অনেকদিন পর শীতকালীন ফসলের মাঠে ফটোগ্রাফি ও শাক তোলার উদ্দেশ্যে
আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। হয়তো টাইটেল পড়ে বুঝে ফেলেছেন আমি আজকে আপনাদের মাঝে কি পোস্ট করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছি। তাই চলুন বিস্তারিত আলোচনার মুহূর্তে একসাথে সময় অতিবাহিত করি এবং নতুন কিছু ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করি।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
আমি আর মারুফ দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের বন্ধনে একসাথে বেড়ে উঠেছি। আমার ভালোলাগা তার কাছে ভাগাভাগি করি এবং সে তার ভালোলাগা আমার কাছে ভাগাভাগি করে রাখে। ঠিক এভাবেই দীর্ঘদিন পথ চলা দুজনার। বিভিন্ন পথ চলার মধ্যে থেকে শীতকালীন ফসলের মাঠে দুজন একসাথে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি সেই ছোটকাল থেকে। পাশাপাশি বাইতুর শাক তোলার বিষয়টাই আমাদের থেকে থাকে প্রতি বছর বেশি না হলেও একবার। ঠিক এমন একটি ইচ্ছা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিজের বাড়ি থেকে সাত কিলো দূরে একটি ফসলের মাঠে নেমে পড়েছিলাম। তবে সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যটা গ্রহণ করা হয়েছিল অনেক আগেই যেহেতু আমরা প্রতিষ্ঠিতই একবার না একবার ফসলের মাঠে নেমে থাকি। হয়তো বলতে পারেন আমাদের এখানে কি ফসলের মাঠ নেই। অবশ্যই আমাদের এখানেও ফসলের মাঠ রয়েছে তবে শীতকালীন বিভিন্ন ফসল আমাদের গ্রামে বেশি একটা দেখা যায় না। যেহেতু আমাদের এখানে অনেক পুকুর। আমাদের গ্রামে ধান আর মাছে ভরপুর। তাই আমরা উদ্দেশ্য গ্রহণ করেছিলাম যেখানে সর্বপ্রকার শীতকালীন ফসল দেখতে পারব ঠিক তেমন একটি স্থানে আমরা যাব। তাই মন স্থির করেছিলাম ২ গ্রাম পর বাদিয়াপাড়া নামক গ্রামের পরবর্তী মাঠে আমরা কিছুটা সময় অতিবাহিত করব একদিকে ফটোগ্রাফি অন্যদিকে কিছু শাক তোলার জন্য। কারণ আমাদের দুইজনার এই মাঠটা অতি প্রিয়। আমরা নিজের বাসা থেকে বামুন্দি নামক বাজারে এ পথ দিয়ে যাওয়া আসা করে থাকি। তাই এতটা ভালোলাগা। যাইহোক গতকাল পড়ন্ত বিকেলে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। মোটরসাইকেলটি রেখে আমরা ইচ্ছেমতো অনেক দূর হেঁটে চলে গেলাম মাঠের মধ্যে। পাশাপাশি প্রথমে সরিষা ফুলের ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাওয়ায় সরিষা ফুল প্রায় শেষের দিকে। সরিষা ফুলের ফটোগ্রাফি অবশ্য আজ থেকে কুড়ি ২৫ দিন আগে করতে পারলে ভালো হতো।
সরিষা ফুলের ফটোগ্রাফি করা শেষ করে চলে গেলাম গমের জমিতে। সেখানে যেয়ে দেখতে পেলাম কিছু কিছু গমের গাছ ছোট আবার কিছু কিছু জমিতে গমের শীষ এসে গেছে। পড়ন্ত বিকেলে মন মুগ্ধকর একটা পরিবেশ মনে হচ্ছিল আমাদের দুজনার। আমরা যখন দুজন এভাবে শীতকালীন ফসলের মাঠে বেড়াতে যেতাম তখন সত্যি ভুলে যেতাম অন্যান্য চিন্তাধারা। বাড়ি গাড়ি সবকিছু ভুলে শান্তিতে বসে থাকতাম গল্প করতাম ঘুরে বেড়াতাম,অবশ্য ফটোগ্রাফি খুব কম করেছি তখন কারণ বেশি ফটোগ্রাফির প্রয়োজন হতো না। যাইহোক সেই সমস্ত অনুভূতিগুলো মনের মধ্যে ভেসে উঠেছিল দুজনার এবং বলাবলি করছিলাম। সেই দীর্ঘদিনের বেড়ে ওঠা কবে কখন কোথায় কিভাবে চলেছি যেন আস্তে আস্তে মনের মধ্যে ভেসে উঠতে থাকলো। মাঝে মাঝে মনে হয় বউ ছাড়তে রাজি আছি বন্ধুত্ব ছাড়তে রাজি নেই আমরা। কারণ আমাদের দুজনার বন্ধুত্ব এতটাই স্ট্রং। আশা করি আপনারা দোয়া করবেন আমাদের বন্ধুত্ব যেন আজীবন টিকে থাকে। যাইহোক আশেপাশে যেদিকে তাকাই যেন সবুজে ঘেরা সুন্দর এই সোনালী ফসলের মাঠ এই দেখে যেন প্রাণ ভরে যায় এবং আরো ভালো লাগে নিজের দেশকে নিয়ে ভাবতে এবং দেশের প্রতি আরো অনুগত্য প্রকাশ করতে।
মাঝে মাঝে মনের মধ্যে কবি কবি অনুভূতি সৃষ্টি হয় ফসলের মাঠে আসলে। কত না সুন্দর সুরেলা সুফলা আমাদের এই বাংলাদেশ। যেখানে শীতকালে বিভিন্ন প্রকার ফসলে ভরে ওঠে চারিপাশের মাঠগুলো। সরিষার ভুঁই গমের জমি অতিক্রম করে আমরা চলে গেলাম ভাললাগা কিছু ভুট্টা গাছের জমিতে। এখানেও দেখি একই অবস্থা কিছু ভুট্টা কাছে ফুল চলে এসেছে আবার কিছু কাজ অনেক ছোট। কৃষক ভাইয়েরা যখন যেভাবে ফসল ফলায় আর কে। তবে হয়তো এই ভালোলাগা আমাদের দুজনার মধ্যে রয়েছে বলেই আমরা দুজন পুকুরের বাউরিতে শীতকালে সবজি তৈরি করে থাকে। যাই হোক দুজনা খুব সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করছিলাম পড়ন্ত বিকেলে। একদিকে সরিষার ক্ষেত আরেক দিকে গমের ক্ষেত অন্যদিকে ভুট্টার ক্ষেত সব মিলিয়ে দারুন একটা পরিবেশের মধ্যে জেনো হারিয়ে গিয়েছিলাম অন্যরকম জগতে। পাশাপাশি আমাদের দুজনার তো রয়েছে মন মাতানো এই সেই গল্প।
এরপর কিছুটা সময় ধরে আমরা দুইজন গল্পে গল্পে বায়তুর শাক উঠালাম। কারণ এই কাজটা আমাদের দুজনার অনেক দিনের অভ্যাস বছরে একবার হলেও চেষ্টা করে থাকে তোলার জন্য। কারণ আমরা দুজন খুবই পছন্দ করে থাকি এই বায়তুর স্বাদ। বাজারে দেখি অনেকে বিক্রয় করতে আসে,চাইলে বাজার থেকে কিনে নিতে পারতাম কিন্তু ফসলের মাঠে যেয়ে তুলার মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ অনুভব করা যায়। তাও আবার মারুফের সাথে। যাইহোক আমাদের দুইজনের মনের মধ্যে যে কি সুন্দর একটা ভালো লাগা অনুভূতি কাজ করে ওই মুহূর্তটা ফসলের মাঠে তা বলে বোঝাতে পারবো না। সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে নিজের গ্রাম ছেড়ে পাঁচ কিলো দূরে ফসলের মাঠে ঘোরাঘুরি আর বায়তুল শাক অনুভূতিরা সেই রকম। মাঝে মাঝে আমাদের দুজনার কিছু কার্যকলাপে মনে হয় যেন আমরা পাগলামি করে বেড়ায়। তবে পাগলামি নয় ভাললাগা মুক্ত মনে স্বাধীনভাবে তা উপভোগ করা আর যেখানে রয়েছে অন্যরকম ভালো লাগার অনুভূতি ও শান্তি। যেহেতু আমরা সবজি ও শাক আবাদ করে থাকি কিন্তু তা উঠানোর মুহূর্তে এত ভালোলাগা অনুভব করি না। আর যাই হোক এভাবেই কেটে গেল বিকাল টাইমটা।
চিরচেনা সেই মেহগনি গাছের সারি। যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা দুজন ফটোগ্রাফি করেছি এত পড়বে। এখানে দাঁড়িয়ে বড়া খাওয়ার অনুভূতি ও রয়েছে আমাদের দুজনের। এই পথ দিয়ে দীর্ঘদিন চলাচল করেছি এখনো চলাচল করে থাকি দিন বা রাতে। সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করলাম যতদূর চোখ গেল ততদূর গিয়েছিলাম রাস্তা থেকে। ঠিক পূর্বের মতো সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে এখানে দাঁড়িয়ে বড়া কিনে খেয়েছিলাম। পাশের গ্রাম বাদিয়াপাড়া বাজার থেকে মারুফ বড়া এনেছিল। অতি আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করে আমরা গ্রামে ফিরে এলাম সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময়। আর সেই সুন্দর অনুভূতিটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য মাঝেমধ্যে করেছি ফটোগ্রাফি। যেন স্মৃতি হয়ে থাকে স্টিমিটের পাতায়।
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
💖💞💞💖
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্ট, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আপনাদের দুই গ্রাম পরে বাদিয়াপাড়া নামক জায়গাটিতে ঘুরতে গেলেন বাইক নিয়ে। তবে এখন বেশিরভাগ জায়গাতে মাছের প্রজেক্ট করার কারণে এমন ফসলের জমিন কম দেখা যায়। একটু দূরে হলেও আপনারা অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি করেছেন। ফটোগ্রাফির মধ্যে বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর সময় পার করলেন বন্ধুর সাথে। এবং অনেক সুন্দর করে ফটোগ্রাফি করেছেন। ও বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার এই ফসলের মাঠ নিয়ে পোস্ট আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম
ফসলের জমিতে গিয়ে যেন একদম হারিয়ে গিয়েছেন। যেদিকেই তাকানো যাচ্ছে, শুধু সবুজ আর সবুজ। তবে সরিষা ফুলের ভিতরে দাঁড়ানো ছবিগুলো বেশ ভালো লাগছে দেখতে।
ছবিগুলো আরো অনেক দিন আগে তুলতে পারলে বেশ ভালো হতো।