এখন আর শীতে নানু বাড়িতে যাওয়া হয় না।।
বাংলা ভাষায় মনের আনন্দে ব্লগ লেখো-
Image Source -https://pixabay.com/illustrations/hut-village-silhouette-mountains-5836769/
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আবার আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে শীতের স্মৃতি মুলক কিছু অনুভূতি শেয়ার করবো।
এখন ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বর মাস ঘিরে আমাদের জীবনে দারুন কিছু স্মৃতি রয়েছে। কারণ প্রতিবছর স্কুল-কলেজের পরীক্ষা শেষে ডিসেম্বর মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিছুদিন বন্ধ থাকে। আর এই ছুটির দিনে আমরা বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যায়। প্রতিবছরের মত এ বছরও শীতের আগমন ঘটেছে। আমাদের আশেপাশের বাচ্চারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে তাদের দাদির বাড়িতে নানির বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার প্লান প্রোগ্রাম করছে। যে প্লান প্রোগ্রাম আমরাও এক সময় করেছিলাম। সেই স্মৃতিগুলো এখন খুবই মনে পড়ে।
প্রতিবছরের মত এই বছরও শীত এসেছে। কিন্তু এখন আর শীতে নানুর বাড়িতে দাদুর বাড়িতে যাওয়ার কোন প্লান প্রোগ্রাম নেই। আগে যখন ডিসেম্বর মাসে স্কুল কলেজ বন্ধ দিতো তখন কেউ দাদুর বাড়িতে কেউ নানুর বাড়িতে বেড়াতে যেতো। আমাদের দাদু নানুরা আমাদের দেখে কত যে খুশি হতো। মামাদের সাথে কত জায়গায় ঘুরতে যেতাম। শীতের রাতে নানু বাড়িতে গেলে নানু ট্রাং থেকে কম্বল নামিয়ে দিতেন। নতুন কাথা তৈরি করলে আমাদের জন্য রেখে দিতেন। শীতের সকালবেলায় গরম গরম ভাপা পিঠা নানু বানিয়ে দিতেন। আমরা নারিকেল দিয়ে, আখের গুড় দিয়ে এ ভাপা পিঠা খেতাম। কত যে আনন্দ লাগতো তখন।
সব থেকে বেশি মজা হতো যখন সব কাজিনরা একসাথে নানুবাড়িতে আসতো। আমার পাঁচজন মামা আর চারজন খালা। মানে আম্মুরা পাঁচ ভাই পাঁচ বোন। সবার ছেলেমেয়ে রয়েছে। সব কাজিনরা একসাথে হলে নানুবাড়িতে ঈদের আনন্দ বয়ে যেতো। কিন্তু আজ কত বছর হয়ে যাচ্ছে নানু বাড়িতে যাওয়া হয় না। শেষবার কবে গিয়েছিলাম সেটাও ঠিকভাবে মনে নেই। এখন আর নানুবাড়িতে আগের মত আনন্দ পাওয়া যায় না।
এখন আর আমাদের আগের নানু বাড়ি নেই। এখন মামারা বিয়ে করেছে, তাদের বউ এসেছে। নানীর সংসার এখন মামিদের সংসার হয়ে গেছে। দাদুর সংসার এখন কাকিমাদের সংসার হয়ে গেছে। খালারাও এখন আর তেমন আসে না। ফুফুরা যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আমাদেরও আর যাওয়া হয় না। ছোট সময় দাদার হাত ধরে ফুফুর বাড়িতে যেতাম। ফুফু আমাদেরকে পেয়ে কত খুশি হতো। দাদা যদি আমাদেরকে ফুফুর বাড়িতে না নিয়ে যেতো আমরা দাদীর সাথে যেতাম। আজকে দাদা দাদি কেউ নেই। কিন্তু তাদের আদর আমরা কখনো ভুলতে পারবো না।
আমার নানা ও মারা গেছে। শুধুমাত্র নানি বেঁচে আছে। তিনিও অসুস্থ। পাঁচ মামার সংসার হলেও তিনি ছোট মামার সাথেই থাকেন। মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় নানু বাড়িতে যায়। নানুবাড়ির রাস্তা কখনো ভুলতে পারবো না। নানু বাড়ির আশেপাশে এমন কোন পুকুর নেই, যেখানে গোসল করি নাই। নানু বাড়ির আশেপাশে এমন কোন ফলের গাছ নেই, যে গাছে আমি উঠি নাই। বর্ষার পানি আসলে মাছ ধরতাম। শীতের সিজন আসলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অনেক দূর দূরান্তে চলে যেতাম। খালি জমিতে ধানের খেড় দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ভাব নিতাম। ছোট মামার সাথে রাত বিরাতে সকাল বিকাল কত জায়গায় ঘুরেছি। সব এখন স্মৃতি।
এখনো ডিসেম্বর মাস আসে, ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়। অনেকেই নানু বাড়িতে যায়। কিন্তু আমাদের আর যাওয়া হয় না। শীত এসে আবার চলে যাই, কিন্তু আমাদের যাওয়ার সময় হয় না। এখন যেতে আর তেমন ইচ্ছাও করে না। কারণ এখন নানুবাড়িতে গেলেই কাজিনরাও আর তেমন আসে না। সবাই যার যার কাজ নিয়ে, সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আর কখনো সব কাজিনরা একসাথে নানুবাড়িতে যাওয়া হবে কিনা সেটাও জানিনা। সবাই একসাথে গেট টুগেদার হয় বা না হয়, ছোট সময়ের স্মৃতি আমি কখনো ভুলতে পারবো না। শীত আসলেই নানোভারের সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
৮
পোস্টের টাইটেল পড়েই আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম। হ্যাঁ একসময় ডিসেম্বরে স্কুলের পরীক্ষা শেষ হতো তারপরেই নানা বাড়িতে ছুটে চলা মামাতো ভাই-বোন সহ সবাই একসাথে হয়ে পুরো এলাকা ঘুরে দেখা, এখন সেটা শুধু সোনালী অতীত। মূলত আমার ক্ষেত্রে নানা-নানী না থাকার কারণে এখন আর খুব একটা মামা বাড়িতে যাওয়া হয় না। যাই হোক আপনার পোষ্টের মাধ্যমে সেই সোনালী দিনগুলো আবার মনে পড়ে গেল।
জী ভাই নানা বাড়িতে যাওয়ার আনন্দ ভুলা যাবে না। ধন্যবাদ।
ভাইয়া শীতকাল নিয়ে আপনার মনের অনুভূতি খুব সুন্দর ভাবে প্রকাশ করেছেন। যদিও আমি সেভাবে নানু বাড়ির আনন্দ কি বলতে পারি না। কারণ আমি ছোট থাকতেই নানা,নানু,মামা মামি সবাই মারা যায়। তারজন্য নানু বাড়ির আনন্দ কি বলতে পারবো না। তবে ছোটবেলায় শীতের যে দারুন অনুভুতি তা কিন্তু রয়েছে। আমরা ভাই বোনের সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খেজুরের গুড় আর মুড়ি নিয়ে উঠোনে রোদে বসে খেতাম আর পড়ালেখা করতাম। যা এখন আর ছেলেমেয়েদের মধ্যে দেখা যায় না। তাছাড়া সন্ধ্যার দিকে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দেওয়ার আনন্দই আলাদা ছিল। সময় চলে গিয়েছে কিন্তু সেই স্মৃতি গুলো রয়ে গিয়েছে। যা আর কখনও ফিরে আসবে না। সেই দিনের কথা মনে পড়লে ভালো যেমন লাগে তেমনি কষ্ট ও লাগে। যাই হোক ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
আপনার জীবনেও অনেক স্মৃতি রয়েছে। ধন্যবাদ।
ভাইয়া ডিসেম্বর আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাতে অনেক কিছু বন্ধ থাকে। আর সেই সুবাদে সবাই প্রিয় বাড়িতে বেড়াতে যায়। তবে আপনার মত আমরাও নানুর বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। আর সব কাজিন এরা একসাথে হলে মনে হয় একটা মেলা বা ঈদ বসতো। তবে আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যি নানুর বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।
সে গুলো এখন কেবল স্মৃতি। তবে ভুলে যাবার মত নয়। ধন্যবাদ।
Task Done