কোনো কাজই ছোট নয়!
02-11-2022
১৮ কার্তিক,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
'কাজ করতে হবে আনন্দ নিয়ে, আনন্দের সাথে কাজ করলে সেটা গায়েও লাগবে না! '
উপরোক্ত কথাটি আমি বলিনাই, বলেছে জাহিদ ভাই! তবে জাহিদ ভাইয়ের ব্যাপারে আজকে কিছু লিখব না। আজ শুধু কাজ নিয়েই লিখবো, হাহাহা!
আসলে কাজ আমাদের লাইফের গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট! কাজ করার মাধ্যমেই যেন আমাদের জীবকা নির্বাহ করতে হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক রকমের কাজ থেকে থাকে। আবার আমাদের চারপাশে তাকালেই দেখা যায় শ্রমজীবী মানুষদের! সেই সকালে বেরিয়ে পরে তারপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা! শ্রমজীবী এই মানুষদের কাজের বিনিময়ে যে টাকা উপার্জন হয় তা দিয়েই চলে যায় সংসার। দিনশেষে তারা সুখী! পরিবারের প্রিয় মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছে তো! এটাই বা কম কিসের। কিন্তু শ্রমজীবী এই মানুষগুলোকে আমরা কি সঠিক কদর করছি? একদমই না। সমাজের কিছু শ্রেণীর মানুষ আছে যারা শ্রমজীবী এই মানুষগুলোর কাজের সঠিক সম্মানটুকু দূরে থাক কদরই করে না। অথচ তারা কিন্তু এক লাফে গাছে উঠে নি! আগে তো গাছের গোড়া থেকে উপরে উঠতে হবে!
বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনীর দিকে তাকালেই দেখা যায়, তারাঁ কত সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন সমাজের প্রতিটি পেশাকে! কোনো কাজকেই কখনো ছোট মনে করেনি। বরং ছোট কাজটিও তাদের কাছে মনে হয়েছে মহৎ একটি কাজ করে ফেলেছে। কাজ ছোট আর বড় বলতে তারা কখনো কিছু ভাবেনি। তাদের কাছে সব কাজই কাজ মনে হতো! তাই তারাঁ জীবনে সফল হতে পেরে! আর সফল হতে পেরেছে তারাই যারা, কোনো কাজকে কখনো ছোট মনে করেনি! বিষয়টা আরেকটু ক্লিয়ার করি!
দুদিন পর আজ প্লান্টে গিয়েছিলাম! সকাল সকাল বাহিরে খুব রোদ! শরীরে এখনও যেন জ্বর রয়েছে। কিন্তু কি আর করার এই শরীর নিয়েই প্লান্টে গেলাম! আমাদের টিম ওয়ার্ক কাজ ভাগ করা থাকে। এইদিন এই টিম কাজ করবে আবার আরেকদিন আরেক টিম কাজ করবে। যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমাদের টিমে চারজন! আজকে আমাদের গাইড করিয়েছিল বদরুল আলম স্যার! আসলে প্লান্টে এসে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি! বিশেষ করে বাস্তব জগত ও প্র্যাকটিক্যাল লাইফ সম্পর্কে ব্যাটার আইডিয়া হয়েছে! যাক, এ ব্যাপারে আর না বলি! কাজের সিডিউল অনুযায়ী আমাদের আজকের কাজ ছিল সাব স্টেশনের ভিতরে। স্টোর রুম থেকে আগেই আমাদের হাত মোজা দেয়া হয়েছিল! আমরা চারজন হাত মোজা পরে নিলাম। তারপর বদরুল আলম স্যারের সাথে চলে গেলাম সাবস্টেশনের ভিতরে! সাথে ছিল জাহিদ ভাই! এখানে ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করছে দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে!
যাক, আজকে আমাদের কাজ দিয়েছিল সাবস্টেশনের ভিতরে বড় বড় ঘাস হয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করা ! পাথর ভেদ করে ঘাস বের হচ্ছে। এসব ঘাস থাকলেও সাবস্টেশনের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের গ্রাউন্ডিং ও ইন্সুলেশনজনিত সমস্যা দেখা দেয়। মাঝে মাঝে সাবস্টেশনের ভিতরে ঘাসগুলো পরিষ্কার করতে হয়! তো আমরা চারজন হাতে মোজা লাগিয়ে ঘাস পরিষ্কার করতে থাকি। ঠিক তখন জাহিদ ভাই আমাদের সাথে তার কাজের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করে। উনার কাছ থেকে একটা কথা শুনে আমার খুব ভালো লেগেছিল! উনি আসলে কাজ করেন মনের আনন্দ নিয়ে, রিলেক্স মোডে! আর কোনো কাজকেই ছোট মনে করেন না! আমাদের বললেন, আমরা ডিপ্লোমা শেষ করে এখানে ঘাস পরিষ্কার করছি! যদিও এটা কাজ। কাজটাকে ভালোবেসে করলে ভালো লাগবে না হয় ভালো লাগবে। ডিপ্লোমা পাস করে কেন আমি ঘাস পরিষ্কার করবো? এরকম চিন্তাভাবনা কখনোই মাথায় আনা যাবে না। জাহিদ ভাই বলেন যে, আমাদের বাঙালিদের মধ্যে ইগোটিক প্রবলেম কাজ করে বেশি। তাই তারা এতো পিছিয়ে আছে! একজ বিসিএস পাস করা ইঞ্জিনিয়ারকে যদি ট্রান্সমিশন লাইনের একটি তার সংযোগের কথা বলা হয় সে নিঃসন্দেহে পারবে না! সাহায্যের হাত বাড়াতে অন্য কারো উপর! আসলে নিজের ভিতরে ইগোটিক প্রবলেম এর জন্যই বাঙালিদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি হাতিয়ে নিচ্ছে বিদেশীরা!
আসলে জাহিদ ভাইয়ের কথাগুলো শুনে আমার খুবই ভালো লেগেছিল! দেশের এই অধঃপতনের পিছনে মনে হয় আমরাই দায়ী! দুই টাকার কাজ আমরা না করে সেটা দশ টাকা দিয়ে বাহিরের লোক দিয়ে করিয়ে থাকি! এতো তো আমাদেরই ক্ষতি হচ্ছে। বাঙালি বোকা রয়েই গেল। নিজের কাজের মূল্যায়ন দিতে জানবে কবে! যেদিন নিজের কাজের মূল্যায়ন দিতে জানবে সেদিনই এতো অভাব অনটন থাকবে না! কারো কাছে হাত পেতেও হয়তো চলতে হবে না! দেশটা তো আমাদের সো আমাদের উচিত দেশটাকে নিয়েও ভাবা! দেশ মাতৃকার উন্নতির জন্যও কিছু করা! যাক আর ওদিকে না যায়।
আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি শুধু আপনাদের জানাতে চাই, আসলে কোনো কাজকেই ছোট মনে করা যাবে না। আমার স্বপ্ল জ্ঞানে যা বুঝতে পেরেছি, সকল কাজই কাজ, কোনো কাজই ছোট নয়! কাজকে সম্মান করতে শিখুন, ভালোবাসুন। তবে আপনিও একদিন মহৎ ব্যক্তিদের কাতারে চলে যাবেন। আমি বিশ্বাস করি কাজের মাধ্যমেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব। মন মানসিকতা থাকতে হবে সবসময় পজেটিভ।
যাক, অনেক কিছুই বলে ফেললাম! আমি আসলে মোটিভেটর নয়! শুধু মনের ভিতরে লুকানো কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম! আর আমার বাংলা ব্লগ আমাকে সে সুযোগটি করে দিয়েছে। এজন্য আমি চির কৃতজ্ঞ 🌼। পরিশেষে বলতে চাই, কাজকে ভালোবাসুন, সম্মান করুন। সকলের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR

আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আপনি ঠিক বলেছেন পৃথিবীতে কোন কাজে ছোট না। তাই সকল শ্রম জিবি মানুষকে সম্মান করা উচিত। জীবিকার তাগিদে একেক জন একেক কাজ করতেই পারে তাই বলে কাউকে ছোট করা উচিত না।। আপনার আজকের পোষ্টটি আমার খুবই ভালো লেগেছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছেন আপনি। আপনাদের কাজের জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
জি আপু! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 🌼
আপনি আজকে বেশ ভালোই একটা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। আমার কাছে কিন্তু বিষয়টা বেশ ভালই লেগেছে। বিশেষ করে আমি নিজেও মনে করি যে কোন কাজ ছোট নয়। আর পরিশ্রমের তাগিদে সকলের সেই সকাল বেলা উঠে ছোটে। যেকোনো কাজকে আমাদের ছোট করা উচিত না। প্রত্যেকটা কাজকে সম্মান করা উচিত। আপনি আপনার পোস্টে অনেক বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা বুঝিয়েছেন বেশ ভালো লাগলো।
জি আপু! আমাদের উচিত প্রত্যেক পেশা ও কাজকে সম্মান করা! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো । আসলে কোন কাজ ছোট নয় সৎ ভাবে করাটাই উত্তম। জীবিকা নির্বাহের জন্য যেকোনো কাজ সৎভাবে করাটাই হলো মহৎ কাজ। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া!