শ্যামপুর বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক ভ্রমন অন্তিম পর্ব।।

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে শ্যামপুর বুড়িগঙ্গা ইকোপার্কে যাওয়ার দ্বিতীয়ও অন্তিম পর্ব শেয়ার করবো।

বুড়িগঙ্গা ইকোপার্কের এরিয়াটা তেমন বেশি বড় নয়। আনুমানিক আট থেকে দশ একর জায়গাতে পার্ক টি নির্মাণ করা হয়েছে। পার্কটি সরকারি হওয়ার কারণে তেমন বেশি সংস্কার করা হয়নি। তাছাড়া পার্কের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বুড়িগঙ্গা নদী। বর্তমানে বুড়িগঙ্গার পানি সারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষিত নদীর একটি। বুড়িগঙ্গার পানিতে বর্তমানে প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়ায়। যার ফলে দর্শনার্থীরা পার্কে ঘোরাফেরা করলে অনিচ্ছা সত্যেও বুড়িগঙ্গা নদীর পানির দুর্গন্ধ নাকে চলে আসে। যার ফলে আমরা তেমন বেশি পশ্চিম পাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করি নাই।

তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো পার্কের মধ্যে বাচ্চাদের অনেকগুলো রাইট রয়েছে। ৫০ টাকায় ১০০ টাকা দিয়ে সেই লাইট গুলোতে বাচ্চারা চড়তে পারে। আমার সাথে আমার বোন এবং ছোট ভাগ্নি গিয়েছিল। যেহেতু পার্কটিতে বাচ্চাদের বিনোদনের ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি, সেজন্য সেখানে বাচ্চাদেরকে বেশি দেখা গেছে। আমি আমার ছোট ভাগ্নি কে জিজ্ঞেস করলাম সে কোন কোন রাইটগুলোতে চড়তে আগ্রহী।

আমি প্রথমেই আমার ভাগ্নি কে এই রাইডটিতে চড়তে বললাম। কারণ এই রাইডটি বাচ্চাদের জন্য সবথেকে বেশি সেইফ। এখনে উঠে বাচ্চারা পাঁচ মিনিট লাফালাফি করলে ৫০ টাকা দিতে হয়। এখানে উঠে আমার ভাগ্নিসহ অনেক বাচ্চারা অনেক লাফিয়েছে। সবার শরীর দিয়ে ঘাম চলে এসেছে। আমার মনে হয় এই রাইডটিতে বাচ্চারা সবথেকে বেশি আনন্দ পায়। এটি বাচ্চাদের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।

ব্লু ওয়ার্ল উইন্ডো, রকিং কার, রকিং চেয়ার ফ্রিজবী, রকেট, সহ অনেক ধরনের রাইড রয়েছে। প্রতিটি রাইডের মূল্যই পঞ্চাশ টাকা করে। পাঁচ মিনিট করে টাইম দেয়। এ গুলো শুধু বাচ্চাদের কিছুটা আনন্দ দেয়। এছাড়া আর কিছু না। আমরা যখন সেখানে গিয়েছিলাম, তখন রোদ ছিল। আর মানুষ ও কম ছিল। বিকালের দিকে মানুষ বেড়েছে। যেকোনো উৎসবের দিনগুলোতে, বা বিভিন্ন দিবসে, সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এসব পার্কের লোক সমাগম বেশি হয়।

সব থেকে ডেঞ্জার এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাইট হলো রেঞ্জার। আমরা সমস্ত পার্ক ঘুরে সবার শেষে গিয়েছিলাম এই রেঞ্জারের কাছে। এখানে ছোট বাচ্চারা অথবা ১৮ বছরের নিচে কাউকে রাইডে উঠতে দেওয়া হয়না। এই রাইড এ চড়তে হলে সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয়। যাদের হার্টবিট দুর্বল তারা এই রাইডে চড়তে পারবে না। আপনারা ফটোগ্রাফি গুলোতে দেখতে পাচ্ছেন কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এই রাইড। যারা এই রাইডে চড়ে এরমধ্যে সব সময় দুই একজন থাকে যারা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এই রাইডের মূল্য ও ৫০ টাকা।

আমরা সেখানে চারটা বাজে উপস্থিত হয়ে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সেখানে ছিলাম। ২ ঘণ্টার মধ্যে আমার ভাগ্নিকে বেশ কয়েকটা রাইডে চড়তে সাহায্য করেছিলাম। সাথে আমার আম্মু ছিল বোন ছিল। তারা হাঁটাহাঁটি করে উপভোগ করেছে। সব মিলিয়ে বলতে হয় এখানে বাচ্চাদের আনন্দ পাওয়ার মতো বেশ কিছু উপকরণ রয়েছে। বাচ্চারা সেখানে গেলে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।

তবে যারা সেখানে একবার যাবে তারা হয়তো আর কোনদিন যেতে চাইবে না। কারণ সরকারি জায়গা হিসেবে আর রাইড এ যে সময় দেওয়া হয় সে অনুযায়ী প্রাইস কিছুটা বেশি। যদি প্রাইভেট সেক্টর এই পার্টি পরিচালনা করতো তাহলে আরো বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হতো। আপনারা কেউ যদি শ্যামপুর ইকোপার্কে যেতে চান তাহলে সেখানে যেতে পারেন। বাচ্চারা আনন্দ পাবে।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।