ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ-শীত ঋতুতে অসহায় মানুষের জন্য এগিয়ে আসুন।
সবাইকে শুভ সন্ধ্যা,
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের নতুন ব্লগ। আশা করি বন্ধুরা পরিবার-পরিজনকে নিয়ে সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। বন্ধুরা আবার হাজির হয়ে গেছি নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমার দৈনন্দিন জীবনের বিষয় শেয়ার করতে। সেখানে থাকে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি। চেষ্টা করি সুন্দর সুন্দর বিভিন্ন জিনিসের ফটোগ্রাফি শেয়ার করার। তাও সময় সুযোগ পেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিতে চেষ্টা করি রেসিপি। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো একটি জেনারেল রাইটিং।
নিশ্চয়ই শিরোনাম দেখে বুঝতে পারছেন আমি আজকে কি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। হ্যাঁ আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব শীতের অসহায় মানুষ নিয়ে কথা। আমরা সবাই চেষ্টা করি শীতের সিজন কে বেশ ভালোভাবে উপভোগ করার। আমরা সবাই অপেক্ষা করে থাকি শীতের সিজনে আগমনের জন্য। আবার অনেকেই খুশিতে উল্লাসে মেতে উঠেন শীতের সিজনকে পেয়ে। বিশেষ করে শীতের এই সিজন আমাদের প্রকৃতি খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ওঠে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে শীতের সিজনে আমরা অনেক মজার মজার পিঠা খেয়ে থাকি। গ্রামে গঞ্জে কিংবা শহরে যেদিকে তাকাই না কেন বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে শীত ঋতুকে কেন্দ্র করে। তাই ধনী গরিব নির্বিশেষে সবাই এই মেলায় যেয়ে আনন্দ উপভোগ করি। এই শীত সিজনকে যে যার মত করে উপভোগ করে থাকেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে শীত ঋতু সবার জন্য প্রিয় নয়। যখন আমরা শীতের সিজনে রাস্তা দিয়ে হেটে যাই দেখা যায় যে অনেক অসহায় মানুষ শুয়ে রয়েছেন। তাদের গায়ে কোন চাদর কিংবা শীতের কম্বল নেই। এ ধরনের মানুষগুলোকে দেখলে খুবই কষ্ট হয়। বিশেষ করে শীত ঋতু তাদের জন্য খুবই কষ্টকর। কারণ তারা ভালোমতো শীতের কাপড় পরিধান করতে পারে না। রাস্তার মধ্যে শুয়ে পড়ে। তাছাড়াও দেখা যায় যে অনেক মানুষ রয়েছে যারা রিক্সা চালক এবং দিনমজুর। তাদের গায়ে শীতের কাপড় থাকে না। অনেক কষ্ট করে তারা দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মুখে খাবার এনে দেয়। শীতের সিজনে দেখা যায় ওইসব মানুষগুলো সন্ধ্যার পরে আর রাস্তাঘাটে দেখা যায় না।
বিশেষ করে তাদের ভালো কাপড়-চোপড় পড়ার সুযোগ থাকে না তাই তারা এই শীতের মধ্যে রাত জেগে কাজ করতে পারে না। তাই সন্ধ্যার পরে যখন প্রচুর পরিমাণ শীত নেমে যায় তারা ঘরে চলে যায়। তাদের ছিঁড়া কাপড় গুলো দিয়ে তারা শরীর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল হলেও দেখা যায় যে তারা ঘরের মধ্যে একদম গুটিয়ে বসে থাকে। তাছাড়া ও দেখা যায় যে ঘরের আশেপাশের আগুন জ্বালিয়ে বসে থাকছে। বিশেষ করে তারা ভিটে বাড়ির চারপাশে গাছ থেকে ঝরে পড়া পাতাগুলো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীরটা গরম করে থাকেন। যখন সূর্য উদয় হয় চারদিকে রোদ ছড়িয়ে পড়ে তখন তারা কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। এই অল্প সময়ের মধ্যে যে অল্প আয় করে থাকেন সেগুলো দিয়ে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেয়।
তাছাড়া দেশে যখন অতিরিক্ত শীত প্রবাহিত হয় বিশেষ করে শৈত প্রবাহ প্রবাহিত হয় তখন তারা একদম ঘর থেকে বের হয় না। কারণ এত অতিরিক্ত শীতের মধ্যে তারা কাজ করবে কিভাবে। যেহেতু অতিরিক্ত শীতে তারা গরম কাপড় পরতে পারেনা তাই তারা ঘর থেকে বের হয় না। কারণ বের হলেই তারা ঠান্ডা জনিত সমস্যাই পড়ে যায় ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এদের জীবন যাপন দেখলে খুবই কষ্ট হয়। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে যেমন তারা কাজ করতে পারে না তেমনি অতিরিক্ত শীতের কারণেও কাজ করতে না পেরে তাদেরকে অনাহারে দিন যাপন করতে হয়।
কিন্তু আমাদের সমাজের অনেক বিত্তবান রয়েছেন আসলে তাদের জন্য কয়জন বা এগিয়ে আসেন। যাদের আছে তাদের হয় না তারা আরো অনেক বেশি সম্পদ গড়াতে চাই। সত্যি আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এতো নিকৃষ্ট মানুষ আছে যা দেখলে খুবই খারাপ দেখায়। গ্রামে গঞ্জের দিকে তাকালে দেখা যায় অনেক মানুষ আছেন যাদের অনেক জায়গা সম্পত্তি অনেক টাকা পয়সা আছে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষের বিদেশি টাকা পয়সা অনেক বেশি। কিন্তু এত টাকা পয়সা কিংবা সম্পদ থাকার পরেও তারা গরীবদেরকে সহায়তা করে না। তারা এত কিপটামি করে চলাফেরা করে তারা নিজেরাও নিজেদের ভালো মন্দ খায় না। কিন্তু এদের যেমন ভালোমন্দ ভোগ করার অধিকার আছে তেমনি আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা তাদের অধিকার এবং দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
যদিও আমি এত অর্থ সম্পদশালী নয় মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে এবং মধ্যবিত্তভাবে জীবন যাপন করার চেষ্টা করি। যদিও আমার হাজব্যান্ড প্রতিবছর যারা অসহায় দরিদ্র রয়েছেন তাদেরকে উনারা শীতবস্ত্র দিয়ে থাকেন তাদের যত কমিউনিটির মাধ্যমে যত উদ্যোগে। কিন্তু সেই দিক থেকে আমি নিজ শরীক না হলেও আমি নিজে নিজেই আমার ঘরে থাকা যে কাপড় গুলো থাকে বাচ্চাদের পড়ার অবশিষ্ট সেগুলো নিয়ে আমি গ্রামে চলে যাই। প্রতি বছর আমি অনেকগুলো কাপড় দিয়ে থাকি বাচ্চাদের। যেহেতু আমার বাচ্চাদের অতিরিক্ত কাপড় পড়ে থাকে তাই অবশিষ্ট কাপড় গুলো আমি আমার গ্রামের বাড়ির আশেপাশের গরিব সন্তানদেরকে দিয়ে আসি। যদিও আমি নতুন কিনে দিতে পারি না কিন্তু আমার সন্তানদের যা থাকে সেখান থেকে আমি অতিরিক্ত কাপড় গুলো ব্যাগে করে নিয়ে তাদেরকে দিয়ে আসি।
আসলে এই ধরনের অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করতে পারলে মানসিকভাবে অনেক শান্তি পাই। হোক না সেটা ১০ টাকার জিনিস অথবা দুই টাকার জিনিস। কিন্তু আমার এই দশ টাকা কিংবা দুই টাকার কারণে যদি কেউ উপকৃত হয় তাতে মানসিকভাবে অনেক বেশি শান্তি পাওয়া যায়। এই মানসিক শান্তি গুলো দূরে কোথাও ঘুরে এসে পাওয়া যাবে না কিংবা হাজার টাকা খরচা করলেও পাওয়া যাবে না। এই ধরনের মানবিক কাজগুলো আমাদের প্রত্যেকের করা উচিত। কারণ আমাদের যা আছে তা দিয়ে যদি আমাদের পরিবারের খরচ মিঠিয়ে অবশিষ্ট অল্প টাকা আমরা অসহায় মানুষদের জন্য খরচ করে থাকি তাহলে আমাদের কারণে তাদের সংসার গুলো ভালোভাবে চলবে। দিন শেষে তারা একটু ভালো মন্দ পড়ে থাকতে পারবে।
তারা গরম কাপড় পরিধান করে কাজে যেতে পারবে। কাজ করতে পারলে তারা ভালো কিছু ইনকাম করতে পারবে যার কারণে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারবে। আর গরম কাপড় পরিধান করে ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারবে। যার কারণে তারা একটি সুন্দর সুস্থ জীবন পাবে। এ ধরনের অসহায় মানুষগুলো আমার পাশাপাশি আপনার আশেপাশে রয়েছে। তাই আমরা এগিয়ে আসি সবাই মিলে এই অসহায় মানুষদের কে শীত বস্ত্র বিতরণ করে তাদেরকে একটু রক্ষা করার চেষ্টা করি। তাহলে তারাও এই শীত ঋতুকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবে।
আসুন আমরা সবাই মিলে যৌত উদ্যোগে হোক কিংবা ব্যক্তিগতভাবে হোক শীতবস্ত্র বিতরণ করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তাদেরকে শীত ঋতু আনন্দের সাথে উপভোগ করার জন্য সুযোগ করে দিন। তাহলে সবাই সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবে। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে। সময় দিয়ে আমার ব্লগ ভিজিট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
লেখার উৎস | নিজের অনুভূতি থেকে |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
#winterseason #suffering-poorpeople #feelingsshare #creativewriting #amarbanglablog #steemxclusive #shy-fox
আমার আজকের টাস্কঃ-
শীতকালে আমাদের আশেপাশের অনেক মানুষ রয়েছে, যারা ভালো মতো শীতের কাপড় পড়তে পারেন। আমরা যারা একটু স্বচ্ছল তারা এই সব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো। এছাড়াও আমাদের আশেপাশে অনেক গুলো পশু প্রাণি রয়েছে, যেগুলো ঠান্ডায় অনেক বেশি কষ্ট করে। আমরা এই সব পশু প্রাণির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।
শীতকাল আসলে এদের জন্য খুবই খারাপ লাগে ভাইয়া।
আমাদের আয় থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে সেইসব মানুষগুলোর জন্য কিছু কিনে দেওয়া অবশ্যই উচিত বলে মনে করি। যারা দিনের পর দিন রাস্তায় শুয়ে থাকেন তাদের কিছু কিনে নেবার ক্ষমতা নেই। তাই আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াই তবে কোনভাবেই তারা বেঁচে থাকতে পারবে না। তাই আপনি যে আবেদন করলেন একেবারে যথোপযুক্ত বলেই মনে করি।
আপনি একদম ঠিক বলছেন দাদা আমাদের সবার উচিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
Twitter
আপনি অনেক বেশি সুন্দর একটা টপিক নিয়ে এই পোস্টটি লিখেছেন। আমাদের আশেপাশে তাকালে আমরা এরকম অনেক মানুষকে দেখতে পাবো যাদের শীতকালে পড়ার মতো কোনো জামা কাপড় নেই। তারা অনেক বেশি কষ্টে থাকে এই শীতের সময়। আর আমাদের সবার উচিত এই মানুষগুলোর পাশে থাকা।
সুন্দর মতামত শেয়ার করলেন আপনি অনেক ধন্যবাদ।
আপনার এই কথার সাথে আমি নিজেও পুরোপুরিভাবে একমত। এই শীতে আমাদের সবার উচিত অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো। কারণ এই মানুষগুলো অনেক বেশি কষ্টে রয়েছে এই সময়টাতে। তারা পড়ার জন্য একটা জামাও পায় না। তাদের কথা ভাবতেই অনেক বেশি খারাপ লাগে। এভাবে যদি আমরা সবাই মানুষের পাশে দাঁড়াই তাহলে অনেক বেশি ভালো হবে।
শীতের দিনে তারা শীতের কারণে ভালোভাবে কাজ করতে পারেনা।
শীত কারো কাছে আরামদায়ক আর কারো কাছে কষ্টের কারণ। শীতের সময় অনেকে কষ্ট করে আবার অনেকে আরামে সময় কাটায়। আসলে আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা শীতে প্রচুর কষ্ট করে। তাদের কথা সবার ভাবা উচিত।
আমাদের উচিত তাদের পাশের থাকার গরম কাপড় দিয়ে তাদের সহযোগীতা করার শীতের দিনে।
গরমকাল যেমন তেমন শীতের সময় অসহায় মানুষরা অনেক কষ্টের দিন পার করে। আমাদের উচিত মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদেরকে সাহায্য করা। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু। বেশ দারুণ লিখেছেন ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
একদম ভাইয়া আমাদের সবার উচিত অসহায় মানুষকে সহযোগীতা করা।
আসলে শীত কারো জন্য হয় আরামদায়ক৷ আবার কারো জন্য শীত হয় কষ্টদায়ক৷ এই শীতের সময় আমাদের সকলকেই তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত যারা এই শীতের সময় অনেক কষ্ট করে৷ বিভিন্ন ধরনের কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের শীত অতিবাহিত হয়৷ আজকে আপনি খুব সুন্দর পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্টটি পড়ে৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷