"কালী পূজায় ঘোরাঘুরি করার কিছু মুহূর্ত ও প্যান্ডেলের "( ফটোগ্রাফি -১)
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনারা জানেন বেশ কয়েক দিন আগে দীপাবলির উৎসব ও কালী পূজা চলে গেলো। কালী পূজা বা শ্যামা পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কালী পূজাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত একটি উৎসব। বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে এই উৎসব উপলক্ষে প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনা রয়েছে।বাংলার গৃহে বা মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত কালী প্রতিমার নিত্য পূজা হয়ে থাকে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই দিনের আলোক যাওয়াতেই ব্রাজিল উৎসবের মধ্য দিয়ে সারারাত ব্যাপী কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। দীপান্বিতা কালী পূজার দিনটিতে ভারতের অন্যান্য জায়গায় দীপাবলি উৎসব পালিত হয়। আবার এই দিনের লক্ষী পূজা ও অনুষ্ঠিত হয়। আবার অসমীয়া ও ওড়িয়ারা এই দিনে কালী পূজা করে থাকেন। এছাড়া মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশ ী তিথিতে রটন্টি এবং জৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে ফলহারিনী কালী পূজা হয়ে থাকে। আবার অনেক জায়গায় প্রতি আমাবস্যা এবং প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবারে কালী পূজা হয়ে থাকে।
সনাতন ধর্ম মতে কালী বা কালিকা হোসেন শক্তির দেবী। কালী শব্দটি কাল শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ। এই শব্দের অর্থ কৃষ্ণ বা ঘোর বর্ণ। কাল শব্দটির অর্থ সময় হতে পারে আবার এটার রংও বুঝতে পারে কাল তথা কৃষ্ণবর্ণ। অনেক সময় বলা হয় - " কাল এসে গেছে , মৃত্যুর সময় সমাসন্ন, মহাকাল এসে গেছে। তাই দেবীর নাম মহাকালীরও বটে। কালীর নাম কাল না হয়ে কালী হল এর পিছনে কিছু কারণও রয়েছে বটে। শিবের অপর নাম কাল,যা অনন্ত সময়কাল রোধক।কালী হচ্ছে কাল এর স্ত্রীলিঙ্গ। কালী হলো মা দুর্গার সংহারী রূপ। শিবই হলো কাল আর তার পত্নী কালী। তিনি সময়ের পরিবর্তনের শক্তি, সংহারের দেবী।তিনি কৃষ্ণবর্ণ এবং ভয়ংকর রূপ। কালী অশুভ শক্তির বিনাশ করেন।
কালীর অন্য নাম শ্যামা বা আদ্যা শক্তি। হিন্দু তথা বাঙ্গালীদের কাছে এই দেবী শক্তি দেবী রূপে পূঁজিত হন। এছাড়া বাঙালি হিন্দু সমাজে কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। প্রধানত শাক্ত সম্প্রদায় কালী পূজা করে থাকে। কালী দশমহাবিদ্যা নামেও পরিচিত। দশ মহাবিদ্যার ইনি প্রথমা মহাবিদ্যা। শাক্ত মতে কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। দুষ্টের দমন আর শিস্টের পালনের জন্য দেবী কালীর পূজা করা হয়। দেবী কালীর অসংখ্য নামের মধ্যে দক্ষিণ, সিদ্ধ, গুণ্য, ভদ্র, শ্মশান, রক্ষা ও মহাকালী। দেবী কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে জানা যায় যে, দেবা সুরের যুদ্ধে পরাজিত দেবতাদের প্রার্থনায় আদ্যা শক্তি ভগবতী পার্বতীর দেহকোষ থেকে দেবী কৌশিকী আবির্ভূত হন। তখন ভগবতী দেবী কৃষ্ণ বর্ণ ধারণ করেন বলে তার নাম কালী বা কালিকা। অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এই তিনটি কাল নিয়ে মহাকাল। আর সেই মহাকালের শক্তি কালী। অনন্তকালে সৃষ্টি রুপিনী পরমা প্রকৃতির রূপ এই মহাকালী।
মধ্যম গ্রাম রেল গেটের কাছে এই প্যান্ডেলটি তৈরি করা হয়েছে। খুব একটা আলোক সজ্জা ছিলো না। ছোট খাটো প্যান্ডেল বানানো হয়েছিলো।
স্থান: মধ্যমগ্রাম, পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা
তারিখ: ২৫ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার
এটি ছোট খাটো প্যান্ডেল করা হয়েছিলো। এই পন্ডেলটি সাজানো হয়েছে কুলো, তালের হাত পাখা ও মায়ের হাতের খাড়া দিয়ে। প্যান্ডেল টি কিন্তু বেশ সুন্দর লাগছিলো। প্যান্ডেলের ভেতরে সুন্দর মায়ের মূর্তি দেখতে সত্যি অপরূপ লাগছে।
স্থান: মধ্যমগ্রাম , পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা
তারিখ: ২৫ ই অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার
এই এখানে দশ হাতের কালো কালী পূজা করা হয়েছে। ছোটখাটো একটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে।
স্থান: উদাচিপাড়া মধ্যমগ্রাম, পশ্চিমবঙ্গ কলকাতা
তারিখ: ২৫ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার
আজ এই পর্যন্তই। আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি, আজকের কালী পূজার প্রথম পর্বটি আপনাদের ভালো লাগবে।
দিদি আপনি কালী পূজা সম্পর্কে অনেক ধারণা দিয়েছেন।আপনার পুরো লেখা পড়ে বুঝতে পারলাম কালী পূজা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানা অজানা তথ্য।সাথে অনেক সুন্দর কতগুলা ফটোগ্রাফি ও শেয়ার করেছেন বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।ধন্যবাদ দিদি ভাই।
দিদি ভাই শুরুতে লেখাগুলো পড়তে বেশ ভালো লাগছিল। অনেক কিছুই নতুন জানলাম। পড়তে নিয়ে ভাবছিলাম যে এখনো কত কিছু আমাদের অজানা রয়েই গেছে। জানার যেন শেষ নেই।
আর দারুন ঘোরাঘুরি করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। এই পোস্ট গুলো দেখতে নিলে চোখ ফেরাতে পারি না যেন । এতোটাই অপূর্ব লাগে। আর সবশেষে দশ হাত নিয়ে মায়ের প্রতিমা টা দারুন লাগলো। এমন টা প্রথম বার দেখলাম।
কালীপুজোর কথা অনেক বেশি শুনেছি। কিন্তু আসলে কালীপুজোর সম্পর্কে এত কিছু আমার একদমই জানা ছিল না। বৌদি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে সত্যিই অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আসলে যত বেশি আমরা পোস্ট পড়ি, তত বেশি জানতে পারি। নতুন কিছু জানতে ভালোই লাগে। তাছাড়া পূজোর মণ্ডপ এবং সবকিছু খুব সুন্দর আলো দিয়ে সাজানো। আলোকসজ্জা গুলো আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। পরের পর্বগুলো অবশ্যই দেখবো।
ছোট খাটো করে সাঁজালেও আমার মনে হয়েছে কম সাঁজায়নি ভালোই সাঁজিয়েছে।তবে অন্যগুলোএ তুলনায় কম এটা বলা যায়।বৌদি আপনাদের ঘুরোঘুরির আরো পোস্ট চাই।
মা কালী সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানতে পারলাম আজকের ব্লগের মাধ্যমে। শব্দের বিশ্লেষণের মাধ্যমেও খুব সুন্দর করে তার অর্থ আমাদের সাথে শেয়ার করেছ, বৌদি। মধ্যমগ্রামের এই পুজো প্যান্ডেল গুলো ঘুরতে আমিও গেছিলাম । আমি এইসব জায়গার ছোট বড় সব প্যান্ডেল গুলো দেখতে গেছিলাম পুজোর দুইদিন পরে। তখন একটু ভিড় কম হয় সেই জন্য।
মধ্যমগ্রামের পুজো বোধহয় দেখা হয় নি। শুধু বারাসতই দেখেছিলাম। এই ছবিগুলো দেখলে মনে হচ্ছে সময় কত তাড়াতাড়ি পার করে যাচ্ছে। আপনারা দুই জা মিলে বেশ ভালোই ঘুরছেন। এটা খুব মিষ্টি বিষয়। বোনের মত সম্পর্ক বজায় থাকুক এই আশা করি।
বাঙালির পূজা সারাবছরই লেগে থাকে।তবে কালীপূজা সম্পর্কে বিস্তারিত আপনার পোষ্ট পড়ে জেনে ভালো লাগলো।এতকিছু জানা ছিল না, ফটোগ্রাফীগুলি সুন্দর ছিল।মায়ের প্রতিমা সবসময় অপূর্ব, দারুণ ঘোরাঘুরি করেছেন আশা করি।ধন্যবাদ বৌদি।
এটা আমার অত্যন্ত পছন্দের একটা কাজ। খুব ভালো লাগল ছবিগুলো দেখে। প্যান্ডেল গুলোতে না গিয়েও দর্শন হয়ে গেল।