ঢাকা থেকে নীলফামারী বাসে ভ্রমণ||

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালোই আছি। আমি আজকে আরো একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আজ আমি আপনাদের মাঝে দেশের এই অবস্থায় ঢাকা থেকে নীলফামারী বাস ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি। তো চলুন বেশি দেরী না করে শুরু করা যাক।


IMG_20240724_174425.jpg

ঢাকা থেকে নীলফামারী আমার নিজের বাড়িতে ফেরার ভ্রমণের কথা ভাবতেই একটা অন্যরকম অনুভূতি জাগে মনে। বিশেষ করে যখন কারফিউর মধ্যে এই ভ্রমণটি করতে হয়, তখন এর উত্তেজনা, উদ্বেগ, এবং বাড়িতে ফেরার আকাঙ্ক্ষা আরও গাঢ় হয়ে ওঠে।সকালবেলা ঢাকার বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দাঁড়ানোর সময়, আশেপাশে মানুষের ভিড় এবং কোলাহল সত্ত্বেও এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করলাম। কারফিউর সময় শহরের সড়কগুলো তুলনামূলকভাবে শান্ত, তবে মানুষের মনের মধ্যে চাপা আতঙ্ক স্পষ্ট। বাসে চেপে বসার পর, ইঞ্জিনের শব্দে যেন একটু সান্ত্বনা পেলাম।

বাসটি ধীরে ধীরে ঢাকা শহর ছেড়ে বেরিয়ে এল, এবং শহরের কোলাহল পিছনে ফেলে রাস্তার দু'পাশে গাছের সারি দেখতে শুরু করলাম। প্রকৃতির শোভা এবং মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারার আনন্দ অদ্ভুত। যতই নীলফামারীর দিকে এগিয়ে চললাম, ততই মনে হচ্ছিল নিজের পরিচিত জায়গায় ফিরছি।বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম, গ্রামের পথগুলোতে সাধারণ জীবনযাত্রা চলছে। মানুষের মুখে কারফিউর কষ্ট ও অনিশ্চয়তা থাকলেও, গ্রাম্য জীবনের সরলতা এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার আনন্দ আলাদা।


IMG_20240724_174503.jpg

নীলফামারীতে পৌঁছানোর সময়, বাস থেকে নেমে বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করলাম। পরিচিত গলি, পরিচিত মুখ, আর বাড়ির কাছে পৌঁছে প্রিয়জনদের মুখে হাসি দেখে সব কষ্ট ভুলে গেলাম। বাড়ির উঠোনে পা রাখার পর, মাটির গন্ধ এবং ঘরের উষ্ণতা মনে এক অদ্ভুত শান্তি এনে দিলো। কারফিউর মধ্যে এমন একটি যাত্রা যেন বাড়ির মায়ার শক্তিকে আরও দৃঢ় করে দিলো।

বাড়িতে ফিরে মাকে জড়িয়ে ধরার মুহূর্তটি ছিল সত্যিই বিশেষ। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি আর কারফিউর উদ্বেগ সবকিছুই যেন মুহূর্তেই মিলিয়ে গেল মায়ের আলিঙ্গনে। মায়ের গায়ের গন্ধ, তাঁর উষ্ণতা, এবং কণ্ঠের স্নিগ্ধতা যেন সমস্ত দুশ্চিন্তা এবং ক্লান্তি দূর করে দিল।

মা যখন বললেন, "কেমন আছিস বাবা? অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম," তখন চোখের কোণে অশ্রু চলে আসলো। মায়ের মুখে চিন্তার রেখা, আর তার মাঝেও সন্তানের জন্য অগাধ ভালোবাসা দেখে মনে হলো, এর চেয়ে নিরাপদ আর শান্তির জায়গা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। মায়ের হাতের স্পর্শে যেন আবার ছোটবেলার সেই নিরাপত্তা এবং ভালোবাসার অনুভূতি ফিরে পেলাম। সেই মুহূর্তে মনে হলো, পৃথিবীর সব প্রতিকূলতা, সব বাধা পেরিয়ে মায়ের কোলে ফিরতে পারাটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।


IMG_20240724_174436.jpg

এরপর মায়ের সঙ্গে গল্প করতে করতে বাড়ির প্রতিটি কোনে ঘুরে বেড়ালাম, মনে হলো এই চেনা জায়গা, এই পরিবেশ, সবকিছুই এক নতুন রূপে ধরা দিচ্ছে। মায়ের তৈরি করা খাবারের স্বাদ, তাঁর হাসি, তাঁর কোলের উষ্ণতা—এসবই যেন আমাকে নতুন করে শক্তি এবং সাহস দিলো, যাতে আবারও নতুন উদ্যমে যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারি।

আজকের মতো এখানেই শেষ। এতোক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।


IMG-20230608-WA0000.jpg

আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র । আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।




New_Benner_ABB.png


🌼ধন্যবাদ🌼

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

বাড়ি ফেরার যে অদ্ভুত টান তা যারা বাড়ির বাইরে থাকে তারা অনেক বেশি জানে৷ তুমি যে সুস্থ ভাবে নিরাপদ ভাবে বাড়ি ফিরেছ, ফিরেছ মায়ের কোলে তা জেনে খুবই আনন্দ হচ্ছে। ভালো থেকো। আজীবন মায়ের মুখের হাসি হয়ে থেকো।

 7 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 7 months ago 

কিছুদিন আগে আপনি আমাদের মাঝে এমন ভ্রমণের একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে আজকেও ভ্রমণের আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। বেশ অনেক কিছু জানতে পারলাম এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে।

 7 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96648.24
ETH 2769.90
SBD 0.64