স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে কেউ মনে রাখবে না!
22-11-2023
০৮ অগ্রহায়ণ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকতে পারাটাই মুখ্য বিষয়! কিন্তু দিনশেষে আমরা ভালো থাকতে পারি না। হয় শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পরি নয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পরি। তবে দু দিক মিলিয়ে ভালো থাকাটাই কঠিন। যাক, ঐদিকে গেলাম না। এতোক্ষণে হয়তো বুঝে গেছেন কি বিষয় নিয়ে লিখতে চলেছি। আসলে আমরা মানুষ, আমাদের চাহিদাও একেক সময় একেক রকমের। কেউ অল্পতেই সুখী কেউ বা আবার অধিক পেয়েও সুখী নয়। আসলে মানুষ খুবই স্বার্থপর! স্বার্থ যতক্ষণ আছে ততক্ষণ দেখবেন সবাই আপনার পাশে থাকবে, আপনাকে বাহবা দিবে। স্বার্থ ফুরিয়ে গেলেই শেষ! তাকে আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তবে স্বার্থেরও একটা লিমিট আছে! মাঝে মাঝে আমরা এতটাই স্বার্থান্বেষী হয়ে পরি তাকে খুন করতেও দ্বিধা করি না।
একজন বন্ধুর সাথে আরেকজন বন্ধুর ততটুকুই স্বার্থ থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত সে বিপদে এসে দাঁড়াবে । তবে অনেক বন্ধুই দেখবেন বিনা স্বার্থে কতো উপকার করে থাকে আমাদের। কিন্তু দিনশেষে তাদের উপকারের কথা আমরা ভুলে যায়, ভুলে যায় তারাও বিপদে পাশে ছিল। যখনই আমাদের স্বার্থ শেষ তখনই সে বন্ধুর খোজঁখবর নেয় না। দুনিয়াটা চলছে এভাবে! দিনশেষে স্বার্থের জন্য যারা এতো কিছু করে তারাই ভালো থাকে।
আমিও কিন্তু একজন স্বার্থপর মানুষ! স্বার্থের জন্য সবকিছুই করতে পারি। তবে সেটা লিমিট ক্রসের থেকেও বেশি নয়। অনেকেই স্বার্থের লোভে পরে খারাপ কাজ করতে দ্বিধাবোধ করে না। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করি। অবশ্যই এখানে আমার স্বার্থ রয়েছে! এতো কষ্ট করি, পরিশ্রম করি সবকিছুর পিছনেই স্বার্থ! টাকার জন্যই এতোকিছু। কিছু টাকা পেলে একটা সংসার চলে যায়। আরেকবার বাচারঁ স্বপ্ন তৈরি হয়। মাঝে মাঝে ভাবী আমিও তো ভীষণ স্বার্থপর মানুষ।
ধরুন, একটা ছেলে প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়। স্কুল সেখান থেকে অনেকদূরে! হেটেঁ যাওয়া কষ্টের! সাইকেল চালিয়েই যেতে হয়। সাইকেলই একমাত্র সঙ্গী। ছেলেটা বড় হলো। কলেজে ভর্তি হলো। ভালো রেজাল্ট করায় তার বাবা বাইক কিনে দিল! এরপর দেখা যাবে সে কখনো সাইকেল চালাবে না। ঘরের ভিতর পরে নষ্ট হবে। কিন্তু সাইকেল সাইকেলের জায়গায় রয়ে যাবে। এখন নতুন বাইক পেয়েছে, সাইকেলের কথা কি মনে পরবে। কিন্তু একটা সময় সাইকেলই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী! আজ নতুন বাইক পাওয়ায় সাইকেলের কথা ভুলে গিয়েছে! এতো সাধারণ উদাহরণ একটা!
হারুন সাহেবের কোটি টাকার সম্পত্তি। তার সম্পত্তি আত্মসাথের জন্য হারুণ সাহেববে ইনিয়ে বিনিয়ে সব দখল করে। হারুণ সাহেব না বুঝে সব দিয়ে দিয়েছে মোরাদ সাহেবকে। মোরাদ সাহেবের স্বার্থ পূরণ হয়ে গেল, এখন আর হারুন সাহেবকে তেল মারবে না। সে তার স্বার্থ হাসিল করতে পেরেছে। এখন হারুন সাহেবকে তার দরকার নেই। আসলে বাস্তবিক জীবনেও এমন ঘটনা ঘটে থাকে। স্বার্থ হাসিল করতে পারলেই ভুলে যাবে আপনাকে। তবে আমরা সবচেয়ে বেশি ভুল করে বসি এই স্বার্থান্বেষী মানুষগুলোকে চিনতে! অনেকটা দেরি হয়ে যায় আমাদের।
দিনশেষে স্বার্থই কিন্তু সব নয়! আপনি সাময়িক সুখ পেলেও একসময় ঠিকই এর রিয়েকশন পেয়ে যাবেন। এটা সিউর, দেরিতে হলেও পাবেন। প্রকৃতি কখনো কাউকে খালি হাতে ফেরায় না। একসময় ঠিকই তার প্রতিশোধ তুলে নিবে। তো কাউকে কষ্ট দেয়ার আগে আমাদের অন্তত একশোবার ভাবা উচিত! স্বার্থের তারণায় আমাদের উচিত নয় কাউকে ক্ষতি করা। সুস্থ্য মানসিকতার মানুষ আমার মনে হয় না এতোটাও স্বার্থান্বেষী হয়!
যাক, আজ এই পর্যন্তই। আশা করছি কথাগুলো ভালো লেগেছে। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🍃
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
twitter share
ভাড়া করে আজকে খুবই চমৎকার একটা বিষয় দেখেছেন। প্রতিটা মানুষ স্বার্থের পেছনে ঘুরে আজ এই স্বার্থ ফুরিয়ে যায় তখনই আপনার পাশে সবাই যেন চলে যায়। নিঃস্বার্থভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের উপকার করার মত এখন আর তেমন কেউ নেই। এরপরও ব্যতিক্রম কিছু মানুষ থেকেই থাকে। খুবই সুন্দর একটা বিষয় লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া, ব্যতিক্রম মানুষ তো থাকবেই অবশ্যই
ঠিক বলেছেন ভাই সবার ভিতরেই স্বার্থ থাকে তবে তা হওয়া উচিত সঠিক।যেমটা আপনি বাংলা ব্লগের উদাহরণ দিয়েছেন। কিন্তুু স্বার্থের জন্য একজনকে ঠকিয়ে উপরে ওঠার চিন্তা একদম ঠিক নয়।কেউ অসময়ে সাহায্যের হাত বাড়ালে তা মনে রাখা দরকার। হারুন সাহেবও মুরাদ সাহেবর ঘটনা অহরহ সমাজে।ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য।
জি আপু, স্বার্থ তো থাকবেই তবে সেটা লিমিটের ভিতরে যাতে কারো ক্ষতি না হয়
আসলেই ভাই স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে কেউ মনে রাখে না। বেশিরভাগ মানুষ দিনদিন প্রচন্ড স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছে। মানুষের সাথে খুব হিসাব নিকাশ করে ওঠাবসা করতে হয়। কারণ স্বার্থপর মানুষদের সাথে মিশলে বিপদ। তারা নিজেদের লাভের জন্য যেকোনো ধরনের ক্ষতি করতেও পিছপা হয় না। মনের মতো বন্ধু না পেলে একা থাকা শ্রেয়। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম ঠিক ধরেছেন ভাইয়া। আসলে দুনিয়াটা এখন কেমন জানি হয়ে গেছে
আপনার লেখা গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনি বেশ দারুন লিখেছেন। আসলে অনেক মানুষই আছে যারা স্বার্থ শেষ হয়ে গেলে একজন আরেকজনকে আর চিনেও না। যদিও বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা স্বাভাবিক কিন্তু সব জায়গায় না। যেমন একজন রাজমিস্ত্রি যদি টাকার জন্য প্রতিদিন কাজ করে। এবং কাজ শেষে সে তার পারিশ্রমিক পাই যদিও এখানে সে স্বার্থের জন্যই কাজ করছে কিন্তু এটা একদমই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু অস্বাভাবিক সেই ক্ষেত্রে যে স্বার্থে কোন বিনিময় থাকে না। অর্থাৎ একজনের বিপদে আরেকজন পাশে দাঁড়ালো কিন্তু সে যখন বিপদে পড়ল তখন আর তাকে চিনলো না। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একদম ভাই ঠিক বলেছেন। আপনার উদাহরণটা দারুণ লাগলো আসলে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে