কোকাকোলা আবিষ্কারের গল্প।।৩১ অক্টোবর ২০২৪
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি কোকাকোলা আবিষ্কারের গল্প করবো।
কোকাকোলার আবিষ্কার ও এর পরবর্তী বাণিজ্যিক সাফল্যের গল্প মূলত ১৮৮০-এর দশকের শেষ দিকে শুরু হয় যখন ড. জন স্টিথ পেম্বারটন একজন আমেরিকান ফার্মাসিস্ট এবং সাবেক কনফেডারেট সৈনিক এক নতুন প্রকারের পানীয় তৈরি করতে উদ্যোগী হন।গৃহযুদ্ধের সময় তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন এবং সেই সময়ে প্রচলিত মারফিনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন।এই আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে এবং নিজের ব্যথা উপশম করতে তিনি নিজেই বিভিন্ন ওষুধ ও পানীয় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিলেন।তারই অংশ হিসেবে তিনি একটি টনিক তৈরি করেন যা পরে কোকাকোলার মূল রেসিপির ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৮৮৫ সালে জন পেম্বারটন একটি নতুন পানীয় তৈরি করেন যার নাম দেন "পেম্বারটন ফ্রেঞ্চ ওয়াইন কোকা"।এই পানীয়টি মূলত ফরাসি "ভিন মেরিয়ানি" নামক একটি কোকা ওয়াইন থেকে অনুপ্রাণিত ছিল যা কোকা পাতা থেকে তৈরি এবং তাতে অ্যালকোহল মিশ্রিত থাকত।পেম্বারটনের পানীয়তে কোকা পাতা ও কোলা নাটের মিশ্রণ থাকত যা মস্তিষ্কে উদ্দীপনা ও শক্তি প্রদান করত।কোলা নাট ক্যাফেইন প্রদান করত আর কোকা পাতায় কোকেনের সামান্য উপস্থিতি ছিল যা সেই সময়ে আইনি ছিল এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হত।
১৮৮৬ সালে যখন পেম্বারটন তার পানীয়টি আরও জনপ্রিয় করার জন্য কাজ করছিলেন, তখন তার সহযোগী ফ্র্যাঙ্ক এম. রবিনসন এই পানীয়টির নাম দেন "কোকাকোলা"।রবিনসন নামটি এমনভাবে ডিজাইন করেছিলেন যাতে এটি আকর্ষণীয় দেখায় এবং সহজেই স্মরণযোগ্য হয়।তিনি নিজেই কোকাকোলার প্রথম লোগো ডিজাইন করেন হাতে লেখা স্টাইলে যা আজও কোকাকোলার মূল লোগো হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
শুরুর দিকে কোকাকোলাকে ওষুধ হিসেবে প্রচার করা হত এবং এটি শুধুমাত্র ফার্মেসিতে বিক্রি হত।পানীয়টি তখন ওষুধের সিরাপ হিসেবে এক গ্লাস সোডা পানিতে মিশিয়ে পরিবেশন করা হত। কোকাকোলা মূলত "মস্তিষ্কের টনিক" হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিল যা ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হত।তবে ১৮৮৬ সালে আটলান্টার জেকবস ফার্মেসিতে কোকাকোলার প্রথম বিক্রয় শুরু হয়।প্রথম বছর কোকাকোলার বিক্রি তেমন ভাল ছিল না তবে পরবর্তী কয়েক বছরে পানীয়টি মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
১৯০০-এর শুরুতে যখন কোকেনের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়তে শুরু করে তখন কোকাকোলার ফর্মুলায় পরিবর্তন আনা হয়।১৯০৪ সালে কোকা পাতার এমন একটি প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয় যার মাধ্যমে কোকেনকে সম্পূর্ণরূপে মিশ্রণ থেকে বাদ দেওয়া হয়।এরপর থেকে কোকা পাতার শুধু "ডিকোকেইনাইজড" বা কোকেনবিহীন অংশ ব্যবহার করা হয় যা আজও কোকাকোলার ফর্মুলায় রয়েছে।
১৮৮৮ সালে ড. পেম্বারটন কোকাকোলার ব্যবসায়িক অধিকার বিক্রি করেন কারণ তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছুটা আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন।এরপর এএসএ ক্যান্ডলার নামের একজন ব্যবসায়ী কোকাকোলার অধিকার কিনে নেন এবং কোকাকোলাকে একটি সফল ব্র্যান্ডে পরিণত করেন।ক্যান্ডলারের অধীনে কোকাকোলা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা পায় এবং দ্রুত বর্ধনশীল হয়ে ওঠে।তিনি ব্যাপক বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেন এবং কোকাকোলার পণ্য সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিতরণ শুরু করেন।
২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কোকাকোলা শুধুমাত্র আমেরিকায় নয় বরং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোকাকোলা কোম্পানি সেনা সদস্যদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে কোকাকোলা সরবরাহ করতে শুরু করে যা পানীয়টির প্রতি মানুষের মধ্যে একটি বিশেষ আবেগ তৈরি করে।এর ফলে যুদ্ধ শেষে বিভিন্ন দেশে কোকাকোলার চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
কোকাকোলা আজ শুধু একটি পানীয় নয় বরং এটি একটি সংস্কৃতি, ব্র্যান্ড এবং বৈশ্বিক প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।এর অনন্য স্বাদ, বিজ্ঞাপন, ব্র্যান্ড ইমেজ এবং বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রচারাভিযানের মাধ্যমে কোকাকোলা বর্তমান যুগেও অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে বিবেচিত।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
কোকাকোলার ইতিহাসটা জেনে ভালো লাগলো দাদা। কোকাকোলা আজ শুধু একটা ব্র্যান্ড নয় বরং জনপ্রিয় একটা পানীয়। অনেক ধন্যবাদ
প্রথমদিকে কোকাকোলা ওষুধ হিসেবে প্রচার করা হতো। কোকাকোলা ফার্মেসিতেই শুধু বিক্রি হতো। ১৮৮৬ সালে জেকবস ফার্মেসিতে প্রথম দিকে এটির চাহিদা তেমন না থাকলেও আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা শুরু হতে থাকে।কোকাকোলা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। ধন্যবাদ ধন্যবাদ দাদা পোস্টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আশা করি শ্রদ্ধেয় ছোট দাদা ভালো আছেন? আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে কোকাকোলা আবিষ্কারের গল্প জানতে পেরে খুব খুশি হলাম। আমরা এতোদিন কোকাকোলা খেয়ে যাচ্ছি কিন্তু কোকাকোলা আবিষ্কার হওয়ার গল্প জানি না। বেশ ভালো লাগলো পুরো পোস্ট টি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা, ভালো থাকবেন।
আসলেই দাদা কোকাকোলা বর্তমান যুগে অন্যতম জনপ্রিয় একটি পানীয় হিসেবে বিবেচিত। কোকাকোলা আমার খুব প্রিয়। বিশেষ করে কাঁচের বোতলের কোকাকোলা পান করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক কোকাকোলা আবিষ্কারের গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Resep coca cola yang sangat misterius ya
কোকাকোলা প্রথমদিকে একটা টনিক হিসেবে ব্যবহার করা হতো এটা জানতাম। তবে ১৯০০ সাল থেকে নাকি এখন পযর্ন্ত এর স্বাদ অপরিবর্তনীয়। এবং কোকাকোলার স্বাদ নাকী দেশ মহাদেশ ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। যদিও এটা সঠিক কীনা জানি না। চমৎকার লাগল আপনার পোস্ট টা দাদা। চমৎকার লিখেছেন আপনি।