২য় পর্বঃ ট্রেন জার্নি [ কিশোরগঞ্জ টু ভৈরব ]
06-11-2022
২২ কার্তিক ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন 🌼। আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। যাক, আপনাদের সাথে ইতোপূর্বে ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতার প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে দ্বিতীয় পর্বটি শেয়ার করতে চলে এলাম। আশা করি ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতার পর্বটি আপনারা উপভোগ করতে পারবেন ও বেশ কিছু মজার ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারবেন
১ম পর্বের পর
ঠিক এগোরাটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিটে এগারোসিন্ধু এক্সপ্রেস এসে হাজির! আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস! মনে মনে ভাবতেছিলাম, আজ হয়তে দুটার আগে ভৈরব পৌছাঁতে পারবে না। এমনিতেই অনেকটা লেইট করে ফেলছে। যাক, অবশেষে ট্রেন ছাড়লো। আমার পাশেই এক ভদ্রলোক দেখতে পেলাম। সাথে তার ছেলে। দেখে মনে হলো ছেলেটা মাদ্রাসায় পড়ে। কথায় কথায় ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় পর্বটা সেরে নিলাম! আমার আসলে ট্রেনে উঠে পাশের সিটে বসা ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় হতে ভালো লাগে। সব থেকে বেশি ভালো লাগে যখন দেখি পাশের ব্যক্তিটি গ্রাম থেকে এসেছে। গ্রামের মানুষগুলো একদম সহজ সরল হয়! ভদ্রলোককে দেখে সহজসরল মনে হলো। কিশোরগঞ্জ থেকে কুলিয়ারচর যাবে। ছেলের মাদ্রাসা সেখানেই। ৮-৯ বছর হবে ছেলেটির! কুরআন শরীফ পড়া শুরু করেছে দেখে দেখে।
আমি আর রমজান চাচার সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম! কুলিয়ারচর থেকে ভৈরব বেশিদূরের রাস্তা নয়! যাক, ট্রেন দেখতে দেখতে চলে এসেছে গচিহাটা স্টেশনে। নরমালি এ স্টেশনে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এর কোনো ট্রেন দাড়াঁয় না! শুধু মাত্র লোকাল ট্রেন এই নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস এখানে দাড়াঁয়। বেশিক্ষণ অবশ্য দাড়াঁয় নি। কিছু যাত্রী এখান থেকে আবার উঠেছে। এদিকে আমার ঘুম ঘুম চোখ! জার্নি করলে আমার খুব ঘুৃম আসে আসলে। কিন্তু যখন একা জার্নি করি তখন ঘুম আসে না তেমন! সিকিউরিটি ইস্যুর জন্য ঘুম পায় না। কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম। কিন্তু গরমে কি আর ঘুমানো যায়! তার উপর ফ্যান নেই আর জানালা দিয়ে বাতাস আসে না। উল্টোদিক হয়ে যেহেতু সিট! তবে এবার একটা জিনিস খেয়াল করলাম। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষজন বগীতে বেশি। তাদের পূজা আছে সরারচর কোনো একটি জায়গায়। আমি সঠিক জানিনা কোন জায়গাটি! তবে জানতে পারলাম অনেকে সীতাকুণ্ড যাবে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে গিয়ে পূজো করবে ।
দেখতে দেখতে পরের স্টেশনে চলে এলাম। মানিকখালি স্টেশন। এটাও একটা মিনি স্টেশন। এখানেও কোনো ট্রেন থামে বলে মনে হয় না! সেখানে ট্রেন আবার বেশিক্ষণ দাড়াঁয়নি! আবার চলতে শুরু করে। ট্রেন জার্নিতে সব থেকে ভালো লাগে যখন ট্রেন ধান ক্ষেতের একদম মাঝখান দিয়ে যায়! কিছুদূর যেতেই চোখে পড়ল সোনালী ধানক্ষেত। তার মাঝ দিয়ে চলে যাচ্ছে ট্রেন! জানালার পাশ দিয়ে যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধু ধানক্ষেত দেখা যাচ্ছে। এটাই এ দেশের সৌন্দর্য ! দেখতে দেখতে চলে এলাম সরারচর স্টেশনে সেখানেও কিছুক্ষণ দাঁড়াবে! সেখানে এসে জানতে পারি ট্রেন সামনে ক্রসিং করতে পারে। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে! সরারচর এসে চোখে পড়ল কলা বিক্রেতা। ছয়টি কলা মাত্র দশটাকা! আমি ট্রেনে গেলে কলা কিনে থাকি বেশি। কম দামে যেহেতু পেয়েছি তাই দুই হালি কলা কিনে নিলাম। তারপর দেখলাম পাশের লোকজনও কলা কিনছে। কলা বিক্রেতার অর্ধেক কলা সেখানেই বিক্রি হয়ে গেল!
ঠিক কিছুক্ষণ পর দেখি সেই কলা বিক্রেতা এক হালি কলা বিক্রি করছে এখন পাচঁ টাকা করে! আমি তো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম! একটু আগেই দশটাকা হালি কলা কিনলাম। এখন পাচঁ টাকা করে বিক্রি করছে। লোভ সামলাতে না পেরে আরও দুই হালি কলা কিনে নিলাম। আমার বন্ধু রমজানও কিনলো কয়েকহালি! এতো কমদামে কলা পেলে কি আর না কিনে উপায় আছে! আমি ট্রেনে বসেই দুই হালি কলা ভক্ষণ করে নিলাম, হাহাহা! রমজানে কিছু কলা খেয়েই পেটে গোলমাল শুরু হয়ে গেল! পাশের সিটে বসা চাচাও দেখলাম কয়েকহালি কলা কিনে তার ছেলেকে দিল খেতে! যাক, কম দামে কলা পেয়ে ভালোই হলো! নরমালি এতো কম দামে কলা পাওয়া যায় না। আর গ্রামের কলা খেতেও মজা হয়!
দেখতে দেখতে সামনের স্টেশনে চলে এলাম। বাজিতপুর স্টেশন! সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়াতে পারে ট্রেন। কারণ সামনে ক্রসিং আছে। যেহেতু লোকাল ট্রেন এজন্য পরে গেলেও সমস্যা নাই। পাশের সিটে বসা চাচা বাহিরে নেমে গেল! রমজানও বাহিরে নেমে গেল। একটু লেইট হতে পারে ছাড়তে ট্রেন। ঠিক তখন এক ভদ্র মহিলার সাথে পরিচয় হলো! ভদ্র মহিলার বাড়ি আঠারোবাড়ি। আমাদের এলাকার মানুষ বলা যায়। লোকাল ট্রেনে করে চট্রগ্রাম যাবে। সেখানে নাকি পরিবার নিয়ে বসবাস করে! সঙ্গে করে অনেক জিনিসপত্র নিয়ে এসেছে। এজন্য সবকিছু পুলিশদের কাছে রেখেছে। লোকাল ট্রেনে গেলে নরমালি ভাড়া লাগেনা। ভদ্র মহিলার কাছ থেকে পুলিশ ১৫০ টাকা নিয়েছে। চট্রগ্রাম নেমে গেইট পার করে দিবে। কারণ সেখানে আবার টিকেট চেক করে! মেইন স্টেশন পার হতে হলে টিকেট দেখাতে হবে নইলে ঝামেলায় পরতে হয়। মহিলার অবশ্য বুদ্ধি আছে বলা যায়! এ বুদ্ধি অবশ্য কয়েকবারের জার্নির অভিজ্ঞতায় অর্জন করতে পেরেছে! ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতায় ভদ্র মহিলা কয়েকবার খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে। তার মধ্যে থেকে একটা অভিজ্ঞতা আমার সাথে শেয়ার করেন।
চলবে.....
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | W3w |
Date | 05 November, 2022 |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR

আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Link
এতো দেখি ট্রেন এর বিশাল এক জার্নি শেয়ার করেছেন। এগারো সিন্দুর ট্রেন কি আগেই এসেছিলো আপনাদের ট্রেন এর? এতো অল্প সময়ের গ্যাপ এ একই রুট এ দুইটি ট্রেন। তাহলে তো আপনাদের চলা চলে সুবিধা হয় অনেক। আমার মনে হয় এগারো সিন্দুর ট্রেন এর টিকেট কাটলে ভালো হতো আপনার। দেড়ি হতোনা। আগে ভাগেই কিশোরগঞ্জ পৌছে যেতেন।
11 সিন্ধু এক্সপ্রেস ট্রেন দিয়ে গেলে তো আপনার টিকেট লাগে । কিন্তু আপনার নাসিরাবাদ দিয়ে গেলে ফ্রিতে যাওয়া যায় । এত লেট করে গেলেও পরে আর ট্রেনিং ধরতে পারবো না ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার ট্রেন ভ্রমনের গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমি একবার গাজীপুর থেকে ঢাকায় এসেছিলাম এটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম ট্রেনে ওঠা। সেই দিন আমি অনেক মজা পেয়েছিলাম তবে প্রচুর ভিড় ছিল। সেজন্য আর কখনো ট্রেনে যাওয়া হয়নি। আমিও কোথাও গেলে কলা কিনি। আপনি প্রথমে ছয়টাকা দিয়ে কিনেছেন এরপর আবারও পাঁচ টাকা দিয়ে বিক্রি করছে দেখে লোভ সামলাতে পারেনি তাইনা। যাই হোক ভালোভাবে ট্রেন ভ্রমন করতে পেরেছেন এটাই শুকরিয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
জি আপু সস্তায় পেয়ে গেছিলাম এজন্য কয়েক হালি নিয়ে নিয়েছিলাম । ট্রেন ভ্রমণের মজায় অন্যরকম । আপনাকে ধন্যবাদ আপু ।
ট্রেন জার্নি গুলো আসলে অনেক মজার হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে ট্রেন জার্নি করতে গিয়ে আমার বেশ কয়েকবার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারপরেও ইচ্ছা আছে চট্টগ্রামে যাব ট্রেনে করে ঢাকা থেকে। সুযোগের অপেক্ষায় আছি শুধু। মাঝে মাঝে আপনার ট্রেন জার্নি নিয়ে পোস্টগুলো দেখে যাওয়ার ইচ্ছেটা আরো বেড়ে যায়। তবে ভাই আপনার কলা খাওয়ার এবং কলা কেনার কান্ডটা দেখে বেশ মজা পেয়েছি 😅। আর পরবর্তীতে ভদ্রমহিলা কি অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন সে অপেক্ষায় থাকলাম ভাই। ভালো থাকবেন।
এখন আপনার ট্রেন জার্নি করলে ভালই লাগবে । কারণ এখন অনেক রুলস মেনটেন করে ট্রেন চলাচল করে । আর লোকাল ট্রেনগুলোতে আপনার টিকেট ছাড়াই যাওয়া যাবে । আপনি ঢাকা থেকে চট্টলা এক্সপ্রেস দিয়ে খুব সহজেই চট্টগ্রাম যেতে পারবেন । ধন্যবাদ দাদা
অনেক অল্প দামে কলা কিনে ফেলেছেন দেখছি। কলার দাম শুনে তো আমি অবাক। এরকম অল্প দামের কলা দেখলে যে কেউ নিয়ে নিবে। আপনি দুই হালি একসাথে খেয়ে নিয়েছেন ট্রেনে এটা খুবই মজার ছিল। ট্রেন জার্নি সত্যিই খুবই ভালো লাগে। আপনার ট্রেন জার্নি করার গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
জি ভাইয়া । অল্পতেই দাম ছিল এজন্য লোভ সামলাতে পারিনি । কয়েক হালি কিনে নিয়েছিল । ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য ভাইয়া ।
খুব সুন্দর করে আপনি আপনার। ট্রেন জার্নি কিশোরগঞ্জ টু ভৈরব জার্নির অভিজ্ঞতাটা তুলে ধরেছেন। আসলে আমার জীবনে আমি অনেকবার ট্রেন জার্নি করেছি। এবং আমার কাছে বেশ ভালই লাগে। এবং নিরাপদ মনে হয়। আপনার চমৎকার অনুভূতিটি আমার কাছে ভালো লাগলো। যদিও আপনি ছয়টি কলা ১০টাকায় কিনেছিলেন। এবং খুব ভালোভাবে পৌছে গেছেন। এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি।♥♥
জি আপু! পরে কিন্তু আবার পাচঁ টাকা দিয়ে আরও কয়েক হালি কলা কিনেছিলাম! ধন্যবাদ আপু
আপনার ট্রেন ভ্রমণের গল্প পড়ে ভালই লাগলো। বিশেষ করে একেবারে কম দামে পেয়ে দুই বন্ধু মিলে কলা কিনে নিয়েছেন এটা দেখে ভালো লাগলো। আসলে এখন তো এত কম দামে কলা পাওয়াই যায় না। আমাদের এখানে তো অনেক দাম। আবার একজন মহিলার সাথেও পরিচয় হলো। আসলেই ঠিক বলেছেন মহিলাটি বুদ্ধিমতী ছিল এজন্য পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নিয়েছে।
জি আপু পাচঁ টাকা করে ছিল কলা! তাই কয়েকহালি কিনে নিয়েছিলাম!