বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার গল্প (একাদশ পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


দ্বিতীয় রাইডে চড়ার পরে আমার আর কোনো রাইডে ওঠার সাহস হয়নি। যদিও বন্ধু রাফসান আমাকে বেশ কয়েকবার সাহস দিয়েছিলো অন্য রাইডগুলো উপভোগ করার জন্য। কিন্তু আমি আর সাহস করে উঠতে পারিনি। তবে বন্ধু রাসেল এবং ফেরদৌস দুটো রাইট শেষ করার পরে তৃতীয় রাইড এর জন্য উপরে গেলে। আমি আর রাফসান নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম ওদের দেখার জন্য। ওরা যখন সেই বিল্ডিংটাতে উঠছিলো তখন বলেছিলো এখানকার সবচাইতে উঁচু থেকে যে রাইডটা রয়েছে সেটাতে উঠবে। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম ওরা সেই রাইডে না উঠে অন্য রাইডে উঠলো। সেটা দেখতেও বেশ মজা লাগছিলো কিন্তু আমার আর সাহসে কুলায়নি। আমি অবশ্য বেশ আগ্রহ নিয়ে ওদের সবচাইতে উঁচু রাইডটাতে চড়া দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু ৩ বার ৬ তলা বিল্ডিং এ ওঠানামা করে ওদেরও এনার্জি শেষ হয়ে গিয়েছিলো।

1000001466.jpg

যার ফলে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম বাকি রাইডগুলোতে আর চড়ার প্রয়োজন নেই। তখন আমরা ওয়াটার পার্কের অন্যদিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা সেখান থেকে গিয়ে ওয়াটার জঙ্গল নামে একটা জায়গা ছিলো সেখানে গিয়ে প্রবেশ করলাম। সেখানে আনলিমিটেড অ্যাক্সেস ছিলো। সেখানে আমরা যতক্ষণ ইচ্ছা সময় কাটাতে পারি। সেই জায়গাটা আমাদের সবার কাছেই বেশ পছন্দ হয়েছিলো। সেখানে একেবারে বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক সকলেই দারুন সময় কাটাচ্ছিলো। সবার আনন্দময় মুখ দেখে বেশ ভালো লাগছিল। আমরা চার বন্ধু মিলে সেখানে বিভিন্ন জিনিসগুলো উপভোগ করতে লাগলাম। সেখানেও কিছু রাইড ছিলো। তবে সেগুলো আকারে বেশ ছোট যাতে সেখানে কম বয়সী থেকে শুরু করে বেশি বয়সী সকলেই উঠতে পারে। এই ওয়াটার জঙ্গলের পাশেই ছিল রেইন ড্যানস ফ্লোর। সেখানে দাঁড়ালে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি পড়ে। আপনার অনেকটা বৃষ্টিতে ভেজার অনুভূতি হবে সেখানে গেলে। সেই সাথে চমৎকার সব গান বাজতে থাকে।


1000001467.jpg

সেখানে গিয়ে দেখি অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা গানের তালে তালে নাচ ছিলো। আমরা সেখানে গিয়ে অল্প কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার সেই ওয়াটার জঙ্গল নামক জায়গাটাতে ফিরে এলাম। মূলত আমরা সেখানেই সবচাইতে বেশি সময় কাটিয়েছিলাম। সেখানে বেশ খানিকটা সময় কাটানোর পরে আমাদের বেশ ক্ষুধা লাগলো। আমরা ঢোকার সময় দেখেছিলাম যেখান থেকে লকারের চাবি নিয়েছিলাম। সেখানে হালকা স্নাক্স খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো। তাই আমরা চার বন্ধু মিলে চলে গেলাম সেখানে হালকা কিছু খাওয়ার জন্য। গিয়ে দেখি তাদের খাবারের আইটেম শেষ ।তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতেই তারা আমাদেরকে বললো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন খাবার এখনই চলে আসবে । আমরা কিছুক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করতেই এক ধরনের মিনি পিজা সেখানে চলে এলো। আমরা চার বন্ধু পিজা খেয়ে পেটের আগুন নিভালাম।


1000001468.jpg

তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ওয়েভ পুলে যাওয়ার জন্য। তবে সেই স্নাক্স কর্নার থেকে আমাদেরকে জানালো ওয়েভপুলে অনেকে নাকি টিউব নিয়ে যায়। সেই টিউব আবার আলাদা ভাড়া করতে হবে। অগত্যা কি আর করা? আমরা চার বন্ধু দুটো টিউব নিলাম। টিউব নিয়ে আমরা রওনা দিলাম ওয়েভ পুলের দিকে। ওয়েভপুলের সিস্টেমটা ছিলো এমন আমরা সেখানে ঢুকে যতক্ষণ ইচ্ছা থাকতে পারবো। তবে একবার বের হয়ে গেলে আবার ঢুকতে গেলে আমাদের আবার টিকেট কাটতে হবে। যাই হোক আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ওয়েভ পুলে ঢুকে যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ সময় কাটাবো। তারপর একবারে সেখান থেকে বের হয়ে আমরা আমাদের হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। ওয়েভ পুলে গিয়ে দেখলাম সেখানে একটা সুইমিং পুলের মত ব্যবস্থা করা আছে। যেটার এক প্রান্তে ডিজে গান বাজাচ্ছিলো।

কিন্তু আমরা সেখানে গিয়ে প্রথমে কোন ওয়েভ দেখতে পেলাম না। ওয়েব পুলে ঢেউ না থাকলে আপনি সেখানে কোনো মজা পাবেন না। তবে আমরা সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পরে বড় বড় ঢেউ আসতে লাগলো। সেই বড় বড় ঢেউয়ের ভেতরে আমরা সবাই মজা করতে লাগলাম। ওয়েভ পুলে আমরা দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলাম। সেখানে যখন বড় বড় ঢেউ আসছিলো সেই সাথে দারুন মিউজিক বাজছিলো। সেই মিউজিকের সাথে সবাই সময়টা দারুন ভাবে উপভোগ করছিলো। বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পরে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। তবে ওয়েভপুলে যাওয়ার সময় টিউব ভাড়া করাটা আমাদের একেবারে লস হয়েছিলো। কারণ সেখানে গিয়ে দেখলাম অন্য কেউ টিউব নিয়ে যায়নি। আমরা যে দুটো টিউব নিয়েছিলাম সেটাও আমরা ব্যবহার করিনি। আমাদের কাছ থেকে অন্য লোকজন নিয়ে মজা করছিলো। আমাদের কাছে চাইতেই আমরা টিউব তাদেরকে দিয়ে দিয়েছিলাম। যাইহোক ফেরার সময় টিউব দুটো নিয়ে আমরা সেই কাউন্টার জমা দিয়ে চলে গেলাম লকার এর কাছে। সেখানে গিয়ে কাপড়চোপড় পাল্টে আমরা রওনা দিলাম আমাদের হোটেলের উদ্দেশ্যে। আর এভাবেই আমাদের মেরিন ড্রাইভে ঘোরাফেরা এবং ওয়াটার পার্কে কাটানো দারুণ সময়টা শেষ হলো। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানকক্স বাজার

logo.png



PUSS_Banner2.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আসলে এতো কষ্ট করে ৫/৬ তলার উপরে উঠে, রাইডে চড়ে নামাটা কষ্টকর ই বটে। লিফট থাকলে সবচেয়ে ভালো হতো। লিফট দিয়ে উপরে উঠে, রাইডে চড়ে নিচে নামলে দারুণ লাগতো। যাইহোক তবুও ফেরদৌস ভাই এবং রাসেল ভাই তিনটি রাইডে চড়েছে, জেনে খুব ভালো লাগলো। তাছাড়া ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96335.91
ETH 2788.63
SBD 0.67