রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুঠিবাড়ি পরিদর্শন।
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমাদের এদিকে শীতের তীব্রতা অনেকটাই কম ছিল। কুয়াশার তেমন একটা দেখা মেলেনি । মোটামুটি রোদ ছিল সারাদিনই। পরিবেশের অবস্থা ঠিকঠাক দেখে আমি দুপুরবেলায় চিন্তা করলাম আজ দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসা যেতে পারে। ঘুরতে যাওয়ার জন্য এখন আমার দুইটি নেশা কাজ করে। একটি হচ্ছে ভালো লাগা, আরেকটি হচ্ছে আপনাদের সাথে মোমেন্ট গুলো শেয়ার করতে পারা। যাইহোক, আজকের প্লান ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি যাওয়ার।
প্লান প্রোগ্রাম করে আমার বন্ধুকে দিলাম ফোন। ওকে দুপুর দুইটার দিকে রেডি থাকতে বললাম। এরপর আমি দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে নিয়ে , রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। আমরা আজকে ছিলাম পাঁচজন। বেশি কাওকে বলা হয়নি। বাইক ছিল ২ টি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি যেতে আমাদের সময় লেগেছিল প্রায় একঘন্টা। মাঝে রাস্তা অনেকটাই খারাপ ছিল। রাস্তার কাজ চলছে এজন্য ধীরগতিতে যেতে হয়েছিল অনেকটা পথ। যেতেই আমাদের চোখে পড়ল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির বিশাল গেট। গেট টি কিছুদিন আগেই করা হয়েছে। আগে ছিল না।
আমরা একটি গ্যারেজে আমাদের বাইক গুলো রেখে বাড়ির ভিতরে চলে গেলাম। যদিও আমি অনেকবার এখানে এসেছি তারপরও মাঝেমধ্যে এসে এখানে ঘোরাঘুরি করতে ভালোই লাগে। পরিবেশটাও ছিল দারুণ । তাছাড়া এখন দূর-দূরান্ত থেকে কোন ছাত্র ছাত্রীরা এই জায়গা ট্যুরে আসছে না । এই মুহূর্তে কোথাও ট্যুরের অনুমোদন দিচ্ছে না। কারণ করোনা পরিস্থিতি আবার দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তো সব মিলিয়ে এই জায়গাটা অনেকটাই ফাকা আর নিরিবিলি ছিল। এইজন্য ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালই লাগছিল।
এটি হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ির সামনের দৃশ্য। এই টাইপের বাড়ি দেখতে খুবই ভালো লাগে। আর চিন্তা করুন সেই কত আগের তৈরি এই বাড়িটি। বাড়িটির শৈল্পিক সৌন্দর্য এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নজর কেড়ে নেয়। বাড়িটির সৌন্দর্য দর্শন করার পর আমরা চলে গিয়েছিলাম বাড়িটির ভিতরে। ভিতরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক অনেক স্মৃতি বিজড়িত জিনিসপত্র রাখা ছিল। উনার ব্যবহৃত অনেক জিনিসপত্র এখনো অক্ষত রয়েছে। ওই সময়ের তৈরি জিনিসপত্র গুলো আসলেই অনেক মজবুত ছিল।
উনার ব্যবহৃত সব জিনিসপত্র এবং উনার সমস্ত চিত্রকর্ম দিয়ে আমি আলাদা পর্বের পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাইহোক, উনার বাড়িটি ছিল মোট তিন তলা বিশিষ্ট। প্রথম এবং দ্বিতীয় তলায় বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত জিনিসপত্র সংরক্ষণ করা আছে। কিন্তু তৃতীয় তলায় ওঠার কোনো ব্যবস্থা নেই। দরজা বন্ধ করে রাখা। এটি পর্যটকদের সেফটির কথা মাথায় রেখেই বন্ধ রাখা হয়েছে কারণ তিনতলা উঠার সিঁড়ি হল কাঠের তৈরি। আর অনেক পুরনো কালের কাঠের তৈরি সিঁড়ি হওয়ায় ঐ পাশ দিয়ে উঠা নামা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যে কোন সময় হয়তো ভেঙে পড়তে পারে। এই কারণেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
যাইহোক, আমরা ঠাকুর বাড়ির প্রত্যেকটা কোনায় কোনায় গিয়ে সবকিছু পরিদর্শন করলাম । অনেক সময় নিয়ে তার সব চিত্রকর্ম এবং তার নিজ হাতের লেখা গুলো দেখলাম। এরপর আবার আমরা সবাই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলাম। বের হয়ে বাইরে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম। বাড়ির চারপাশের পরিবেশ টা অত্যন্ত সুন্দর ছিল। আমার ফোনে কুঠিবাড়ির আশেপাশে থেকে তোলা কিছু ছবি শেয়ার করছি। উপভোগ করুন।
![]() | ![]() |
---|
- এই পোস্টের প্রত্যেকটি ছবি তোলা হয়েছেঃ- Xiaomi Redmi Note 9 Pro Max ফোনটি দ্বারা।
লোকেশনঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়ি।
অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করার পর যখন উপলব্ধি করতে পারলাম আমাদের মনের তৃপ্তি মিটে গেছে তখন আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিব স্থির করলাম। আমরা আমাদের গাড়িগুলো যে গ্যারেজে রেখেছিলাম সেইখানে গিয়ে গাড়ি গুলো বের করে নিয়ে আসলাম আর আমাদের বাড়ির পথে রওনা দিলাম। রওনা দেয়ার সময় আরও একটা জিনিস আমাদের চোখে পরলো, যেটা আসার সময়ও দেখেছিলাম। সেটা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি তে প্রবেশ করার গেটের দুপাশে অনেকগুলো দোকানপাট বসেছে। দোকানগুলোতে হরেক রকমের জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ জিনিসপত্রগুলো কাঠের তৈরি। আবার দোকানপাট গুলোর পাশেই দেখলাম ছোট একটি নাগরদোলা। নাগরদোলার পাশে বড় একটি দোলন নৌকা।
আসার সময় দোকানপাট গুলোতেও একটি ঘুল্লি দিয়ে এসেছিলাম। আমার কাছে কাঠের তৈরি জিনিসপত্র গুলো খুবই সুন্দর লেগেছে । তবে একটা জিনিস একটুও ভালো লাগেনি সেটা হচ্ছে কাঠের তৈরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। তো যাইহোক এক নজরে সবকিছু দর্শন করে আমরা রওনা দিলাম বাড়ির দিকে।
এটাই ছিল আমাদের আজকের রবির বাড়ি ঘুরাঘুরি । রবির বাড়ি থেকে রবি অস্ত যাওয়ার পূর্বেই বাড়িতে চলে এসেছি। অনেক অনেক ছবি আছে এখন আমার কাছে। যেগুলো আমি ধীরে ধীরে শেয়ার করব। ছবিগুলো দেখতে হলে অবশ্যই আমার সাথেই থাকতে হবে। আর আমিতো জানি আপনারা সব সময়ই সাথেই থাকেন। শুভকামনা আপনাদের জন্য। সবসময় ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আজ বিদায় নিচ্ছি । আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার পরবর্তী ফটোগ্রাফি পোস্টগুলো দেখার আমন্ত্রণ রইল আগে থেকেই।🥰
আমার মনে হয় বন্ধুদের সাথে গেলে যেকোনো জায়গাতেই ভালো লাগে। কুঠিবাড়িতে আমিও একবার গিয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে। অসাধারণ ছিল সেই অভিজ্ঞতা। ছবিগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই।
কথাটা খুবই ভাল লেগেছে ভাইয়া । যাইহোক বন্ধুদের সাথে খুবই উপভোগ করেছেন আজকের দিনটি বোঝাই যাচ্ছে । রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি দেখতেও খুব সুন্দর লাগছিল এরকম বাড়ি এখন আর পাওয়া যায় না । অনেক কারুকাজ নির্মিত বাড়িটি । অনেক পুরনো হলেও বাড়িটি এখনো আগের মতই দেখাচ্ছে । পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া ।
আপনি ঠিক বলেছেন। যদিও কিছু কিছু সংস্কার করা হয়েছে যেগুলো করতেই হতো। কারণ স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে হলে অবশ্যই এর যত্ন নিতে হয়।
জ্বি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি দেখতে অনেক সুন্দর। ভেতরেত পরিবেশ দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক খোলা মেলা। পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার মতো একটা সুন্দর জায়গা। আমার খুব ভালো লাগলো।
নাগরদোলার পাশে নৌকার ছবি দেখে মনে পড়ে গেলো। বৈশাখী মেলাতে একবার নৌকায় উঠছিলাম। কি যে মজা যে না উঠছে তাকে বুঝানো যাবে না।অবশ্য ভয় ও লাগে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর ভাবে কুঠিবাড়ি সম্পর্কে বর্ণনা করার জন্য। কুঠিবাড়ি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্টের মাধ্যমে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
হ্যাঁ ঠাকুরের বাড়ির পরিবেশ টা আসলেই অনেক সুন্দর। পরিবারের সাথে ঘুরাঘুরির জন্য পারফেক্ট।
রবী ঠাকুরের কুঠির বাড়িটা অনেক পরিপাটি, খুবই দারুন পরিবেশ ২০১৮ সালে গেছিলাম।এখন দোকান পাঠ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ছবিতে দেখা যাচ্ছ। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে আবার ইচ্ছা করে যেতে খুবই সুন্দর ফটোগ্রাফি করছেন। একটা পুকুর আছে পুকুরের পানি অনেক ফ্রেশ দেখেই গোসল করে নিছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
পুকুরের পানি এখন আর তেমন ফ্রেশ নেই।
ভাইয়া আপনার এই পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে যেন এখনই ছুটে চলে যাই আমাদের সকলের প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িতে। জায়গাটি সত্যি অনেক সুন্দর। বাড়িটি পুরনো হলেও দেখতে একদম নতুনের মতই রয়েছে। পুরনো দিনের কারুকার্য ও সৌন্দর্য এই বাড়িটির মাঝে ফুটে উঠেছে। ভাইয়া আপনি অনেক কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুলো দেখেছেন এবং শিল্পকর্মগুলো দেখেছেন এটা সত্যি অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আপনি সব সময় আপনার ইচ্ছামত বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেন এই জিনিসটা আমার খুবই ভালো লাগে। আর সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে আপনি সেই মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেন। যার মাধ্যমে আমরাও সেই জায়গাগুলো সম্পর্কে ধারণা পাই এবং কিছুটা হলেও উপভোগ করতে পারি। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্তে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি মানেই নীরবতা,প্রকৃতির সৌন্দর্য্য ,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকবেই।সবমিলিয়ে মনে অন্যরকম অনুভূতি ও আত্মতৃপ্তি পাওয়া।দাদা প্রত্যেকটি ছবি অসাধারণ আর তার থেকে বেশি ভালো লাগে আপনার সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেখাগুলি পড়তে।অপেক্ষায় রইলাম দাদা পরের সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি উপভোগ করার জন্য।ধন্যবাদ আপনাকে।
ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করতে একটু দেরি হতে পারে। তবে আশা করবো অপেক্ষা করবেন।
অবশ্যই দাদা👍
দাদা তোমার বাড়ির কাছেই নাকি রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি?
এই পোস্ট টা আমার কাছে খুবই মূল্যবান। রবীন্দ্রনাথ আমার অনুভূতিতে মিশে আছেন। ওনার কুঠিবাড়ি ঘুরতে যাওয়ার খুবই ইচ্ছে আমার আগে থেকেই। যতদূর জানি বাংলাদেশে দুই জায়গায় আছে কবি গুরুর কুঠিবাড়ি। এখনও এক জায়গাতেও যাওয়ার সৌভাগ্য হয়ে ওঠে নি। তবে একবার তো যাবো অবশ্যই। অনেক অনেক ভালো লাগলো দাদা এত সুন্দর করে চারপাশ টা ঘুরিয়ে দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।