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি শৈশবের রোজার কিছু কথা নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার শৈশবের রোজার কিছু স্মৃতি।
আসলে শৈশবকাল আমাদের সবার জীবনে একটি স্মৃতিমধুর। আমি মনে করি শৈশবের স্মৃতি আমাদের সবার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা আমাদের প্রতিটিদিন প্রতিটি মুহূর্ত ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই শৈশবের দিনগুলোর মাঝে। শৈশবে আমাদের ছিল না কোন ভাবনা, ছিলনা কোন দুঃশ্চিন্তা বা কোন দায়িত্ববোধ। তখন আমাদের প্রতিটি দিন ও মুহূর্ত ছিল একদম সাদাসিদে ও আনন্দ পূর্ণ। এখনো সেই দিনগুলোর প্রতিটা সময় ও মুহূর্তগুলো মনে পড়লে মনে হয় যেন সেদিনের সেই দিন গুলোই অনেক সুন্দর ছিল। এখন ভাবী কেন বড় হতে গেলাম। চাইলেও ফিরে যেতে পারবো না সেই শৈশবে ফেলে আসা দিনগুলোতে। তাইতো আজও চলে গিয়েছিলাম শৈশবের কিছু মধুর স্মৃতিতে। আর সেই মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।

ছেলেবেলায় রোজার মাসটা স্কুল বন্ধ থাকতো। আর রোজার মাস নিয়ে ছিল হাজারও জল্পনা আর কল্পনা। কেমন করে রমজান মাস কাটাবো। আমি কিন্তু সেই ছেলেবেলা হতেই রোজা রাখার চেষ্টা করি। তাই রমজান মাস আসলে ভয়ে থাকতাম যে আমাকে সেহেরী খেতে ডাকে কিনা। কারন বাসার সবাই আমাকে খুব আদর করতো তাই এত অল্প বয়সে রোজা রাখতে বারন করতো। কিন্তু আমি ছিলাম নাছোড় বান্দা। রোজা আমি রাখবোই রাখবো। আর সেই কারনেই অনেক সময় সারা রাত আর ঘুমাতাম না। যদি না ডাকে। ভয়েই থাকতাম।
সবাই যখন সেহেরী খেতে উঠতো আমি সবার সাথে উঠে যেতাম। আর সবাই আমাকে বলতো দুধ ভাত। আর বলতো সকাল ১২.০০ হলে নাকি একটি রোজা হয়ে যায়। আমিও তাদের সেই কথা বিশ্বাস করতাম। আর সবার সাথে ভাত খেয়ে নিতাম। আস্তে আস্তে যখন দুপুর হয়ে যেত তখন মা আমাকে ভাত খাইয়ে দিতো। আমিও ভাত খেয়ে নিতাম। আর কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম যে আমি আজ একটি রোজা রেখেছি। হি হি হি। আমি তো আর অত শত বুঝতাম না কি করবো বলেন।
ইফতারের সময় সবাই যখন ইফতার করতো তখন বলতাম যে মা এখন কেন খাচ্ছো। তোমরা দুপুরে কেন খাওনি। মা বলতো যে বড়দের সন্ধ্যা পর্যন্ত একটি রোজা। আমি মায়ের সেই কথাই বিশ্বাস করে রোজা রাখতাম। এমন করে আমি ৫-৬টা রোজা রেখেছি। আর ভেবেছি যে আমার রোজা হযে গেছে। কিন্তু এখন বুঝি যে তখন আমার রোজা আসলেই হয়নি। যাই হোক। ছোট বেলায় আমার কাছে ইফতারের সময়টা বেশ ভালো লাগতো। কারন সেই সময়টা বেশ মজার মজার খাবার তৈরি করা হতো। আমি তো শুধু অপেক্ষায় থাকতাম যে কখন খাবো।
তবে ছেলেবেলার রমজান মাসে আমার আর একটি জিনিস ভালো লাগতো সেটা হলো পাড়ি আর না পারি মায়ের সাথে নামায়ে দাঁড়ানো। কি সুন্দর করে আমাদের বাসার সবাই এক সাথে নামায পড়তো। আমি আজও সেই সময়ের কথা গুলো মনে করি। তবে যেহেতু সে সময়ে আমাদের স্কুল বন্ধ থাকতো এক মাস, তাই সেই সময়টা আমাদের বেশ মজা করেই কেটেছে। আনন্দ আর উদ্দিপনার ছিল আমার শৈশবের রমাদান মাস।
আসলে শৈশব মানেই ফেলে আসা সুন্দর স্বপ্ন ও সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কাটানো সময়। তাই শৈশবের ফেলে আসা স্মৃতি ও স্বপ্ন গুলো আজও দোলা দিয়ে যায় মনপ্রাণে।
কেমন লেগেছে আপনাদের সবার কাছে আজ আমার শৈশবে ফেলে আসা সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে পোস্টটি। আশা করছি আপনাদের সবার কাছে আমার পোস্টটি পড়েও অনেক ভালো লেগেছে সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন সে পর্যন্ত আগামীতে আবার নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে আসবো ইনশাল্লাহ আল্লাহাফেজ।

বাহ! আপনার শৈশব এর রমজানের স্মৃতি জেনে ভালো লাগলো। হয়তো অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে, বাসা থেকে দুপুরে ভাত খাইয়ে দিয়ে বলতো রোজা হয়েছে। এখনো এই টেকনিক চলে আসছে ছোটদের ক্ষেত্রে!
ধন্যবাদ দিদি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
শৈশবের সময়টা সব সময় মধুর এবং স্মৃতিময় হয়ে থাকে। আপনি আপনার শৈশবের রোজার সময় আমাদের মাঝে লিখে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো আপনার সেই শৈশবের স্মৃতি জানতে পেরে।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।