তোরা যুদ্ধ করে করবি কী, তা বল।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ মঙ্গলবার, ২৫ ই ,জুলাই, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



apocalypse-gf300c424f_1280.jpg

Source


ওরে হল্লা রাজার সেনা,
তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল


এই গানের লাইনটা হয়তো আপনারা অনেকেই শুনেছেন। গুপী গাইন বাঘা বাইন একটা মাস্টারপিস বাংলা মুভির গানের লাইন এটা। ১৯৬৯ সালে সত‍্যজিৎ রায়ের পরিচালিত একটা মুভি এটা। এবং কাহিনীকার তিনি গানে গুলো তিনি নিজেই লিখেছিলেন। মুভির একপর্যায়ে গিয়ে হল্লা রাজা অন্য এক রাজ‍্যের উপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেই। যদিও রাজাকে সম্মোহিত করে মন্ত্রী সব কলকাঠি নেড়েছিল। সেই যুদ্ধ বন্ধ করার দায়িত্ব তুলে নেয় ভুতের বর পাওয়া দুই গান পাগল যুবক গুপী এবং বাঘা। হল্লা রাজার সেনা যুদ্ধের জন্য অগ্রসর হচ্ছে। ঐ সময়ে গুপী এবং বাঘা গান শুরু করে,

ওরে বাবা দেখ চেয়ে
কত সেনা চলেছে সমরে।

ওরে হল্লা রাজার সেনা
তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল।

তখন এই গানটা তারা গাই। এই গানটা সত‍্যজিৎ রায়েরই রচিত। সত‍্যজিৎ রায় তখন গানের ঐ দুই লাইনে একটা প্রশ্ন রেখে গিয়েছেন। যেটা শুধু ঐ মুভির জন্য তিনি লেখেন নি। তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল।

ততদিনে বিশ্ব দুইটা বিশ্ব যুদ্ধ দেখে ফেলেছে। ঐ যুদ্ধে না কারো উপকার হয়েছে। শুধু ক্ষতি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন চলে গিয়েছে পৃথিবী পিছিয়ে গিয়েছে অনেক টা। শুধু দেশগুলো তাদের ক্ষমতার জানান দেওয়ার জন্য বিশ্ব এতো বড় দুইটা যুদ্ধ দেখেছিল। তাতে কারো কোনো লাভই হয়নি। আর প্রকৃত যুদ্ধে কারো কোনো লাভ হয়ও না। যদি লাভ কারো হয় সেটা ঐ শাসকের। কিন্তু সৈনিক এর প্রাণটা চলে যায়। সত‍্যজিৎ রায় ঐ সময়ে ঐরকম একটা প্রশ্ন রেখে গিয়েছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল। প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। ইউক্রেন ন‍্যাটো তে যোগ দেওয়ার পর,যার শুরু হয়। রাশিয়ার সামনে এসে তার চিরশএু আমেরিকা হম্বিতম্বি করবে সেটা সে কখনোই সহ‍্য করবে না। শুরু করল আক্রমণ ইউক্রেন এর উপর।


war-gf3e4a4a7c_1280.jpg

source


ইউক্রেন এর জনগণ যেমন প্রাণ হারিয়েছে এই যুদ্ধে। আবার অসংখ্য জনগণ নিজের দেশ ছেড়ে হয়েছে শরণার্থী। প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া যুদ্ধ করে কী পেয়েছে। এখানে রাশিয়া শুধু তার ক্ষমতার জানান দিচ্ছে। অন‍্যদিকে আমেরিকা যেন একপ্রকার নিরব দর্শক হয়ে দেখছে এই যুদ্ধ। এখানে যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে ইউক্রেন এর জনগণের। এবং এই যুদ্ধের ফলে বিশ্ব বাজারে বেশ ভালো একটা প্রভাব পড়েছে। যেটার ভুক্তভোগী আমি আপনিও। এখানে কারো কোনো লাভ হলো না। তাহলে যুদ্ধ করে হলো টা কী। নিজের ক্ষমতার প্রকাশ করার জন্য দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে আমেরিকা ভয়াবহ একটা কাজ করে। জাপানের উপর দুই দফায় চালায় পারমানবিক আক্রমণ। যেটার ভয়াবহতা এবং যেটার পরবর্তী ফলাফল আমরা সবাই জানি। এখানে তারাও শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে।

বতর্মান সময় টা ঠিক এইরকমই পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে। যেখানে কেউ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য কম, বরং নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করার জন্য যুদ্ধ করছে। সাধারণ জনগণ যুদ্ধ করে করবে কী! এতে তাদের ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না কখনোই। একটা যুদ্ধে পৃথিবী অনেক টা পিছিয়ে যায়। অসংখ্য পরিবার তাদের প্রিয়জন হারায়। একবার গানের কথাটা খেয়াল করুন উনি ঐ লাইনে বলেছে তোরা যুদ্ধ করে করবি কী, তা বল। এটা যদি কেউ গভীর ভাবে চিন্তা করে তাহলে সে অবশ্যই ভাবতে বাধ‍্য হবে। আসলেই যুদ্ধ করে করব কী। তার চেয়ে বাদ দেয় এগুলো। এবং বতর্মান সময়ের সবচাইতে বড় আতঙ্ক পারমানবিক ক্ষেপনাস্ত্র। পারমানবিক শক্তিধর দেশ কম তবে যেগুলো আছে সেগুলো একেবারে কম না। ধরা হয় বিশ্বে মোট ১৯০০০ পারমানবিক অস্ত্রের মধ্যে ১৮০০০ রয়েছে দুই চিরশক্র আমেরিকা এবং রাশিয়ার কাছে। ভুল করেও যদি কেউ তার ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য একবার সেটার ব‍্যবহার করে তাহলে আর দেখতে হবে না। যে দেশের উপর পড়বে সেই দেশ একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে সেটা বলাই যায়। যুদ্ধ নয় শান্তি চাই। এটাই হোক প্রতিটা মানুষের চাওয়া।।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_20230518_131529.JPG

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.23
JST 0.032
BTC 86989.77
ETH 2421.80
USDT 1.00
SBD 0.65