দুই দেশে দুই রকমের শীতের অনুভূতি
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শীতের ধরণ বিভিন্ন রকমের।কোন কোন দেশে বছরের অধিকাংশ সময়ে থাকে শীত, আর গ্রীষ্ম থাকে ৩-৪ মাস। আবার কোন কোন দেশে বছরের অধিকাংশ সময়ই থাকে গরম।যেমন বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যে কম্পেয়ার করলেই বোঝা যায়।এই দেশে অধিকাংশ সময়ই থাকে ঠান্ডা, তাই বাংলাদেশের মতো শীতের আমেজ আর এ দেশে দেখা যায় না।এদেশের মানুষ গ্রীষ্মকালকে বেশ উপভোগ করে।তারা অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে গ্রীষ্মকাল।তবে শীতের ঋতুতে যে স্নো পরে সেই স্নোকে তারা বেশ উপভোগ করে। তবে দুই একদিনের বেশি হলে আবার বিরক্ত লেগে যায়। এছাড়া বাংলাদেশে যেমন শীত কে কেন্দ্র করে নানান ধরনের আয়োজন করা হয়, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে পিঠা পুলির উৎসব।এ সময় ঘরে ঘরে নতুন ধান ওঠানো হয়, আর সেই সুবাদে গ্রামের প্রতিটি ঘরে পিঠা বানানোর ধূম পড়ে যায়।তখন শীত ঋতু একটি উৎসবে পরিণত হয়।তবে শহর অঞ্চলে তেমন পিঠা বানানো হয় না।তবে আমি দেখেছি ফুটপাতগুলোতে পিঠা বিক্রেতারা নানান ধরনের পিঠা নিয়ে বসে থাকে। আর সেই পিঠাগুলোও কিন্তু খেতে বেশ দারুন।আর এদেশের মানুষ তো পিঠা চিনেই না। তবে এ দেশে লন্ডনে একটি পিঠা উৎসব হয়।সেখানে বাঙালিরা নানান ধরনের পিঠা নিয়ে হাজির হয়।দারুণ একটি আমেজ পরিলক্ষিত হয় সেখানে।
তবে শীত ঋতুতে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো কনকনে ঠান্ডায় ঘুম থেকে উঠে মুরি দিয়ে ঠান্ডা খেজুরের রস খাওয়া।তবে এই আমেজ পেতে হলে অবশ্যই গ্রামের বাড়িতে যেতে হতো।কারণ আমাদের গ্রামের বাড়ীতে অনেকগুলো খেজুরের গাছ ছিল।খুব ভরে গাছি গাছ থেকে রসের হাঁড়িগুলো নামিয়ে লাইন ধরে সাজিয়ে রেখে পরে রস ভাগ করত, যা দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো।রস খাওয়ার জন্য খুব ভোরে উঠতাম।যদি ঘুম থেকে ওঠা দেরি হয়ে যেত তখন আর রস পাওয়া যেত না, আর পাওয়া গেলেও তা আর মজা লাগত না কারণ তখন আর ঠান্ডা থাকত না।অনেক বেশি রস হতো, তাই সেই রসগুলোকে পাঠিয়ে দেওয়া হতো গুড় বানানোর জন্য।অন্যরকম এক আনন্দ কাজ করতো তখন।কিন্তু এই দেশে তো আর খেজুরের রস পাওয়া যায় না।খুব বেশি মিস করি খেজুরের রস।লাস্ট কবে খেঁজুরের রস খেয়েছি তাও মনে নেই।
আরেকটি জিনিস খুব ভালো লাগতো।শীতের সময় আম্মা যখন আমাদের শীতের কাপড় চোপড়, লেপ/কম্বল বের করত আলমারি থেকে তখন দারুন এক অনুভূতি কাজ করতো। খুব বেশি ভালো লাগতো সেগুলো দেখে।কিন্তু এদেশে সব সময়ই শীতের কাপড়-চোপড় বাইরেই থাকে।আলমারিতে আর ঢুকানো হয় না।এছাড়া এখানে ব্ল্যাঙ্কেট গুলো বাইরে থাকে বারো মাস, কারণ গরমের সময়ও ব্ল্যাঙ্কেট লাগে।এছাড়া বাংলাদেশে যেমন শীতের সময় পানি গরম করে শাওয়ার করতে হয়, আর এ দেশে বারো মাসই গরম পানি দিয়ে শাওয়ার করতে হয়। কারণ এদেশের পানি গরমের সময়ও প্রচুর ঠান্ডা থাকে। ঠান্ডা পানি দিয়ে শাওয়ার করা সম্ভব হয় না।এছাড়া কিচেনের সিংকে থালাবাসন পরিষ্কার করার জন্য যে পানি আমরা ব্যবহার করি সেই পানিও সব সময় গরম পানি ব্যবহার করি।তাহলে চিন্তা করুন এদেশে পানি সব সময় কত ঠান্ডা থাকে।
এই দেশের শীত মোটেও ভালো লাগেনা।শুধু অপেক্ষায় থাকি কখন সামার আসবে, যদিও দুই তিন মাস থাকে।আরেকটি কথা ভুলে গিয়েছিলাম, বাংলাদেশে শীতের সময় চারিদিকে নানান ধরনের ফুলের সমারোহ দেখা যায়। কিন্তু এদেশে শীতের সময় কোন ফুলের গাছ থাকে না, সবাই সামারের জন্য অপেক্ষা করে।অর্থাৎ পুরো বাংলাদেশের উল্টো।বাংলাদেশে যেমন শীতের সময় ফুলের গাছ বেশি দেখা যায়, আর এ দেশে শীতের সময় কোন ফুলের গাছই পাওয়া যায়না। যাইহোক খুব মিস করি বাংলাদেশে শীতের কিছু আনন্দঘন মুহূর্তগুলো।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালে লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

দুটি দেশের শীতের কম্পেয়ার ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আমাদের ভারতেও বাংলাদেশের মতো শীতের একটা বিশেষ ভালোলাগার অনুভূতি আছে। শীত মানেই পিঠে পুলি আর ঘুরতে যাওয়ার সময়। সে ক্ষেত্রে দুই বাংলার মধ্যে বাঙালির অদ্ভুত কিছু মিল দেখতে পাওয়া যায়। আর শীত মানেই সকলে মিলে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা চিড়িয়াখানা ঘুরতে যাওয়ার দিন। ইংল্যান্ডে যেমন লোকে গ্রীষ্ম খোঁজে, আমরা তেমন শীতের অপেক্ষায় সারাটা বছর বসে থাকি।
খেজুরের রসের কথা বলে তো ছোটবেলার কথা মনে করে দিলেন আপু। আসলে শীতের সময়টা খুবই আনন্দের কাটতো। স্কুল ছুটি হলে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সময় কাটানোর মুহূর্তগুলো আসলেই ভালো ছিল। তাছাড়া শীতের কাপড়-চোপড় বের করার সময় এখন দেখি আমার বাচ্চাদের সেরকম আনন্দ করতে। এই আনন্দগুলো ছোটবেলাতেই ভালো লাগে। যাই হোক পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে গেলাম আপনার পোস্টটি পড়ে।
বাংলাদেশের মানুষ শীতকালটা সত্যিই বেশ উপভোগ করে। এককথায় বলতে গেলে পুরো শীতকাল জুড়ে এক ধরনের আমেজ কাজ করে। খেজুরের রস আমার খুবই পছন্দ। যদিও এখন নির্ভেজাল খেজুরের রস খুব কম পাওয়া যায় বলে ততটা খাওয়া হয় না আমার। তবে এটা ঠিক যেদেশে তীব্র শীত পড়ে, সেসব দেশের মানুষেরা সামারের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। যাইহোক দারুণ লিখেছেন আপু। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বাংলাদেশের সাথে দেখছি ওই দেশের কোন মিল নেই আপু। আমরা শীত অনেক পছন্দ করি। শীতকে ঘিরে আমাদের অনেক আয়োজন থাকে। পিঠাপুলির উৎসব থেকে শুরু করে খেজুরের রস খাওয়া সবকিছুই যেন আবেগ মাখা স্মৃতি। আমাদের এখানে শীতকালে তো প্রচুর ফুল পাওয়া যায়। আর আপনাদের ওখানে শীতকালে ফুল থাকে না এটা শুনে সত্যিই খারাপ লাগছে। একদমই ভিন্ন চিত্র আপু।
শীতের মজা বাংলাদেশের গ্রামেই। এটা আপনিও মেনে নিলেন আপু। ওখানে তো বছরের অধিকাংশ সময় শীত কিন্তু সেই আনন্দ টা সেই আমেজ টা কখনোই থাকে না হা হা। বেশ লাগল আপনার পোস্ট টা। দুই দেশের দুইরকম ভিন্ন অনূভুতি শেয়ার করে নিলেন আমাদের সাথে।