ট্রাভেল || শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ ভ্রমন

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আমাদের সবাইকে কাজে কর্মে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয় সব সময় ‌। এই ব্যস্ততার মধ্যেও কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হলে আমাদের সবারই খুব ভালো লাগে। ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগলেও আগের মত এখন অত বেশি ভ্রমণ করার সুযোগ হয় না। তবে যদি কখনো ভ্রমণ করার সুযোগ হয় তা হাতছাড়া করি না। বেশ কিছুদিন আগে মায়াপুরে গেছিলাম আমি, আমার দাদা, মা এবং মায়ের বান্ধবী মিলে। মায়াপুরে আসলে অনেক জায়গা রয়েছে দেখার। মায়াপুর গিয়ে একদিনে সব দিক ঘুরে দেখা কখনোই সম্ভব হয় না । সেজন্য এবার প্ল্যান করে গেছিলাম মায়াপুরে গিয়ে দুই দিন থেকে সবকিছু ঘুরে ঘুরে দেখার। যাইহোক, আমার এই মায়াপুর ভ্রমণের একদিন আমি সবাইকে নিয়ে গেছিলাম শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠে

20240211_075938.jpg

20240211_075927.jpg

20240211_075943.jpg

প্রথমে এই জায়গা সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। তবে আমরা যখন মায়াপুরের বড় মন্দিরের মধ্যে ঘুরাঘুরি করছিলাম তখন মন্দিরের একটি লোকের মাধ্যমে আমরা এই জায়গার সন্ধান পাই। আমরা যেহেতু থাকার প্ল্যান করছিলাম, সেজন্য ওই লোক টি পরামর্শ দেয় এখানে গিয়ে থাকার জন্য। কারণ এইখানে নাকি অনেক কম টাকায় থাকার সুব্যবস্থা ছিল। যাইহোক, পরে খুঁজে খুঁজে আমরা পৌঁছে যাই এই গৌড়ীয় মঠে। এটি মায়াপুরের একটি প্রাচীন মঠ। আমি যতদূর জানতে পেরেছিলাম, এইখানে রাধাকৃষ্ণের পুজো করা হয়। এই জায়গাটা আবার বারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। সেই কারণে আমরা তিনটার পরেই এখানে গেছিলাম।

20240211_080010.jpg

20240211_080014.jpg

20240211_080110.jpg

এইখানে অনেক কিছুই দেখার ছিল। প্রথমে গেট দিয়ে ঢুকেই অসাধারণ সৌন্দর্য দেখার সুযোগ হয়েছিল। এখানে অনেকগুলো মন্দিরও রয়েছে। তাছাড়া এর আরো অনেকটা ভিতরে দুইটি পুকুরও আছে। যদিও সেগুলোর ফটোগ্রাফি করা হয়নি। এর ভেতরের পরিবেশটা বেশ শান্ত এবং মনোরম। এখানে প্রবেশের পরেই যে জায়গাগুলো ছিল, সেইসব দেখেই আমি বেশ মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম। এখানের মন্দিরের দেয়ালে, প্রবেশের গেটে বিভিন্ন ধরনের দৃশ্য ধারণ করা ছিল খোদাই মাধ্যমে। মহাভারতের অনেক দৃশ্য, তাছাড়া কৃষ্ণ লীলার অনেক কিছুই এখানে দেখার সুযোগ হয়েছিল। এইখানে গিয়ে শ্রী প্রভুপাদের ভজন কুটিরও দেখার সুযোগ হয়েছিল।

20240211_080136.jpg

20240211_080141.jpg

20240211_080145.jpg

তাছাড়া এখানে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা গোবর্ধন পর্বতও দেখেছিলাম। যেই পর্বত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে তুলে রেখে দিয়েছিল। ভিতরে ঘুরাঘুরির সময় আমি শ্রীচৈতন্য মিউজিয়ামও দেখতে পেয়েছিলাম। যেখানে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে শুরু করে অনেক কিছুই ছিল। যা আমাদের ধর্মীয় জ্ঞানকে প্রসারিত করার জন্য ছিল। আমরা যেহেতু অনেক জায়গা দেখার প্ল্যান নিয়ে গেছিলাম, সেজন্য সব কিছু তাড়াতাড়ি করেই আমাদের দেখতে হচ্ছিল। কারণ একটার পর একটা আমাদের প্ল্যান করাই ছিল। যাইহোক, তারপরও এই জায়গাটাতে আমরা বেশ কিছুটা সময় ছিলাম । আমার সাথে সাথে আমার দাদা, মা এবং মায়ের বান্ধবী অনেক আনন্দ নিয়েই সবকিছু দেখছিল।

তারা যেভাবে দেখছিল আমার মনে হচ্ছিল, তারা খুব সারপ্রাইজ হচ্ছে এসব দেখতে দেখতে। এইসব জায়গায় গিয়ে আসলে অনেকটা সুন্দর সময় কাটানো যায়। একটা অন্য কোন জগতে চলে এসেছি, তখন এরকমটা মনে হয়। একঘেয়েমি পরিবেশ থেকে এসব জায়গায় যাওয়া গেলে মনের ভেতর একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। যাইহোক,এখানে যতটুক সময় ছিলাম বেশ ভালোভাবে সময় কাটিয়েছিলাম। এরপর আমাদের অন্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যেতে হয়। তাই নিয়ে অন্য কোন ব্লগে তোমাদের সাথে কথা হবে।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনশ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ,মায়াপুর, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ ভ্রমন করা নিয়ে শেয়ার করা এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 last year 

সবাইকে নিয়ে চৈতন্য গৌড়ীয় মঠ ভ্রমণ করেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো দাদা। মায়াপুরে অবশ্য কোনদিন যাওয়া হয়নি তবে এবার আমার বাবা-মা গিয়েছিল। এখনো আমার বাবা-মা সমগ্র ভারতের বড় বড় মন্দিরগুলোতে ভ্রমণরত রয়েছে। শ্রী শ্রী চৈতন্য মিউজিয়াম এ গিয়েছিলে এবং সেখান থেকে অনেক জ্ঞান লাভ করেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

এখনো আমার বাবা-মা সমগ্র ভারতের বড় বড় মন্দিরগুলোতে ভ্রমণরত রয়েছে।

আপনার অন্য একটি পোস্টেও এই সম্পর্কে জেনেছিলাম ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আসলেই ভাইয়া আমরা এক পরিবেশে থাকতে থাকতে একদম একঘেয়েমি হয়ে যায়। এরকম একঘেয়েমি এবং একাকীত্ব কাটানোর জন্য অবশ্যই আমাদের এরকম দর্শনীয় জায়গা গুলোতে পরিদর্শন করা উচিত। আপনি আপনার পরিবার নিয়ে খুবই ঐতিহ্যবাহী শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মাঠ ভ্রমন করতে গেছিলেন। আর পরিবার নিয়ে এসব জায়গায় ঘুরতে গেলে আরো বেশি আনন্দ অনুভূতি হয়। যেহেতু সেখানে দর্শনীয় স্থান ছিল বেশি তাই সেখানে দুদিন থাকার সিদ্ধান্তটি আমি যথার্থ বলে মনে করছি। আশা করি আপনার অন্যান্য পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আরো নতুন কিছু বিষয় করতে পারবো। আপনার ট্রাভেল যাত্রা শুভ হোক।

 last year 

যেহেতু সেখানে দর্শনীয় স্থান ছিল বেশি তাই সেখানে দুদিন থাকার সিদ্ধান্তটি আমি যথার্থ বলে মনে করছি।

হ্যাঁ ভাই, অনেক জায়গা ছিল সেখানে ঘুরাঘুরি করার জন্য তাই হাতে দুই দিন সময় নিয়ে যেতে হয়েছিল ঘুরতে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

বরাবরের মতো অচেনা একটি স্থান সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলাম। ভ্রমণ করেছেন আর সেই জায়গা থেকে সুন্দর ফটো ধারণ করেছেন আর একই সাথে সুন্দর বর্ণনার সাথে উপস্থাপন করেছেন ব্লগ এর মাধ্যমে। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার এ ব্লগ দেখে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে কৃত্রিম সৃষ্টি গুলো যেন আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ঠিক তেমনি ছিল আপনার ভ্রমণ স্থান।

 last year 

আমার এই ভ্রমণ মূলক ব্লগটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে, জেনে অনেক খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ, আপনার সুন্দর এই মন্তব্যের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ ভ্রমন করার মাধ্যমে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু বিষয় আপনি আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন। একইসাথে এখানে যে সময়গুলো আপনি অতিবাহিত করেছেন তাও আমাদের মাঝে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে সবগুলো বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

চেষ্টা করেছি ভাই, ফটোগ্রাফি গুলোর মাধ্যমে সুন্দর করে সব বিষয় গুলো ফুটিয়ে তোলার জন্য। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.23
JST 0.031
BTC 84998.15
ETH 1997.93
USDT 1.00
SBD 0.77