খারাপ অভিজ্ঞতাঃ- ১ম পর্ব
23-12-2022
০৯ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। শীতের সময়টা ভালোভাবেই উপভোগ করছেন। আমি ভালো আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তবে চার দেয়ালের ভিতরে ভালো থাকা যায় আর কতক্ষণ! দম বন্ধ বন্ধ লাগে আসলে। শহরের মানুষগুলো কিভাবে এ পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিল! ইট পাথরের শহরে মানুষের মনটাও অনেকটা পাথরের মতো হয়ে যাচ্ছে! যাক, আপনারা হয়তো দেখে থাকেন, আমি আপনাদের সাথে ট্রেন জার্নির গল্প শেয়ার করে থাকি। আসলে ট্রেন জার্নিতে বরাবরই কোনো না কোনে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি। এ যাবত মোটামোটি ভালোই ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা হয়েছে! কিন্তু সবসময় যে ভালো অভিজ্ঞতায় যে হবে, সেটা আশা করাও বোকামি! তবে সে খারাপ অভিজ্ঞতা থেকেও কিছু শিক্ষার থেকে থাকে!
গত পরশু ঢাকা আসার প্লেন করি! এ সপ্তাহে বাড়িতে যাওয়ার প্লেন ছিল। কিন্তু কোচিং সম্পর্কে কিছু বিষয় জানার ছিল এজন্য মূলত ঢাকা যাওয়ার প্লেন! বরাবরের মতো ট্রেন জার্নি করেই ঢাকা আসা হয়। গত পরশু প্লান্টের সব কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি চলে আসি। আমি বাসায় চলে আসার পর শাওনকে পেলাম না। আগের সপ্তাহে শাওনকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলাম। এদিকে ঘড়িতে টাইম বেশি নেয়। ভৈরব চট্রলা এক্সপ্রেস ট্রেন ২:২০ মিনিটের দিকে থাকে। ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে পড়ি! শাওনকে না নিয়েই চলে গেলাম ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে। টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। লাইনে দাঁড়ালাম। তখন এক ভদ্রলোকের সাথে পরিচয়! ভদ্রলোকও ঢাকা যাবে। আমাকে টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললো দুটি টিকিট যেন নিয়ে নেয়।
আগের বার শাওন আর আমি একসাথে টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। এবার শাওন নেই! যাক, লাইন বেশি বড় ছিল না। আমার সিরিয়াল আসার পর দুটি স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করে নিলাম। ভদ্রলোককে টিকিট দেখলাম। কিছুটা ইতস্তত বোধ করলো! কারণ দুটি টিকিট একসাথে। সিঙ্গেল করে টিকিট দেয় নি। ভদ্রলোককে আমি চিনিনা! বললাম, টিকিটের ছবি তুলে নিতে। ভদ্রলোক এয়ারপোর্ট এ নেমে যাবে! ঐখানে আবার টিকিট চেক করে! ছবি দেখালে হয়তো ঝামেলা হবে না! তবুও ভদ্রলোককে বললাম আমার সাথে যেন এক বগীতে ট্রেনে উঠে। ট্রেন তখনও আসেনি। আশেপাশে কিছুক্ষণ শাওনকে খোজাঁখুজিঁ করলাম কিন্তু পেলাম না। শাওনের ফোনটাও অফ ছিল। যাক কি আর করা!
যথাসময়ে ট্রেন এসে হাজির! পিছনের সারির বগীতে উঠে পড়লাম। উঠার পর ভদ্রলোককে পায়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই দেখি এসে হাজির! ট্রেন সেখানে বেশিক্ষণ দাড়াঁয়নি। চলতে শুরু করলো। বগীতে প্রচন্ড মানুষ। যেহেতু সপ্তাহের ছুটির দিনটা তাকে পরেরদিন তাই বেশ ভীড় হয়। মোটামোটি দাড়িঁয়ে আরামছেই যাচ্ছিলাম! কিন্তু বিপত্তিটা হলো নরসিংদী স্টেশন পার হওয়ার পর! খোলা মাঠে পূবাইল স্টেশনে ট্রেন এসে দাড়িঁয়ে রয়েছে! ঘড়িতে তখন সাড়ে তিনটা বাজে! ভাবছিলাম হয়তো ক্রসিং সামনে! কিন্তু না! সব যাত্রী দেখলাম ট্রেন থেকে নেমে দাড়িঁয়ে আছে! ত্রিশ মিনিট হয়ে গেল ট্রেন তো ছাড়ছে না!! এতোক্ষণ তো ট্রেন কখনো দাড়াঁয়নি কখনো। আর পূবাইল স্টেশনে তো কখনোই দাড়াঁয় না। লোকাল ট্রেন হলে কথা ছিল!
বসে থাকতে মোটেও ভালো লাগছিল না! আর খেয়েও বের হয়নি। পেটে টান মেরেছে!! ট্রেন থেকে নেমে দেখলাম কিছু দোকান আছে! খেতে গিয়ে যদি ট্রেন ছেড়ে দেয়, হাহাহা! তবুও গেলাম দোকানে। গিয়ে বিস্কিট আর একটা মিরিন্ডা নিয়ে নিলাম। পানীয় এর মধ্যে মিরিন্ডা আমার প্রিয় খুব! সেখানে দাড়িঁয়েই কিছুক্ষণ খেয়ে নিলাম। তখন জানতে পারলাম টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে মালবাহী ট্রেনের বগী উল্টে পড়ে গেছে! লাইন ঠিক করতে করতে লেইট হতে পারে। ভেবেছিলাম হয়তো এক ঘন্টার মতো ঠিক হয়ে যাবে! কিন্তু ট্রেন তো দেখি ছাড়েই না! অনেক যাত্রী নেমে চলে যাচ্ছে যে যার মতো! পূবাইল স্টেশন থেকে নাকি বাসে যাওয়া যায়! আমার বাসে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই! তাই আর যেতে সাহস পেলাম না। কিন্তু কিছু প্যাসেঞ্জার এর কথা শুনে মনে সাহস পেলাম! রাত দশটা বাজলেও এই ট্রেন দিয়েই যাবে!!
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR

আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
হ্যা জীবনে মাঝে মাঝেই খারাপ অভিজ্ঞতা প্রয়োজন রয়েছে। এতে অনেক কিছু শেখা যায়।
তবে অপরিচিত কারো সাথে এভাবে টিকিট ভাগ করা ঠিক নয়, মাঝে মাঝেই সমস্যা হয়। ট্রেনের দূর্ঘটনা শুনলাম, দেখা যাক সামনে কি হয়।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দারুন এক অভিজ্ঞতার গল্প পড়তে পারলাম আপনার মাধ্যমে, আসলে কিছু কিছু সময় নিজের এমন কিছু অভিজ্ঞতা হয় যেটা হয়তোবা সবথেকে বেশি খারাপ লাগে। যেমনটা আপনার ক্ষেত্রেই ঘটেছে যখন বুঝতে পারলেন যে ট্রেন এখানে অনেকটা বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকবে তখন নিজের মধ্যে আসলেই অনেক খারাপ লাগছিল। কারণ গন্তব্যে বের হওয়ার পরে কোন একটা কারণে যদি থেমে যেতে হয় নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগে এরকম মুহূর্ত যদিও আমার জীবনে কখনোই আসেনি। অবশেষে অনেকেই বাস দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু আপনি নিজের কাছে অটল ছিলেন যে যত রাতই হোক ট্রেনে যাব। গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
আমরা কিন্তু খারাপ অভিজ্ঞতা থেকেও কিছু শিক্ষা নিতে পারি যা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে মাঝে মাঝে। খারাপ অভিজ্ঞতার পোস্ট আপনি আজকে প্রথম পর্ব শেয়ার করেছেন আমাদের সকলের মাঝে। আপনি এখানে একটা জেদ ধরেই বসেছেন তাহলে। মানে আপনি ট্রেনেই যাবেন বাসে যাবেন না তা দশটা এগারোটা বেজে যাক। আমার কাছে যেহেতু এরকম লেখার পোস্টগুলো ভালো লাগে তাই আপনার আজকের এই খারাপ অভিজ্ঞতা পোস্টটি ও ভালো লেগেছে। সকলের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। আর দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় তো থাকলাম।