ট্রাভেল || দার্জিলিং এর ধোত্রে ভ্রমন (পর্ব - ০২)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
আমরা বন্ধুরা মিলে কোন জায়গায় ঘুরতে যাব তাই নিয়ে কিছু সময় আলোচনা করি আমদের রেস্ট নেওয়া শেষে। এই ধোত্রে থেকে বেশ কয়েকটি দেখার জায়গা ছিল। তবে একা একা কোন জায়গায় যাওয়া যাবে, সেরকম কোনো জায়গা ছিল না। বন্ধুরা মিলে গ্রুপ করে গেলেই এসব জায়গায় মজা হবে, সেইরকম ছিল জায়গাগুলো। আমরা প্রথমে ডিসাইড করি, "টোংলু" নামক জায়গাটিতে যাব। এটি ছিল আমরা যে হোমস্টে থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরের দেখতে জায়গা। এখানে গাড়িতে করেও যাওয়া যায় তাছাড়া ট্রেকিং করে যাওয়ারও সুযোগ ছিল।
আমরা ৬ জন বন্ধু মিলে একটা গ্রুপ করে নিই এই জায়গাটাতে ট্রেকিং করে যাব বলে। প্রথমে সবাইকে একটু ম্যানেজ করতে অসুবিধাই হয়ে যাচ্ছিল কারণ অনেকেই এতটা দূরত্বে হেঁটে এই জায়গাতে যেতে চাইছিল না। এই জায়গাটিতে রাস্তার মাধ্যমে গেলে ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হতো, তবে আমরা যদি ট্রেকিং করে যাই তাহলে খুব কম সময়ের মধ্যেই এই জায়গাটাতে পৌঁছানো যাবে, সেই জন্য আমরা গ্রুপ করে রওনা করি এই টোংলু এর উদ্দেশ্যে। এই জায়গাটা সম্পূর্ণ নতুন ছিল আমাদের কাছে। কি করে গন্তব্যে যাব আমরা তো প্রথমে বুঝতেই পারছিলাম না। পরে স্থানীয় কিছু লোকজনের মাধ্যমে এই জায়গা সম্পর্কে জেনে রওনা করি গন্তব্যে।
আমরা যখন রওনা করেছিলাম আমাদের সাথে থাকা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব আমাদের এভাবে যেতে বারণ করছিল, কারণ তারা ভয় পাচ্ছিল। আর আমরা যে সময়টাতে গেছিলাম, এখানে খুব বেশি লোকজনও ছিল না। যাইহোক, মনে একপ্রকার সাহস নিয়েই এই টোংলু উদ্দেশ্যে রওনা করলাম ট্রেকিং এর মাধ্যমে। আমরা চলার সময় আমাদের সাথে যে যার মত লাঠি নিয়ে নিয়েছিলাম। কারণ পাহাড়ে চড়ার সময় এই লাঠি থাকলে চলার সময় একটু সুবিধা হয়। যাইহোক, অনেকটা উচ্ছ্বাস নিয়েই আমরা এই যাত্রা শুরু করি। প্রথম এক কিলোমিটার যাওয়ার পরেই আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমরা আমাদের সাথে অনেক জল নিয়ে গেছিলাম। এই জল খেয়ে পাহাড়ের রাস্তায় কিছু সময় বসে রেস্ট নিয়ে তারপর আবার রওনা করছিলাম। এভাবে আমাদের যাত্রা চলতে থাকে।
এই ভাবে যাওয়ার সময় অনেকটা কষ্ট হচ্ছিল আমাদের, তবে এই যাত্রার সময় প্রাকৃতিক যে সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম তা কখনো টাকা পয়সা দিয়ে কেনা সম্ভব না। কিছু সময়ের জন্য জাস্ট মুগ্ধ হয়ে যেতে হচ্ছিল এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে। যাওয়ার সময় পাহাড়ে আমি অসংখ্য লাল ফুল গাছ দেখতে পেয়েছিলাম। যদিও ওইগুলোর নাম আমি জানিনা। তবে এই ফুল গুলোর সৌন্দর্য আমাকে অনেকটাই মুগ্ধ করেছিল। আর এই সব পাহাড়ের সবুজ গাছপালা আমি বেশি দেখতে পাইনি। কিছুটা ধূসর বর্ণের হয়ে গেছিল গাছপালাগুলো। এই জায়গাটাতে যেহেতু ঠান্ডা ছিল অনেক তাই আমাদের ভালো লাগছিল অনেক বেশি। কলকাতার গরম রেখে আমরা গেছিলাম এই ঠান্ডা জায়গাতে, এই জন্যই আরো অনেক বেশি ভালো লাগছিল। যাইহোক, চলতে চলতে অবশেষে পৌঁছে যাই আমাদের ডেস্টিনেশনে। এই জায়গাটাতে গিয়ে খুবই ভালো লাগছিল আমার।
এই জায়গাতে দাঁড়িয়ে চার পাশের এক অপরূপ দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল। যেদিকেই তাকাই না কেন, কোনো না কোনো আলাদা সৌন্দর্য আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম। এই জায়গাটিতে পৌঁছানোর পর কিছু কিছু পর্যটকও আমাদের দেখার সুযোগ হয়। যদিও তারা গাড়িতে করে এখানে এসেছিল। আমরাই কয়েকজন ছিলাম যারা ট্রেকিং এর মাধ্যমে এই জায়গায় পৌঁছেছিলাম। এখানে উঠে পাহাড়ের উপর ছোট ছোট ঘর গুলো দেখতে পাচ্ছিলাম, এগুলো সত্যি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল।
সাধারণত এগুলো ফোনে দেখতাম এতদিন ধরে, তবে সামনাসামনি সেদিন দেখে একটা আলাদা অনুভূতি হচ্ছিল। তাছাড়া, এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল ট্রেকিং করে এই জায়গাটিতে পৌঁছে। যদিও অনেকটা টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম আর অনেকটাই সময় লেগেছিল আমাদের ঠিক হতে। এই উপরের জায়গায় উঠে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা গুলো দেখতে জাস্ট দারুন লাগছিল। সাপের চলার মত আঁকাবাঁকা ছিল এই রাস্তা গুলো। তোমরা হয়তো ফোনের ফটো দেখে স্পষ্ট সবকিছু নাও বুঝতে পারো, তবে এই জায়গায় পৌঁছানোর পর চোখে যে সৌন্দর্যটা দেখেছিলাম তা কখনো আমি ভুলতে পারবো না।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | টোংলু , দার্জিলিং, ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনারা খুব দারুণ একটা জায়গায় ভ্রমণ করার জন্য গিয়েছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে। জায়গাটা কিন্তু দেখেই আমার পছন্দ হয়েছে অনেক বেশি। এরকম জায়গা গুলোতে গিয়ে খুব ভালো সময় কাটানো যায়। আপনারা ট্রেকিং করে পৌঁছেছেন শুনে আমার কাছে তো আরো ভালো লেগেছে। এভাবে যেতে যেতে নিশ্চয়ই প্রকৃতিটা খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছিলেন সবাই। আসলে কষ্ট হলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য এরকম ভাবে উপভোগ করতে কিন্তু দারুন লাগে। ভালো লাগলো আপনার ভ্রমন পোস্ট পড়ে।
আমার এই ভ্রমন মূলক পোস্টটি পড়ে আপনার যে ভালো লেগেছে, সেটা জেনে অনেক খুশি হলাম আপু।
হ্যাঁ আপু , আমরা প্রকৃতিটাকে অনেক উপভোগ করেছিলাম সেই সময়টাতে।
এরকম জায়গা গুলোতে ভ্রমন করার ইচ্ছা আমার অনেক বেশি রয়েছে ভাই। আপনি তো দেখছি আপনার বন্ধুদের কে নিয়ে খুব সুন্দর একটা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন। আপনার ঘুরতে যাওয়ার জায়গাটা আমার কিন্তু দারুণ পছন্দ হয়েছে। আমার কাছে তো বেশি ভালো লেগেছে আপনারা ট্রেকিং করে এখানে পৌঁছেছিলেন এটা শুনে। জায়গাটার সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর ভাবে করেছেন আপনি যেগুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ ভাই আপনাদের ভ্রমণ মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
শুধু ইচ্ছা থাকলে তো হবে না ভাই, সরাসরি চলে আসতে হবে এখানে। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
https://x.com/ronggin0/status/1803386708098158687?t=PX5w3AhKUM6T_UoIWzVOmw&s=19
৬ বন্ধু মিলে ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। এরকম সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যেতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনার শেয়ার করা এবারের পর্বটি দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু , এরকম সুন্দর জায়গায় গেলে অনেক ভালো লাগে, সেই সাথে মনটাও ফ্রেশ হয়ে যায়।
দার্জিলিং তো স্বপ্নের একটি শহর।আমার ইউটিউবে দেখা হয়েছে জায়গাটি অনেক সুন্দর।বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে ট্রেকিং করে জায়গাটিতে পৌঁছেছেন আপনারা।ডিজিটাল মিডিয়া গুলো আসলেই অনেক হেল্পফুল আমাদের চলার পথে।ভালো লাগলো আপনার দার্জিলিং ভ্রমণের পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এটা ঠিক কথা বলেছেন আপু। যাইহোক, আমার এই দার্জিলিং ভ্রমণের পোস্টটি আপনার যে ভালো লেগেছে, সেটা জেনে খুবই খুশি হলাম আমি ।